করোনা প্রতিরোধ লকডাউনের ঘোষণায় গৃহবন্দি হয়ে পড়েছেন রাজ্যের মানুষ। সোমবার প্রথম করোনায় আক্রান্ত মৃত ব্যক্তির শবদাহ নিয়ে তুলকালাম ঘটে গিয়েছে নিমতলা শ্মশানে। ওই দিন রাতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশকে দফায় দফায় লাঠিচার্জ পর্যন্ত করতে হয়েছে। এবার করোনা আক্রান্ত রোগীর মৃতদেহ সৎকার করার জন্য মহানগরের দু'টি জায়গা নির্দিষ্ট করল কলকাতা পুরসভা। দাহ করা হবে ধাপায়, কবরস্ত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বাগমারিতে।
কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম বলেন, "সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে এরপর করোনায় যদি কারও মৃত্যু হয় তাহলে ধাপায় সৎকার করা হবে। কাউকে যদি কবর দিতে হয় তাহলে বাগমারির একটা জায়গা নির্দিষ্ট করেছি। সেখানে কবরস্ত করা হবে। তার জন্য পৃথক গেট করার ব্যবস্থাও করা হচ্ছে। মানুষ যাতে আতঙ্কিত না হয় তার জন্যই দূরে এই ব্যবস্থা করা হচ্ছে। তবে আশা করছি আর কোনও মৃত্যু হবে না।" মেয়র মনে করেন, "মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যেপাধ্যায় হ্যামারিং করে রাজ্য ব্যাপী লকডাউন করেছেন। শীঘ্রই তার সুফল পাব। আমরা মানুষ, আতঙ্কিত হয়ে বাঁচা যায় না। আমরা সতর্ক থাকব।"
আরও পড়ুন: লকডাউন ইন্ডিয়া: কী করতে পারবেন, কী পারবেন না
করোনা আতঙ্কে রীতিমত ভীত হয়ে পড়েছে সাধারণ মানুষ। ইতিমধ্যেই রাজ্য তথা দেশ ব্যাপী লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। বেশিরভাগ মানুষই ঘরে আটকে পড়েছেন। বিধিনিষেধ সত্বেও এক শ্রেণির মানুষ বাইরে বেরনো থেকে বিরত থাকছেন না। এরইমধ্যেই প্রথম করোনা আক্রান্ত ব্যক্তির শেষকৃত্য নিয়ে গন্ডগোল বাঁধে নিমতলা শ্মশান ঘাট এলাকায়। সৎকার করতে স্থানীয় মানুষ বাধা দেন। বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। এরপরই, মঙ্গলবার জরুরি বৈঠক করে কলকাতা পুরসভা। সেখানেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, করোনায় মৃতদের ধাপা ও বাগমারিতে শেষকৃত্য করা হবে।
করোনা সংক্রামক নিয়ে মানুষের আতঙ্ক ক্রমশ বাড়ছে। প্রথমে আমলার লন্ডন ফেরৎ ছেলের ঘুরে বেড়ানো, আরো এক লন্ডন ফেরৎ বালিগঞ্জের আক্রান্ত যুবকের বাবা, মা ও বাড়ির পরিচারিকার শরীরে করোনা ভাইরাস পাওয়া। এমন সংক্রমনের ফলে গুটিয়ে গিয়েছে রাজ্যের মানুষ। বেড়েছে উদ্বেগ। তারওপর মৃতদেহ থেকে সংক্রমণ ছড়াবে এই আশঙ্কা চেপে বসেছে রাজ্যবাসীর মনে। খুব সতর্কতার সঙ্গে দাহ করা উচিত বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। এক্ষেত্রে সমস্তরকম সতর্কতা মূলক ব্যবস্থা নেওয়া উচিত বলে তাঁরা মনে করেন।