এক, দুই নয়! প্রায় ৩০ ফুটের প্রতিমা। সেই পেল্লায় সাইজের ঠাকুরের হাতে আবার ৬ ফুটের খাঁড়া। ২২ কেজি যার ওজন, পুরোটাই রুপোর। শুধু তাই নয়, মায়ের জিভ থেকে শুরু করে কানের দুল, নাকের নথ সবই খাঁটি সোনা-রুপোর। বাংলার মহান স্বাধীনতা সংগ্রামী বাঘাযতীনের হাত ধরে এই পুজোর সূচনা। কালে কালে ৯৫ বছর বয়স এই পুজোর। কিন্তু সময় পেরোলেও ঐতিহ্যে ও আভিজাত্যে আজও অমলিন উত্তর কলকাতার পাথুরিয়াঘাটা সর্বজনীনের কালীপুজো।
Advertisment
এই পুজো বড় কালী নামেও পরিচিত। বাঘাযতীন শুধু নয়, নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু, ভূপেন বোস, মহারাজা মণীন্দ্রচন্দ্র, মহারাজা শ্রীশচন্দ্রের মতো মহান রত্নদের স্মৃতিধন্য এই কালীপুজো। পাথুরিয়াঘাটা ব্যায়াম সমিতি পরিচালিত এই পুজো বারোয়ারি হলেও তা নামেই। বনেদি বাড়ির পুজোর মতোই এর আচার-রীতি। এই পুজোয় রয়েছে বেশ কিছু রীতি, যা অবাক করে দেয় বইকী!
১৯২৮ সালে পাথুরিয়াঘাটা ব্যায়াম সমিতির প্রতিষ্ঠাতা বিপ্লবী বাঘাযতীন এই পুজোর সূচনা করেন। ১৯৩০ সালে এই পুজোর সভাপতিত্ব করেন নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু। কলকাতায় যত বারোয়ারি কালীপুজো রয়েছে, তার মধ্যে সবচেয়ে পুরনো এটি। মায়ের হাতের রুপোর খাঁড়া দিয়েছিলেন নরেণ পোদ্দার। পুজোর দিন রীতি মেনে আড়াই ফুটের একটি রুপোর মঙ্গলঘটে করে গঙ্গাজল আনা হয়।
আর বিসর্জনের দিন আরও অবাক করার মতো রীতি। পুজোর পুরুষ সদস্যরা ধুতি-পাঞ্জাবি ও মহিলারা আটপৌড়ে লালপেড়ে সাদা শাড়ি পরে শোভাযাত্রায় অংশ নেন। খালি পায়ে মাসের বিসর্জনে যান সবাই। পুজোর পরের দিন হয় অন্নকূট উৎসব। তিন থেকে চার হাজার মানুষ পাত পেড়ে ভোগ খান।