"তোমার বুকে নাথুরাম, আমার বুকে ক্ষুদিরাম", দৃপ্ত মিছিলে এই স্লোগানই, তুললেন যাদবপুরের ছাত্র ছাত্রীরা। দিল্লির জওহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়ে (জেএনইউ) রবিবার রাতে পড়ুয়া ও শিক্ষিকদের উপর হামলার ঘটনার নিন্দায় সরব গোটা দেশ। পথে নামল প্রতিবাদের শহর কলকাতাও। জেএনইউয়ের পাশে দাঁড়াতে সোমবার মহানগরের রাস্তায় মিছিলে শামিল যাদবপুর-প্রেসিডেন্সির ছাত্ররা। এদিন দফায় দফায় মিছিল করছে যাদবপুরের পড়ুয়ারা। ইতিমধ্যে যাদবপুরের এসএফআই সমর্থকদের মিছিল শেষ হয়েছে। শুরু হয়েছে আরও একটি মিছিল। এছাড়া পৃথকভাবে মিছিলের প্রস্তুতি নিয়েছে টিএমসিপিও। অন্যদিকে বিকেলে কলেজস্ট্রিটে জমায়েত ও মিছিলের প্রস্তুতি নিয়েছে প্রেসিডেন্সির এসএফআই।
আরও পড়ুন: রক্তাক্ত জেএনইউ, মুখোশধারীদের তিন ঘন্টার তাণ্ডবে আহত ২৬
যাদবপুরে পড়ুয়াদের মিছিলে এদিন অংশগ্রহণ করেন পরিচালক অনীক দত্ত, সঙ্গীত পরিচালক দেবজ্যোতি মিশ্র ও জেএনইউর ছাত্রী কৃতি। 'হাল্লাবোল হাল্লাবোল', 'হাম ছিন কে লেঙ্গে আজাদি', স্লোগানে গর্জে উঠল যাদবপুরের পড়ুয়ারা। বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪নং গেট থেকে ৮বি বাস স্ট্যান্ড হয়ে যাদবপুর থানা হয়ে ৪ নং গেটে ফিরে আসে। এরপর আধ ঘন্টা রাস্তা ঘেরাও করে রাখেন পড়ুয়ারা।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের এসএফআই সমর্থক দেবরাজ দেবনাথ বলেন, "এই ঘটনায় আজ ক্যাম্পাসেই মিছিল শুরু হবে। আর এই ঘটনা থেকেই বোঝা যাচ্ছে এবিভিপি কারা করে। তাঁরা ছাত্র না গুন্ডা এটা পরিষ্কার। হাতে হাতুরি নিয়ে ক্যাম্পাসে ঢুকে তাণ্ডব চালানো এটা মেনে নেওয়া যায় না।" জেএনইউয়ের আক্রান্তদের পাশে দাঁড়িয়ে আজ শহরে প্রতিবাদ মিছিল করবে প্রেসিডেন্সিও। দেবনীল পাল বলেন, "আজ আমরা জেএনইউয়ের সমর্থনে মিছিল করে ক্যাম্পাস থেকে কলেজ স্ট্রিট অবধি যাব, সেখানে এবিভিপির কুশপুতুল পোড়ানো হবে। অমিত শাহের সভার আগে আন্দোলন দমিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করার জন্যই এটা করা হয়েছে। আমরা এই ঘটনার ধিক্ষার জানাই। আগামীকাল কলেজ স্কোয়ার থেকে জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ি অবধি বড় মিছিল করা হবে।"
আরও পড়ুন: ”ছাত্রদের গুটি হিসাবে দেখা বন্ধ করুন”, জেএনইউ কাণ্ডে প্রতিবাদে সরব টলিউড
দেবনীল বলেন, "ছাত্র-যুবদের ওপর ফ্যাসিস্টদের আঘাত নেমে আসছে বারবার। বিগত বেশ কিছু বছর ধরে আমরা দেখে আসছি ভারতবর্ষের আনাচে কানাচে আক্রান্ত হচ্ছে ছাত্র ছাত্রীরা। ২০১৩ সালে এই প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরে ঢুকে ভাঙচুর চালায় তৃণমূল ছাত্র পরিষদ। আক্রান্ত হন ছাত্র ছাত্রীরা এবং শিক্ষকরাও। কিছুদিন আগেই যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকে ব্যাপক ভাঙচুর চালায় এবিভিপি এবং বহু ছাত্র ছাত্রীরা গুরুতর ভাবে আহত হন। এরপরেও সিটিজেনশিপ অ্যামেনমেন্ট বিল পাশ হবার পরে দিকে দিকে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে।জামিয়া মিলিয়া, আলিগড় সমস্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে আক্রান্ত হন ছাত্র ছাত্রীরা। আজ এবিভিপির দ্বারা আক্রান্ত জেএনইউ। কমরেড ঐশী ঘোষ সহ আরও অনেক ছাত্র ছাত্রী এবং শিক্ষকরা আক্রান্ত এবিভিপির হাতে। ভারতের ছাত্র ফেডারেশন প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিট আহ্বান জানায় প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্ত রাজনৈতিক সংগঠন ও মঞ্চ কে এই ঘটনার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার লড়াইতে সামিল থাকতে।"
We strongly condemn brutality unleashed agst students/teachers in JNU. No words enough to describe such heinous acts. A shame on our democracy. Trinamool delegation led by Dinesh Trivedi (SajdaAhmed, ManasBhunia, VivekGupta) headed to DEL to show solidarity with #ShaheenBagh #JNU
— Mamata Banerjee (@MamataOfficial) January 5, 2020
Live Blog
জেএনইউয়ের পাশে থাকতে আজ মহানগরের রাস্তায় মিছিল যাদবপুর ও প্রেসিডেন্সির পড়ুয়াদের। সেই সমস্ত খবরের আপডেট পেতে চোখ রাখুন এখানে। Follow the Live Updates...
একটা মিছিল শেষ হওয়ার আধ ঘণ্টার মধ্যেই, ফের আরও একটি পড়ুয়াদের মিছিলে শামিল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা। এই মিছিল যাদবপুর ক্যাম্পাস থেকে বাঘাযতীন ঘুরে বিশ্ববিদ্যালয় পৌঁছবে। শৃঙ্খলা বজায় থাকতে এলাকায় মোতায়েন করা হয়েছে বিরাট পুলিশ বাহিনী।
তিনি ক্যাম্পাসে দাঁড়িয়ে বলেন, 'এখনও আমি ছাত্র, সলিল চৌধুরির সময় থেকে আমি পথে নেমেছি। একটা পথ নিতে হবে। ইনিয়ে বিনিয়ে চলার সময় এটা নয়। স্পষ্ট ভাবে আওয়াজ তুলতে হবে। আমার বয়স তোমাদের বয়স সমান নয়। কিন্তু জেএনইউতে ঘটে যাওয়া ঘটনায় আমার মনে যে আগুন জ্বলছে তার বয়স সমান। আজকের পথে নামা বিফলে যাবে না বলে বিশ্বাস করি। আজ আমি এসেছি একজন ছাত্র হিসেবে। তোমরা তোমাদের সংগ্রাম চালিয়ে যাও'।
অনিক দত্ত বলেন, ' মিছিলের পিছনে ছিলাম। সত্তরের দশকের কথা উল্লেখ করেন। কিন্তু সে সময় এমনটা হয়নি। যারা জেএনইউতে এই ঘটনা ঘটেছে তাতে ওদের দোষ নয়, ওরা হিংসায় জ্বলছে। আমাদের জেনারেশন অপদার্থ। আমরা নিজেদের আখের গুছিয়েছি। তোমরা ভুল প্রমাণ করেছ। লাঠি সটা বল্লভ নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়তে বলব না। কারণ ওরা তাহলে সুযোগ নিয়ে নেবে। পরিকাঠামোমূলক ভাবে আন্দোলন চালিয়ে যেতে হবে। আমরা তোমাদের পাশে দাঁড়াব'।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সংগঠন (জুটা)-এর সাধারণ সম্পাদক পার্থপ্রতিম রায়ের গলাতেও শোনা গেল নিন্দার সুর। তিনি জানান, স্পষ্টতই পুলিশের উপস্থিতিতেই এই ভয়াবহ কাজটি করা হচ্ছে। জেএনইউর সহকর্মী এবং বন্ধুদের কাছ থেকে প্রাপ্ত রিপোর্টগুলি এটাই ইঙ্গিত করছে যে মুখোশধারী গুন্ডারা একটি নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলের প্রতি আনুগত্যপ্রাপ্ত। এদিকে এই হামলার তীব্র নিন্দা করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর টুইটারে লিখেছেন, ‘‘কোনও শব্দ দিয়েই এই ঘটনার ব্যাখ্যা করা যায় না। এটা গণতন্ত্রের লজ্জা।’’ জেএনইউ ও শাহিনবাগ, দুই আন্দোলনেরই পাশে দাঁড়াতে তৃণমূল সাংসদ দীনেশ ত্রিবেদীর নেতৃত্বে এক দল প্রতিনিধি আজ দিল্লি যাচ্ছেন বলে তৃণমূল সূত্রে খবর।
যাদবপুরের সুলেখা মোড়ে ধুন্ধুমারকাণ্ড। জেএনইউকাণ্ডের প্রতিবাদে মিছিলে শামিল হন পড়ুয়ারা। অন্যদিকে, আরেকটি মিছিল করে বিজেপি। বিজেপি ও পড়ুয়াদের মিছিল মুখোমুখি হতেই তা আটকে দেয় পুলিশ। এরপর রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ দেখায় বিজেপি। পাল্টা স্লোগান দেন পড়ুয়ারা। এমন উত্তেজনার মুহূর্তে আচমকাই মিছিল বের করে এসএফআই। তিনটি মিছিলই আটকে দেয় পুলিশ। মোতায়েন করা বয়েছে পুলিশের বিশাল বাহিনী।
যাদবপুরের সুলেখা মোড়ে একদিকে মিছিলে পড়ুয়ারা, অন্য মিছিলে বিজেপি। জেএনইউকাণ্ডের প্রতিবাদে পথে নেমেছেন পড়ুয়ারা। বিজেপি ও পড়ুয়াদের মিছিল আটকেছে পুলিশ। এলাকায় উত্তেজনা রয়েছে, মোতায়েন করা হয়েছে প্রচুর পুলিশ। রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ বিজেপির। দু’পক্ষের স্লোগানে সরগরম গোটা এলাকা। বিজেপি নেতা অনুপম হাজরা বলেন, ‘‘বিজেপির শান্তিপূর্ণ মিছিলকে বাধা দেওয়া পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সংস্কৃতি হয়ে দাঁড়িয়েছে’’।
জেএনইউকাণ্ডের প্রতিবাদে কলকাতার রাজপথে নামলেন প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকও। কী বললেন দেখুন...
জেএনইউকাণ্ডের প্রতিবাদে সরগরম কলকাতার রাজপথ। কলেজ স্ট্রিট থেকে রাজভবন পর্যন্ত মিছিল নাগরিক সমাজের।
বিজেপি পার্টি অফিসের পিছনে পিসি সরকার স্ট্রিটে পড়ুয়াদের মিছিলে উত্তেজনা। এলাকায় মোতায়েন করা হয়েছে প্রচুর পুলিশ। ওই এলাকায় পড়ুয়াদের মিছিল আটকাল পুলিশ। এরপরই পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি বাধে বিক্ষোভরত পড়ুয়াদের একাংশের। ছবি: শশী ঘোষ।
জেএনইউকাণ্ডের প্রতিবাদে রাজপথে নামলেন যাদবপুরের পড়ুয়ারা। ছবি: পার্থ পাল।
জেএনইউ-এর পাশে থাকতে কলেজস্ট্রিট মোড়ে পথ আটকে প্রতি
বাদ দেখাচ্ছে ছাত্র পরিষদ ও এসএফআই সমর্থকরা।