যাদবপুর-রাজ্যপাল সংঘাত ছিল প্রথম থেকেই, মঙ্গলবার সমাবর্তন ঘিরে সেই বিতর্ক আরও জোরদার হল। রাজ্যপাল 'আরএসএসের দালাল' যাদবপুরের পড়ুয়াদের কাছ থেকে এমন তকমা জুটেছিল আগেই। এবার খোলা চিঠিতে আচার্য পদ থেকে রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়কে বহিষ্কারের কথা জানিয়ে দিলেন যাদবপুরের পড়ুয়ারা। এমনকী মঙ্গলবারের এই চিঠিটিতে রাজ্যপালকে 'মেরুদণ্ডহীন' বলেও উল্লেখ করা হয়েছে। সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের কোর্ট বৈঠকে এবং মঙ্গলবার সমাবর্তনে অংশ নেওয়ার জন্য যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে রাজ্যপালের প্রবেশের চেষ্টা করার পরই এই চিঠিটি প্রকাশ করা হয়েছিল বিক্ষোভরত পড়ুয়াদের পক্ষ থেকে।
It is these women who are revolutionizing India
After receiving the gold medal at the #JadavpurUniversity Convocation. #DebsSmitaChaudhary tore the Citizenship Law Amendment (CAA) on stage. #NRC_CAA_Protest @ComradeMallu pic.twitter.com/ea8pOs1Ng5— Comrade Rinse Kurian (@rinse_kurian) December 24, 2019
রাজ্যপালের নামোল্লেখ করে চিঠিতে শিক্ষার্থী সংগঠনের তরফে লেখা হয়েছে, "এতদ্বারা আপনাকে (জগদীপ ধনকড়) জানানো হচ্ছে যে যাদবপুর ইউনিভার্সিটির আচার্য পদ থেকে আপনাকে বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংগঠন আপনাকে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যপালের পদ থেকে বঞ্চিত করারও সিদ্ধান্ত নিয়েছে।” শুধু তাই নয়, রাজ্যপালের সাধারণ জ্ঞান, তর্ক করার ক্ষমতা, ইতিহাস বোধ শূন্য, ছাত্র, কর্মী ও মুসলমানদের প্রতি সহিংসতার নীতি বিরুদ্ধে সরব তাঁরা, এমন কথাও উল্লেখ করা হয়েছে চিঠিতে। এমনকী, এই ঘটনায় রাজ্যপালের সামগ্রিক চরিত্রে তাঁর মেরুদণ্ডহীনতাই প্রকাশ পেয়েছে, তাও লেখা ছিল এই "খোলা চিঠিতে"।
আরও পড়ুন: রাজ্যপালের একান্ত সাক্ষাৎকার: ‘মমতা যাই বলুক আমি ছাড়ব না’
উল্লেখ্য, মঙ্গলবার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের একাংশের কালো পতাকা, বিক্ষোভের মুখে পিছু হটে রাজ্যপালের গাড়ি। সমাবর্তনের মঞ্চ তো দূর, বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচ নম্বর গেট থেকেই ফিরে যান আচার্য তথা রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। এদিকে রাজ্যপাল ফিরে যেতেই পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে সমাবর্তন অনুষ্ঠানের সূচনা করেন উপাচার্য সুরঞ্জন দাস। তাৎপর্যপূর্ণভাবে, অনুষ্ঠান শুরু হতেই মঞ্চে উঠে নাগরিকত্ব আইনের প্রতিলিপি পুড়িয়ে মুষ্টিবদ্ধ হাতে ‘ইনকিলাব জিন্দাবাদ’ ধ্বনি দিয়ে উপ-উপাচার্যের হাত থেকে স্বর্ণপদক নেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ‘গোল্ড মেডেলিস্ট’ দেবস্মিতা চৌধুরি।
পাশাপাশি যাদবপুরে বিক্ষোভের মধ্যেই বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সুরঞ্জন দাসকে নিশানা করেন জগদীপ ধনকড়। ক্ষোভে ফেটে পড়ে বলেন, “উপাচার্য বলছেন আমি নিরুপায়। আপনি যদি নিরুপায় হন তাহলে পদ ছেড়ে দিন।” সাংবিধানিক প্রধানের এহেন মন্তব্যের পর সমাবর্তন অনুষ্ঠান শেষে উপাচার্য বলেন, “আচার্য পদটিকে আমি সম্মান করি। আচার্যর পদ সবচেয়ে সম্মানজনক ও সর্বশ্রেষ্ট পদ। মতভেদ হতেই পারে। আচার্য যদি কিছু বলেও থাকে, আমি সে বিষয়ে কোনও মন্তব্য করব না।”
সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে যাদবপুরের সমাবর্তন ঘিরে তৈরি হওয়া বিক্ষোভ প্রসঙ্গে সুরঞ্জন দাস বলেন, “গত কাল একটি ঘটনা ঘটে যার ফলে আচার্য কোর্ট মিটিং-এ উপস্থিত থাকতে পারেননি। ১০৪ এ ধারা অনুযায়ী সমস্ত এক্সিকিউটিভদের সঙ্গে কথা বলেই আমরা বার্ষিক সমাবর্তন করছি, স্পেশাল সমাবর্তন করছি না। আমরা নিয়ম মেনেই আজকের প্রোগ্রাম এবং রেজেলিউশন আচার্যকে পাঠিয়ে দিয়েছি। উনি আসতেই পারেন। কিন্তু বিক্ষোভের মধ্যে ঢুকতে পারেনি। আমি, সহ উপাচার্য, রেজিস্টার আমরা বিক্ষোভকারীদের আবেদন করলেও তা কার্যকর হয়নি।
Read the full story in English