এবিভিপি-র মিছিল ঘিরে রণক্ষেত্রের চেহারা নিল যোধপুর পার্ক। সোমবারের এই মিছিলকে মাঝপথেই রুখে দেয় পুলিশ। এরপরই পুলিশের ব্যারিকেড ভাঙার চেষ্টা করেন এবিভিপি সমর্থকরা। পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট ছোড়ার অভিযোগও উঠেছে এবিভিপি-র বিরুদ্ধে। জানা যাচ্ছে, ইটের ঘায়ে এক মহিলা পুলিশকর্মী জখম হয়েছেন। এই মুহূর্তে ব্যারিকেডের সামনে অবস্থানে বসেছেন এবিভিপি সমর্থকরা। এবিভিপি-র অভিযোগ, মিছিল আটকাতে লাঠিচার্জ করে পুলিশ। লাঠির ঘায়ে তাঁদের ৭ জন কর্মী জখম বলে দাবি।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়কে ‘চরম হেনস্থা’র প্রতিবাদে এদিন কলকাতার রাজপথে মিছিল করে এবিভিপি। গোলপার্ক থেকে মিছিল শুরু করেন এবিভিপি সমর্থকরা। অন্যদিকে, এবিভিপি-র পাল্টা যাদবপুরে মিছিলের ডাক দিয়েছে এসএফআই। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে অবস্থানে বসেছে সিপিআই(এম)-এর ছাত্র সংগঠনটি। এদিন এবিভিপি-র মিছিল প্রতিহত করতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪নং গেটে জমায়েত করেছে পড়ুয়াদের একাংশ। আর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে পড়ুয়াদের সঙ্গে রয়েছেন রেজিস্ট্রার-সহ কয়েকজন অধ্যাপক। যেকোনও রকম অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে মোতায়েন করা হয়েছে বিশাল পুলিশ বাহিনী, রাখা হয়েছে জলকামানও।
EXCLUSIVE: ‘শোভন-বৈশাখী যাবে জানলে আমি পরের দিন যেতাম’
উল্লেখ্য, এবিভিপি আয়োজিত একটি সেমিনারে যোগ দিতে গিয়ে বৃস্পতিবার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘চরম হেনস্থা’র শিকার হন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়। বাবুলকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন যাদবপুরের পড়ুয়াদের একাংশ। পাশাপাশি তাঁর উদ্দেশে ‘গো ব্যাক’ স্লোগানও দেওয়া হয়। এই ঘটনা ঘিরে মুহূর্তেই পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে। বাবুলের সঙ্গে পড়ুয়াদের একাংশের রীতিমতো ধস্তাধস্তি শুরু হয়ে যায়। বাবুল সুপ্রিয়কে থাপ্পড়, ঘুষি মারার অভিযোগও উঠেছে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর জামাও ছিঁড়ে দেওয়া হয় এবং চুলের মুঠি ধরে টানা হয় বলেও অভিযোগ। পাশাপাশি তাঁর চশমা খুলে নেওয়া হয় এবং প্রায় ৬ ঘণ্টা ধরে পড়ুয়াদের ঘেরাওয়ে ক্যাম্পাসে আটকে পড়েন বাবুল। শেষমেশ বাবুল সুপ্রিয়কে 'উদ্ধার' করতে বিশ্ববিদ্যালয়ে যান রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। ঘটনাস্থলে গিয়ে পড়ুয়াদের বিক্ষোভের মুখে পড়েন রাজ্যপাল তথা আচার্যও। প্রথমে গাড়ি থেকে নেমে এগোনোর চেষ্টা করলেও পরে বিক্ষোভের আঁচ বুঝে ফের গাড়িতে গিয়ে বসতে হয় রাজ্যপালকে। এরপর ফের গাড়ি থেকে নেমে কোনওরকমে বাবুলকে সঙ্গে নিয়ে নিজের গাড়িতে বসেন রাজ্যপাল। বেশ কিছুক্ষণ ধরে রাজ্যপালের গাড়ি ঘেরাও করে রাখে পড়ুয়াদের একাংশ। শেষ পর্যন্ত পুলিশ আলোচনার মাধ্যমে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা করলেও ‘ব্যর্থ’ হয়। শেষমেশ কোনওক্রমে বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়ে রাজ্যপালের গাড়ি। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনের রাস্তায় র্যাফ নামানো হয়।
আরও পড়ুন: ‘বাবুলের কাছে কোনও ক্ষমা চাইনি, না কখনও চাইব’
এদিকে, বাবুলকে হেনস্থার প্রতিবাদে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র ইউনিয়ের ঘরে ভাঙচুর চালানোর অভিযোগ উঠেছে এবিভিপি-র বিরুদ্ধে। অন্যদিকে, বাবুলের পাশাপাশি বিজেপি নেত্রী তথা ফ্যাশন ডিজাইনার অগ্নিমিত্রা পালকেও হেনস্থা করা হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। ইতিমধ্যে উভয় পক্ষই যাদবপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে।