Advertisment

সাত বছর কোথায় ছিলেন দময়ন্তী সেন?

পার্ক স্ট্রিটকাণ্ডের এই তদন্তে দময়ন্তী সেনের ভূমিকা রীতিমতো নজর কেড়েছিল সংবাদমাধ্যমে। রাতারাতি তাঁকে ‘বাঘিনী’ অ্যাখ্যা দিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিল বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
IPS Damayanti Sen,আইপিএস দময়ন্তী সেন

দময়ন্তী সেন। ছবি: ফেসবুক।

সাল ২০১২। পার্ক স্ট্রিট গণধর্ষণকাণ্ডে উত্তাল হয়েছিল গোটা রাজ্য। গণধর্ষণের ঘটনাকে ‘সাজানো ঘটনা’ বলে মন্তব্য করে বিতর্কের আগুনে ঘি ঢেলেছিলেন পরিবর্তনের সরকারের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, এমনটাই মত অনেকের। মমতার এই মন্তব্য ভিন্নমাত্রা যোগ করেছিল বিতর্কে। তবে মুখ্যমন্ত্রী যাই বলুন, বা বিভিন্ন মহল থেকে নির্যাতিতার চরিত্র নিয়ে যে প্রশ্নই তোলা হোক না কেন, কলকাতা পুলিশের তদন্তে উঠে এসেছিল ভিন্ন তথ্য প্রমাণ। এই তদন্তে মুখ্য ভূমিকা পালন করেছিলেন আইপিএস দময়ন্তী সেন (যুগ্ম কমিশনার-অপরাধ) ও আইপিএস জাভেদ শামিম (যুগ্ম কমিশনার-সদর)। এ ঘটনায় গ্রেফতার করা হয়েছিল ৩ জনকে। পার্ক স্ট্রিটকাণ্ডের এই তদন্তে দময়ন্তী সেনের ভূমিকা রীতিমতো নজর কেড়েছিল সংবাদমাধ্যমে। রাতারাতি তাঁকে ‘বাঘিনী’ অ্যাখ্যা দিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিল বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে। তবে হঠাৎই কলকাতা পুলিশ থেকে বদলি করে দেওয়া হয় সুদক্ষ আইপিএস দময়ন্তীকে। একাংশের মতে, দময়ন্তীর এই ‘সক্রিয় ভূমিকা’ না-পসন্দ ছিল তৎকালীন সরকারের। সেজন্যই নাকি তাঁকে সরতে হয়েছিল। তবে এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না যে, কর্মরত সরকারি কর্মচারী তথা আইপিএসদের বদলি একেবারেই বিভাগীয় সিদ্ধান্ত, যা নিয়ে প্রশ্ন তোলা যায় না। এরপর কেটে গিয়েছে ৭ বছর। তবে ৯ সেপ্টেম্বর (সোমবার) রাতে আবারও লালবাজারে দময়ন্তীকে ফিরিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। এবার তিনি অতিরিক্ত কমিশনার (৩) পদে দায়িত্ব সামলাবেন।

Advertisment

আরও পড়ুন: ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গ্রেফতার হবেন, ৮ কোটি টাকা চুরির দায়ে'

গত ৭ বছর কোথায় ছিলেন দময়ন্তী সেন?

পার্ক স্ট্রিট গণধর্ষণকাণ্ডের দু’মাসের মাথায় আইপিএস দময়ন্তী সেনকে বদলি করা হয়েছিল। প্রথমে ব্যারাকপুরে পুলিশ ট্রেনিং স্কুলে ডেপুটি ইন্সপেক্টর জেনারেল পদে বদলি করা হয়েছিল দময়ন্তীকে। সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, দময়ন্তীর মতো সুদক্ষ অফিসারের জন্য এই পদ ছিল অপেক্ষাকৃত কম গুরুত্বপূর্ণ। তবে জানা যায়, পেশাদার দময়ন্তী এই বদলিতে ভেঙে পড়েননি, বরং চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছিলেন তাঁর কাজকে। এরপর এই আইপিএসকে দার্জিলিঙে ডিআইজি রেঞ্জে বদলি করা হয়েছিল। সেখান থেকে দময়ন্তীকে পাঠানো হয় সিআইডি-তে। সিআইডি-তে তিনি ডেপুটি ইন্সপেক্টর জেনারেল (ডিআইজি) পদে কাজ করেন। এর পাশাপাশি রাজ্য পুলিশের আইজি (প্রশাসন) পদেও গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের এই প্রাক্তনী। দময়ন্তী সেনই কলকাতা পুলিশের প্রথম মহিলা গোয়েন্দা প্রধান। কলকাতা পুলিশে যুগ্ম কমিশনার (অপরাধ) পদে দায়িত্ব সামলানোর আগে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব সামলেছিলেন দময়ন্তী। ডিসি (উত্তর), ডিসি (সেন্ট্রাল), ডিসি (ডিডি) পদে কাজ করেছেন এই আইপিএস।

জানা যায়, ১৯৯৬ ব্যাচের এই আইপিএস অফিসার দময়ন্তী সেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতি বিষয়ে পড়াশোনা করেন। পুলিশ মহলে বরাবরই নিজের দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন দময়ন্তী। কানাঘুষো শোনা যায়, ‘ম্যাডাম’ সম্বোধন পছন্দ করেন না তিনি। লোকে বলে, এটা নাকি ‘মিথ’। তবে খাঁকি উর্দিধারীদের মাঝে কান পাতলে শোনা যায়, পুলিশের বহু অধস্তন কর্মীই নাকি তাঁকে ‘স্যার’ বলে সম্বোধন করেন।

kolkata police
Advertisment