শর্তসাপেক্ষে গঙ্গাসাগর মেলার ছাড়পত্র দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। এই খবরে বেজায় খুশি বাবুঘাটে আসা তীর্থযাত্রীরা। যদিও তাঁরা গঙ্গাসাগর যাওয়ার উদ্দেশ্যে এখানে আগেই চলে এসেছেন। সাধুসন্তদের কথায়, গঙ্গাসাগর মেলা তো হবেই। তার জন্যই তো আগে-ভাগে বাবুঘাটে চলে এসেছি।
Advertisment
বাবুঘাটে তার্থযাত্রীরা নিজেরাই এখন তাবু খাঁটিয়ে রয়েছেন। দিলীপ পাশোয়ান এলাহাবাদ থেকে এসেছেন। দিলীপ পাশোয়ান বলেন, 'মমতা সরকার আছে যখন তখন মেলা তো হবেই। সেই আশাতেই বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়েছি। কোভিড নিয়ে ভয়ের কিছু নেই, মেলা হবেই তা জানতাম। মুক্তি দেওয়ার জন্যই এই মেলা।' পাল গিড়ি মহারাজ, এসেছেন উত্তরপ্রদেশ থেকে। গঙ্গাসাগর যাবেন বলে বৃহস্পতিবারই বাবুঘাটে চলে এসেছেন। মেলার অনুমতির খবর শুনে খুশি গিড়ি মহারাজও। বেশ কয়েক বছর ধরেই গঙ্গাসাগর আসেন এই মহারাজ।
ফরিদাবাদের অঘোরনাথ মহারাজ, আলিগড়ের রাণা দেবীরা রয়েছেন বাবুঘাটে। এঁরা কেউই করোনাকে তোয়াক্কা করতে রাজি নয়। তীর্থযাত্রীদের বক্তব্য, 'করোনা নিয়ে ভয় আবার কিসের। গঙ্গাসাগর যাওয়ার জন্যই এসেছি। কোভিড ১৯-এর দুটো টিকাও নেওয়া রয়েছে বলেও তাঁরা জানিয়েছেন। মামলা-মোকদ্দমার টালবাহানার মধ্যে আবার কেউ কেউ সাগরে স্নান সেরে বাড়িও ফেরার পথে। হরিয়ানা থেকে এসেছেন বছর আশির ওমপ্রকাশ মহারাজ। তিনি বলেন, 'আমরা ৮ জন এসেছি বাসে। সাগর থেকে স্নান করে ফিরে এসেছি। এবার বাড়ি ফেরার পথে।'
গঙ্গাসাগর মেলা উপলক্ষ্যে অনেকেই আবার বাবুঘাটে এসেছেন দু'পয়সা রোজগারের আশায়। নদিয়ার চাপরায় বাড়ি মিনু দাসের। ৭৫ বছরের মিনু দেবী বলেন, 'করোনা নিয়ে ভয় করলে হবে। বাবাদের কাছে এসেছি ভয় আবার কি। স্বামী নেই, ছেলে নেই, কি করব? পেটের দায়ে এখানে এসেছি। মেলা পর্যন্ত থাকবো। নবদ্বীপ থেকে আসা শনি মহারাজ জানান, এখানে এলে উপরি রোজগারও হয়।
এখনও বাবুঘাটে খুব একটা ভিড় নেই। নিজেরাই তাবু খাঁটিয়ে রয়েছে তীর্থযাত্রীরা। সরকারি পর্যায়ে কাজ চলছে। এখানপ কেউ কেউ আবার মাস্ক ছাড়াই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পুলিশ এখানে মাস্ক বিতরণ করছে। পুরসভা কোভিড পরীক্ষার জন্য অস্থায়ী শিবির করেছে। রয়েছে কোভিড ভ্য়াকসিন দেওয়ার ক্য়াম্পও। মনে করা হচ্ছে, আগামি ২ দিনের মধ্যেই ভিড় বাড়বে বাবুঘাটে।