উদ্বেগ বাড়াচ্ছে কলকাতা গত ২৪ ঘণ্টায় বঙ্গে মোট কোভিড আক্রান্তের অর্ধেক কলকাতার। গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৯,০৭৩ জন সেখানে কলকাতায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৪,৭৫৯ জন। যা রীতিমত চিন্তার। এর সঙ্গেই রাজ্যের পজিটিভিটি রেট দাঁড়িয়েছে ১৮.৯৬ শতাংশ। ইতিমধ্যেই রাজ্যের তরফে জারি করা নতুন কোভিড সংক্রান্ত গাইডলাইনে কম অথবা হালকা উপসর্গ যুক্ত আক্রান্তদের হাসপাতাল এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। তাদের হোম আইসোলেশনে থাকার কথা বলা হয়েছে।
কারা ভর্তি হবেন হাসপাতালে সেই ব্যাপারেও নির্দিষ্ট গাইডলাইন প্রকাশ করা হয়েছে। বলা হয়েছে শরীরের তাপমাত্রা ১০২ ডিগ্রি বা তার বেশি কমপক্ষে সাত দিন বা তার বেশি জ্বর, সেই সঙ্গে পালস রেট কম এমন কোভিড আক্রান্তদের হাসপাতালে ভর্তির কথা বলা হয়েছে। স্বাস্থ্যভবন সূত্রে খবর একের পর এক হাসপাতালে ডাক্তার স্বাস্থ্য কর্মী করোনায় আক্রান্ত হওয়ার কারণে পরিষেবা সঠিক ভাবে দেওয়ার কারণেই এই গাইড লাইন প্রকাশ করা হয়েছে রাজ্য সরকারের তরফে।
সূত্রের খবর ইতিমধ্যেই করোনার তৃতীয় ঢেউ কালে ২০০’র বেশি ডাক্তার নার্স স্বাস্থ্য কর্মী করোনায় আক্রান্ত হয়ে হোম আইসোলেশনে রয়েছেন। স্বাস্থ্য বিভাগের এক সিনিয়র ডাক্তার জানান, ‘কম উপসর্গ যুক্ত রোগীরা হাসপাতালে ভর্তি হলে হটাত করা তাদের মধ্যে সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার একটা ঝুঁকি থেকেই যায়, তাই আমরা কম উপসর্গযুক্ত রোগীদের বাড়িতে থেকেই চিকিৎসার পরামর্শ দিচ্ছি’। এছাড়াও, রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর ইতিমধ্যেই মনোক্লোনাল অ্যান্টিবডি ককটেল থেরাপি এবং কোভিড চিকিত্সার জন্য মলনুপিরাভিরের মতো ট্যাবলেটের ব্যবহার বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সূত্রের মতে, মনোক্লোনাল অ্যান্টিবডি থেরাপি এবং মলনুপিরাভির ব্যবহারের বিষয়ে রাজ্য কেন্দ্রীয় সরকারের কাছ থেকে কোনও নির্দেশ পায়নি।
তাই এই সংক্রান্ত চিকিৎসা পদ্ধতি আপাতত গাইডলাইন থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। চিকিৎসক স্বাস্থ্য কর্মী ছাড়াও কলকাতা পুলিশেও থাবা বসিয়েছে করোনা। ইতিমধ্যেই একাধিক পুলিশ কর্মী কোভিডে আক্রান্ত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন, কলকাতা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার, অতিরিক্ত যুগ্ম কমিশনার এবং পাঁচজন ডেপুটি কমিশনার সহ একাধিক পুলিশ কর্মী। এর সঙ্গেই রাজ্য সরকারের তরফে কোভিডে তৃতীয় ঢেউকালীন সময়ে দরিদ্রের বিনামূল্যে খাদ্যসামগ্রী বিতরণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। মুখ্য সচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী সমস্ত জেলার জেলাশাসক এবং পুলিশ আধিকারিকদের এই মর্মে এক নির্দেশ দিয়েছেন। ইতিমধ্যেই রাজ্যে গত সোমবার থেকে জারি করা হয়েছে কোভিড সংক্রান্ত বিধিনিষেধ।
তবে এত সংখ্যক মানুষ টিকা নেওয়া সত্ত্বেও কোভিডে নতুন করে আক্রান্ত হওয়াতে টিকার কার্যকারিতা নিয়েও প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। এই বিষয়ে বিশেষজ্ঞমহল জানিয়েছেন, টিকার কোন বিকল্প নেই। টিকার দুটি ডোজ নেওয়া মানে একটা সুরক্ষা বলয় তৈরি হওয়া যা আপনাকে প্রাণহানি থেকে অনেকাংশে রক্ষা করবে। সেই সঙ্গে হাসপাতালে ভর্তির সংখ্যাও কমবে। টিকা নেওয়ার সঙ্গে যাবতীয় কোভিড বিধি মেনে চলার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে বিশেষজ্ঞদের তরফে।