প্রতি দুজনে একজন পজিটিভ, উদ্বেগ বাড়াচ্ছে কলকাতার করোনা গ্রাফ

কলকাতার লাগামছাড়া সংক্রমণ বাড়াচ্ছে উদ্বেগ।

কলকাতার লাগামছাড়া সংক্রমণ বাড়াচ্ছে উদ্বেগ।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
India reports 17,070 fresh Covid 19 cases 1 july 2022

দেশে করোনা পজিটিভিটি রেট বর্তমানে ৩.৪০ শতাংশ।

দৈনিক সংক্রমণ পেরল ১৮ হাজার। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে করোনা আক্রান্ত ১৮ হাজার ২১৩ জন। যা বৃহস্পতিবারের থেকে ২ হাজার ৭৯২ বেশি। বাড়ল অ্যাক্টিভ কেসের সংখ্যাও। রাজ্যে ৫০ হাজার পেরিয়ে গেল অ্যাক্টিভ কেসের সংখ্যা। শুক্রবারের বুলেটিন অনুযায়ী রাজ্যে অ্যাক্টিভ কেসের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৫১ হাজার ৩৮৪। অন্যদিকে, গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ৭ হাজার ৯১২ জন। মৃত্যু হয়েছে ১৮ জনের।

Advertisment

কলকাতাতেই দৈনিক সংক্রমিতের সংখ্যা ৭ হাজার ৪৮৪। মৃত্যু হয়েছে সাত জনের। আক্রান্তের নিরিখে এরপর রয়েছে উত্তর ২৪ পরগনা, হাওড়া। পশ্চিম বর্ধমানে এক হাজারের গণ্ডি ছাড়িয়ে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ১ হাজার ৪৩ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যজুড়ে করোনা পরীক্ষা হয়েছে ৬৯ হাজার ১৫৮ জনের। যার মধ্যে পজিটিভ এই ১৮ হাজারের বেশি। পজিটিভিটি রেট বেড়ে হল ২৬.৩৪ শতাংশ। দৈনিক সংক্রমণ যে হারে বাড়ছে তাতে আশঙ্কা আরও চওড়া হচ্ছে। এদিকে রাজ্যে যে ক’জনের জিনোম সিকোয়েন্সিং হয়েছে সেই রিপোর্ট বলছে, সংক্রমিতদের ৭০ শতাংশই ওমিক্রন আক্রান্ত।

এদিকে কলকাতায় পজিটিভিটি রেটও বেড়েছে হু হু করে। এদিন কলকাতার পজিটিভিটি রেট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫৩.১ শংতাশে। গত এক সপ্তাহে রকেট গতিতে বেড়েছে সংক্রমণ। ৩ জানুয়ারি শহরে একদিনে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ২,৮০১। মৃত্যু হয়েছিল ৪ জনের। পরের তিন দিনে, এর দৈনিক সংখ্যা দ্বিগুণেরও বেশি বেড়ে হয়েছিল ৬৫৫৯ জন। বুধবার কলকাতায় একদিনে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৬১৭০। সেই সঙ্গে সেদিন করোনায় প্রাণ হারিয়েছেন ৫ জন। কলকাতার পর উদ্বেগ বাড়াচ্ছে ২৪ পরগনা। একদিনে আক্রান্তের সংখ্যা ৩১১৮ জন। শুক্রবার রাজ্যের মোট অ্যাক্টিভ কেস ৫০ হাজার ছাড়িয়েছে। রাজ্যে মোট সক্রিয় সংক্রমণ ৫১,৩৮৪। সেই সঙ্গে এদিন সুস্থতার হার কমে হয়েছে ৯৫.৮৪ শতাংশ।

এদিকে কলকাতার পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন শহরের চিকিৎসকরা। তাঁদের মতে কলকাতায় সম্প্রতি শেষ হওয়া পুরভোট সেই সঙ্গে বড়দিন, বর্ষবরণের লাগামছাড়া ভিড়-ই সংক্রমণ বাড়ার জন্য দায়ী। অ্যাসোসিয়েশন অফ হেলথ সার্ভিসের সাধারণ সম্পাদক মানস গুমটা জানিয়েছেন, "সরকার যেভাবে করোনা পরিস্থিতির মধ্যেও মেলা খেলা নিয়ে ব্যস্ত তাতে খুব তাড়াতাড়ি আমরা ১ লক্ষের বেশি দৈনিক সংক্রমণের দোরগোড়ায় পৌঁছে যাব,সেই সঙ্গে তিনি বলেছেন, এত সংক্রমণের সব দায় প্রশাসন এড়িয়ে যেতে পারেনা। ডাক্তার স্বাস্থ্য কর্মী নার্স গোটা হাসপাতাল সংক্রমিত হচ্ছে। চিকিৎসা পরিষেবাই এবার চালু রাখা বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠবে"।

Advertisment

এর আগে গত ৫ মে, শেষবার দৈনিক সংক্রমণ ১৮ হাজার ছুঁয়েছিল। সেই সময় রাজ্যের বিধানসভা ভোটকে সংক্রমণ বৃদ্ধির কারণ হিসাবে চিহ্নিত করেছিলেন চিকিৎসকরা। সেদিন রাজ্যে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১৮,১০২ জন।

অপরদিকে চিকিৎসক পুন্যব্রত গুঁই জানিয়েছেন, “ পুরভোট, সেই সঙ্গে বড়দিন, বর্ষবরণের জমায়েত লাগামছাড়া সংক্রমণের প্রধান কারণ। তিনি বলেন, এই পরিস্থিতিতে যেটুকু প্রয়োজন সেটুকুই করুন, এর সঙ্গে তিনি বলেন আমারা আশঙ্কা করছি গঙ্গাসাগর মেলার পর পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে”। সেই সঙ্গে তিনি বলেছেন, কীভাবে ডাক্তার এবং নার্সরা যেভাবে ভাইরাস দ্বারা প্রভাবিত হচ্ছেন, তাতে করে স্বাস্থ্যপরিষেবা ভেঙে পড়বে। সর্বোপরি, কোয়ারেন্টাইনের সময়কাল ১০ দিন থেকে সাত দিনে কমিয়ে আনা হয়েছে, প্রশাসন চাইছে ডাক্তাররা তাড়াতাড়ি কাজে যোগদান করুন, এতে করে বিপদ আরও বাড়বে”। তিনি আরও বলেছেন “নাইট কারফিউ সংক্রমণকে কম করতে পারেনা। কারণ এমনিতেই রাতে অনেক কম সংখ্যক মানুষ জমায়েত হন।  তিনি  জানান প্রথম থেকেই টেস্ট এবং কনটেনমেন্ট জোনের সংখ্যা বাড়ানো খুবই জরুরি ছিল”।  

Kolkata corona