কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে ঝটিকা সফরে এসে ফিরে যেতে হলো রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়কে। জানা যাচ্ছে, বুধবার আচার্য তথা রাজ্যপালকে স্বাগত জানানোর জন্য উপস্থিত ছিলেন না উপাচার্য-সহ বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য আধিকারিকরা। এদিন সেনেট বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বুধবার যে সেনেট বৈঠক বাতিল হয়েছে সে কথা বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে মঙ্গলবারই জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল রাজভবনকে। তা সত্ত্বেও এদিন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে হঠাৎ পরিদর্শনে আসেন রাজ্যপাল। জানা গিয়েছে, সে সময় বিশ্ববিদ্যালয়ে উপস্থিত ছিলেন না উপাচার্য, সহ-উপাচার্য এবং রেজিস্ট্রার। এদিকে ধনকড় দাবি করেছেন, পরিকল্পনা মাফিক অপমান করা হয়েছে তাঁকে।
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের এদিনের ঘটনায় কড়া প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন বিজেপি নেতা মুকুল রায়। তিনি বলেন, "কিছু বলার ভাষা নেই। আগাম জানিয়ে গিয়েছেন, অথচ এমন আচরণ করেছেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য! এ জন্য সম্পূর্ণ দায়ী রাজ্য সরকার।"
হঠাৎই বুধবার দুপুরে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে আসেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। তাঁকে স্বাগত জানানোর জন্য উপস্থিত ছিলেন না কেউ। তিনি গিয়ে দেখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যর ঘরে তালা ঝুলছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো আধিকারিক উপস্থিত ছিলেন না সেখানে। এরপর তিনি ঘুরে দেখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরিও। সেখানে তখন কোনো লাইব্রেরিয়ানও উপস্থিত ছিলেন না বলে জানিয়েছেন রাজ্যপাল। এরপর সাংবাদিকদের কাছে ক্ষোভ উগরে দেন তিনি।
"বিশ্ববিদ্যালয়কে রাজনীতির জায়গায় পরিণত করবেন না" বলে তোপ দাগেন রাজ্যপাল। তিনি আরও বলেন, “উপাচার্যকে আসার কথা আগেভাগেই জানিয়েছিলাম। তা সত্ত্বেও বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনও আধিকারিক নেই। আমার সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো আধিকারিক দেখাও করেননি। সকলের মোবাইল আনরিচেবেল, কারা কাজ করছেন এখানে? উপাচার্যর ঘরে তালা দেওয়া ছিল। চাবি কোথায় কেউ বলতে পারেনি। এই ঘটনা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক, বেদনাদায়ক।"
এদিন সেনেটের বৈঠকে রাজ্যপালের উপস্থিত থাকার কথা ছিল। কিন্তু নির্ধারিত বৈঠকের ঠিক আগের দিন সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার দেবাশিস দাস জানান, অনিবার্য কারণে বৈঠক স্থগিত রাখা হচ্ছে। কবে এই বৈঠক হবে তা জানানো হয়নি। কেন বৈঠক বাতিল করা হয়েছিল, সে বিষয়টি এখনও স্পষ্ট নয়। সূত্রের খবর, দ্বারভাঙা ভবনের রক্ষণাবেক্ষণের কাজ চলছে। সেই কারণেই বৈঠক স্থগিত রাখতে হয়।
উল্লেখ্য, রাজ্যপালের কাছে আগাম সময় চেয়ে সেনেটের বৈঠকের সূচি নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু তাহলে কেন সময়মত কাজ শেষ হলো না, উঠছে প্রশ্ন। আগামী বছরের শুরুতে সমাবর্তনে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়কে সাম্মানিক ডিলিট দেওয়ার প্রস্তাবেও চূড়ান্ত সিলমোহর পড়ার কথা ছিল এই বৈঠকে। রাজ্য-রাজ্যপাল সংঘাতের ঘটনাক্রমে এদিনের ঘটনা ফের নতুন মাত্রা যোগ করল বলে মনে করছেন ওয়াকিবহাল মহল।