Advertisment

বইমেলা তো একদিন আগে শুরু হয়ে গেল, তারপর?

সরস্বতী পুজোর ছুটি এবং পরপর আরও তিনদিনের সরকারি ছুটির দৌলতে শুধু সেলফি লোভীরা নন, বইমেলায় বুধবার পৌঁছেছিলেন পাঠক-ক্রেতা এবং সর্বোপরি নতুন বইয়ের লেখকরাও, তাঁদের সৃষ্টিখানি হাতে ধরে দেখতে।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Book Fair 2020

বইমেলায় জাগো বাংলার মণ্ডপে মণীষীমূর্তি খচিত পাহাড়

মেলা শুরু হওয়ার কথা ছিল বুধবার। শুরু মানে উদ্বোধন। সে রকম ভাবেই পরিকল্পনা সাজিয়েছেন বা বলা ভাল সাজিয়েছিলেন প্রকাশকরা। মুখ্যমন্ত্রী সে পরিকল্পনা কিছুটা বদলে দিয়েছেন। নিন্দুকেরা বলছে, ভেস্তে দিয়েছেন।

Advertisment

সকলেই জানেন, উদ্বোধন যেদিন হয় আনুষ্ঠানিক, সেদিন সব নতুন বই এসে পৌঁছয় না। নতুন বই আসতে আসতে, খুব তাড়াতাড়ি হলে, পরদিন। মেলার অলিখিত নিয়ম হল, জানুয়ারির শেষ বুধবার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন, বৃহস্পতিবার থেকে সব মোটামুটি শুরু। মোটামুটি। সব নতুন বই আসতে আসতে শনি রবি। এই দীর্ঘকালীন অভ্যাসে এবার চিড় ধরে গিয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একদিন আগে মেলার উদ্বোধন করে দেওয়ায়।

Book Fair Saraswati Puja বিকিকিনি তেমন জমে ওঠেনি

সরস্বতী পুজোর ছুটি এবং পরপর আরও তিনদিনের সরকারি ছুটির দৌলতে শুধু সেলফি লোভীরা নন, বইমেলায় বুধবার পৌঁছেছিলেন পাঠক-ক্রেতা এবং সর্বোপরি নতুন বইয়ের লেখকরাও, তাঁদের সৃষ্টিখানি হাতে ধরে দেখতে। কিন্তু কা কস্য পরিবেদনা! বই তো আসেনি।   ফলে নতুন-পুরাতন লেখক-লেখিকারা না-খুশ, না-খুশ তাঁদের সই নিতে বা সঙ্গে আসা পাঠকরাও। মুখ ভার তাঁদের।

প্রকাশকরা জনান্তিকে বলাবলি করছেন, "আরে ৭০ পারসেন্ট বই তো নিয়েই এসেছি, কী করে জানব একদিন আগে সব চলে আসবে!"

অপ্রস্তুতি, ফলে সরস্বতীপুজোর দিনের বইমেলার সর্বাঙ্গে। সে অবশ্য শুরু হয় তার আগে থেকে। বইমেলা স্পেশাল বাসটি নিউটাউন হয়ে নবদিগন্ত পৌঁছে রাস্তা খুঁজে পায় না, সে বাসের চালক বা কন্ডাক্টর কেউই সে রুটে আগে আসেননি। পথপ্রদর্শক হয়ে যাত্রী চালকের পাশে বসে গুগল ম্যাপ দেখিয়ে যাত্রাসহায়কের ভূমিকা পালন করেন।

publive-image একদিন আগে মেলা উদ্বোধন করে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী

মেলায় ঢুকলে প্রথমে কিছু চোখে পড়ার আগে কানে বাজে। ক্যাকাফোনি। নানা প্রোগ্রাম, নানাবিধ মাইক। ধাতস্থ হলেই বোধগম্য হয়, সবাই রাজা, অন্তত শব্দদূষণ সৃষ্টিতে। লালন বাজছে, মহীন বাজছে, বাজছে মাইক হাতে স্মার্ট ফুটানি। কান অবশ্য কিছুক্ষণ পর ধাতস্থ হয়ে যাবে, দূষণের সঙ্গে যাপন যেরকম।

সব গেটও তৈরি হয়নি। স্টল তো বটেই। এবং অংশগ্রহণকারীরা সকলে এসে পৌঁছনও নি। লিটল ম্যাগাজিন কিংবা ছোট স্টলগুলির অনেকগুলিই খাঁ খাঁ। মায় ফুড কোর্টেও তেমন ভিড় নেই। ভিড়ের অবশ্য কমতি দেখা গেল না বিশাল জাগো বাংলা চত্বরে। সেখানে ক্রমাগত অনুষ্ঠান হচ্ছে, ক্রমাগত সেলফি তোলা হচ্ছে। মণীষীদের মুখ সমৃদ্ধ পাহাড়ের গায়ে লেখা নো ক্যা, নো এনআরসি।

publive-image লিটল ম্যাগাজিন চত্বরে অত্যুৎসাহীরা আছেন, অপ্রস্তুতরা নেই

মাটিতে বসে টুকটাক হাতের কাজ বিক্রিও চলছে। মেলায় যাঁরা গাড়ি নিয়ে গিয়েছেন, তাঁরা শেষকালে ভ্যাবাচ্যাকা খেয়েছেন। প্রতি ঘণ্টা ৩০ টাকা করে নেওয়া হচ্ছে, এবং বিল দেওয়া হচ্ছে ২০ টাকা করে, অভিযোগ। কেন এমন, তার উত্তরে জানা গিয়েছে, নতুন বিল তৈরি হয়নি। বৃহস্পতিবার আসবে।

মেলা একদিন আগে শুরু হয়ে গিয়ে এই পরিস্থিতি, যুক্তি তাঁদেরও।

Book Fair
Advertisment