আর মাত্র দুদিন। ২৫শে ডিসেম্বর মানেই বাঙালির কাছে যীশুপুজো। যীশুর জন্মদিনের দিন সেজে ওঠে শহর কলকাতার নানান প্রান্ত। চার্চের অন্দরমহল তো বটেই তাঁর সঙ্গে রাস্তাঘাট এমনকি যীশু আরাধনায় মেতে ওঠেন অনেকেই।
Advertisment
শিল্পের কোনও ধর্ম বর্ণ নেই। শিল্পীর সৃষ্টির কোনও শেষ নেই। তাই তো, শহর কলকাতার বুকে এবারের ২৫ ডিসেম্বর হতে চলেছে একটু ভিন্ন ধরনের। দীপাবলির সময় মানুষের বাড়ির সামনে আলপনা দিতেন, সেই রত্নাবলী ঘোষকে মনে আছে? এবার কিন্তু বড়দিনের আগেও সেই একই কাজ করে চারপাশকে সাজিয়ে তুলছেন তিনি। চার্চের ভেতরে নিজের শিল্পকলার মাধ্যমে এক ভিন্ন চিত্র ফুটিয়ে তুলছেন শিক্ষিকা রত্নাবলী ঘোষ। চার্চের সাদা ঝকঝকে তকতকে মার্বেলের ওপর সাদা আলপনার প্রলেপ দিতেই যেন সৌন্দর্য আরও বেশি করে ফুটে উঠছে।
এই দৃশ্য দেখতে অবাক লাগলেও বৈচিত্র্যের মধ্যে ঐক্য এই কথাই যেন বার বার মনে পড়ে যায় রত্নাবলী দেবীর এই অনন্য প্রয়াসকে দেখলে। তবে, এবারও তিনি একা নন। বরং তাঁর দুই সঙ্গী প্রশান্ত এবং লিপিকাও রয়েছেন। এই আলপনার মধ্যে দিয়ে তাঁরা ফুটিয়ে তুলেছেন খ্রিস্টীয় নানান চিহ্ন। বাংলার এই অসাধারণ আর্ট ফর্মকে মিলিয়ে দিয়েছেন যীশুর জন্মদিন উদযাপনের সঙ্গে।
মিডলটন স্ট্রিটের সেন্ট থমাস চার্চ থেকে ধর্মতলার স্যাক্রড হার্ট চার্চ, রত্নাবলী, প্রশান্ত এবং লিপিকা নিজেদের মত করে সাজিয়ে তুলেছেন ফ্লোরের নানা অংশ। যাতে রয়েছে বাংলার সংস্কৃতি এবং নতুনত্বের ছোঁয়া। জানা যাচ্ছে, ফাদার হ্যানসেল সম্পূর্ন ঘটনায় এতটাই উদ্বুদ্ধ যে শুধু চার্চের চারপাশ কিংবা সদরের আশেপাশে নয় বরং বেদীর কাছে নিয়ে গিয়ে আলপনা দেওয়ার কথা জানিয়েছিলেন দলকে।
রত্নাবলী ঘোষ যিনি এই কাজের সঙ্গে প্রথম থেকে যুক্ত তিনি জানিয়েছিলেন, এত সুন্দর একটা কাজ যে না করতে পারেন নি। আর বাড়ির সদর দরজায় আলপনা দিতে দিতে একটা সময়, যখন বাড়ির লোকেরা দরজা খুলেই হেসে উঠতেন, এর থেকে বড় প্রাপ্তি আর কিছুই নেই।