বাংলাদেশের নোয়াখালিতে শুক্রবার মন্দিরে দুষ্কৃতীদের হামলা, ভাঙচুরের ঘটনায় ব্যাপক ক্ষুব্ধ ইস্কন কর্তৃপক্ষ। ঘটনায় দুই ইস্কন সদস্যের মৃত্যু হয়েছে। বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তার দাবিতে এবার পথে ইস্কন মন্দিরের ভক্তরা। অবিলম্বে মন্দিরে হামলায় অভিযুক্তদের গ্রেফতার করে শাস্তির দাবিতে সরব ইস্কন কর্তৃপক্ষ। এবার কলকাতায় বাংলাদেশ হাইকমিশনের সামনে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ প্রদর্শন ইস্কন অনুগামীদের।
রবিবার সন্ধেয় বাংলাদেশ হাইকমিশনের বাইরে জমায়েত হন কয়েক শো ইস্কন সদস্য-ভক্ত ও অনুগামীরা। তাঁদের হাতে ছিল মোমবাতি, খোল-করতাল এবং হিন্দুদের উপর আক্রমণের বিচার চেয়ে পোস্টার-ব্যানার। তাঁদের দাবি, হিংসা নয় শান্তি চাই বাংলাদেশে। পড়শি দেশে দুর্গাপুজোয় হিংসার ঘটনা, হিন্দু মন্দিরে আক্রমণ, ভাঙচুর-লুঠপাট অব্যাহত। হিন্দুদের উপর চরম আক্রমণ নেমে এনেছে মৌলবাদীরা। এই অবস্থায় সুবিচার ও দোষীদের কড়া শাস্তির দাবিতে হাইকমিশনের সামনে জড়ো হন ইস্কনের সদস্য-ভক্তরা।
এদিন খোল-করতাল বাজিয়ে হাইকমিশনের অফিসের সামনে কীর্তন করতে থাকেন জমায়েতকারীরা। ভজ গৌরাঙ্গ, জয় গৌর-নিতাই, হরি বোল গানে মুখরিত হয় তিলোত্তমা। প্রসঙ্গত, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের উপর একের পর এক হামলার ঘটনা উদ্বেগ বাড়াচ্ছে। কয়েকদিন আগেই বাংলাদেশের কুমিল্লায় একাধিক দুর্গাপুজোর মণ্ডপে দুষ্কৃতী তাণ্ডবের অভিযোগ উঠেছিল। মণ্ডপে বেপরোয়াভাবে ভাঙচুর চালিয়ে দেবী-মূর্তি ভেঙে ফেলার অভিযোগ ওঠে। ওপার বাংলার নক্কারজনক এই ঘটনার প্রভাব পড়ে এপারেও। দুর্গামণ্ডপে দুষ্কৃতী তাণ্ডবের প্রতিবাদে সরব হন রাজনৈতিক নেতারাও।
এবার নিশানায় নোয়াখালির ইস্কনের মন্দির। অভিযোগ, দু’শো লোকের ভিড় ঢুকে পড়ে ইস্কনের মন্দিরে। ভাঙচুর চালানো হয় মন্দিরে। দুই ভক্তকে পিটিয়ে খুনের অভিযোগ তোলা হয়। পরে এক যুবকের দেহ উদ্ধার হয় একটি পুকুর থেকে। বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দুরা প্রতিদিন আক্রান্ত হচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠছে।
বাংলাদেশ সরকারের কাছে অবিলম্বে এই ঘটনায় দোষীদের খুঁজে বের করার দাবি তুলেছে ইস্কন মন্দির কর্তৃপক্ষ। দোষীদের উপযুক্ত শাস্তিরও দাবি তুলেছে মন্দির কর্তৃপক্ষ। মন্দিরে হামলার অভিযোগ তুলে টুকরো কিছু ছবি ও প্রতিবাদের একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় তুলে ধরেছে ইস্কন মন্দির কর্তৃপক্ষ।
আরও পড়ুন বাংলাদেশে হিন্দু মন্দিরে হামলা অব্যাহত, আমরণ অনশনে বসছেন সংখ্যালঘুরা
বাংলাদেশ ইস্কনের সাধারণ সম্পাদক চারুচন্দ্র দাস ব্রহ্মচারী হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, হিন্দু সম্প্রদায় চুপ করে এই হামলা দেখবে না। তিনি বলেছেন, “আমাদের বিশ্বাস মৌলবাদীদের গোষ্ঠী এই ধরনের ঘৃণার উদ্রেক করছে ধর্মীয় সম্প্রীতি নষ্ট করার জন্য। আমরা জানি, শাসকদলের বেশ কিছু সদস্য এই ধরনের সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত আছেন যাঁরা বিভিন্ন জায়গায় হিংসা ছড়াচ্ছে। আমি প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন করছি দূর্বল হবেন না বরং কড়া পদক্ষেপ করুন।”
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন