Advertisment

ক্যানভাস হোক বা ক্যালিগ্রাফি, শিল্পী-সাহিত্যিকদের পছন্দের দোকান মানেই জি সি লাহা

ইউরোপের নামীদামী রঙ এই দোকানে পাওয়া যায়, রবি ঠাকুর থেকে সত্যজিত রায় সকলেই আসতেন এখানে

author-image
Shashi Ghosh
New Update
NULL

ভারতের সবথেকে পুরনো রঙের দোকান - জি সি লাহা- এক্সপ্রেস ফটোঃ শশী ঘোষ

রং ছাড়া জীবন একেবারেই ফ্যাকাশে। প্রতিদিনের জীবনে রং হোক কিংবা খাতার পাতায় আঁকিবুকি, জল রং থেকে অয়েল পেন্টিং - শহর কলকাতার বুকে রঙের দুনিয়ার এক এবং অন্যতম নাম জি সি লাহা। এককথায় ক্যানভাস থেকে ক্যালিগ্রাফি পেন কি নেই এখানে!

Advertisment

কীভাবে শুরু হয়েছিল রঙের ব্যবসার এই যাত্রা? দোকানের কর্ণধার সিদ্ধার্থ লাহা বলেন, কলকাতা শহরের নয়, আমরা এশিয়ার সর্বপ্রথম রঙের দোকান। আমি তৃতীয় প্রজন্ম, ঠাকুরদাদা শুরু করেছিলেন রঙের এই ব্যবসা। মাত্র ১৬ বছর বয়সে গিরীন্দ্র কুমার লাহা এই দোকানটি শুরু করেন। এর পেছনে রয়েছে এক লম্বা ইতিহাস। গিরীন্দ্র কুমারের দাদু নবীন চন্দ্র দত্ত ভারতের প্রথম রং বিক্রেতা ছিলেন। বাড়ি-ঘরের জন্য রঙের জোগান দেওয়া ছিল তাঁর ব্যবসা। আমরা উইন্সেন নিউটন কোম্পানির সোল্ড সেলিং এজেন্ট ছিলাম গোটা এশিয়ায়, ১৯০৫ থেকে এই ধরুন ১১৭ বছর রানিং। তখনকার নামজাদা সব শিল্পীরা দোকানে আসতেন, রং কিনতেন - আমার ঠাকুরদাদার সঙ্গে তাদের বেশ সম্পর্ক ছিল। রবি ঠাকুর, অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর, নন্দলাল বোস, রাজা রবি বর্মা সকলে আসতেন। তাদের সঙ্গে বেশ অন্যরকম সম্পর্ক ছিল। রবি ঠাকুর নিজে আসতেন এই দোকানে, আবার শান্তিনিকেতনের উদ্দেশ্যে আমরা নিজেরাও রং দিয়ে আসতাম।

publive-image
এক্সপ্রেস ফটোঃ শশী ঘোষ

বৈদেশিক পণ্যই এই দোকানের আসল আকর্ষণ, পেলিক্যান, রট্রেইন, ফেভার কাসেল, ইউরোপিয়ান কোম্পানি থেকেই সবকিছু আসত। শুধু তো আঁকার জন্য নয়, যারা আর্টের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন তাদের জন্যও রং বেচা হত। সিনেমায় যারা কাজ করতেন, তাদের জন্যও এই দোকান থেকে রং গেছে। একটা সময় মেকআপের রং, ক্রিয়েটিভ আর্টের রং আবার চিত্রশিল্পীর জন্য রং-তুলিও বিক্রি করা হয়েছে। তবে প্রথম শুরু হয় ঘরবাড়ির রং দিয়েই - প্রায় ১৫০ বছর পুরোনো, সেটিই আমাদের প্রথম রঙের দোকান।

publive-image
এক্সপ্রেস ফটো - শশী ঘোষ

এই দোকানের অন্যতম ক্রেতা ছিলেন সত্যজিৎ রায় নিজেও। সিদ্ধার্থ বাবু বলেন, উনি আসতেন - সামনে দাঁড়াতেন, বেশ লম্বা মানুষ ছিলেন তো, ওপরের এই হ্যাজাকটা যত অবধি ঝুলত, উনার মাথা সেখানে ঠেকত সেইটায় খুব মজা পেতেন। তারপর ভেতরে ঢুকে বসতেন, গল্প করতেন। তুলি, রঙিন কালি, কালো রং এসবই কিনতেন। পরে উনার ছেলে সন্দীপ রায়কেও আমরা জিনিস দিয়েছি, যাতায়াত রয়েছে, সম্পর্ক বেশ ভাল।

satyajit ray Rabindranath Tagore
Advertisment