রবিবার সন্ধ্যায় পশ্চিমবঙ্গে করোনাভাইরাস (COVID-19) আক্রান্ত ঘোষিত হলেন আরও তিনজন, যার ফলে রাজ্যে মোট আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হলো সাত। রাজ্যের এক উচ্চপদস্থ স্বাস্থ্য আধিকারিক জানিয়েছেন, তিনজনই কলকাতার বাসিন্দা, এবং দ্বিতীয় করোনা আক্রান্তের পরিবারের সদস্য ও গৃহকর্মী, যাঁরা সরাসরি আক্রান্তের সংস্পর্শে এসেছিলেন।
ওই আধিকারিকের কথায়, "গত ২০ মার্চ যে ২২ বছরের তরুণের দেহে COVID-19 ভাইরাস পাওয়া যায়, তার বাবা-মা এবং গৃহকর্মীর দেহেও পাওয়া গিয়েছে ভাইরাস।" তিনি আরও জানান, ওই তরুণের দ্বারাই সংক্রমণ ছড়িয়েছে বাড়ির অন্যান্যদের মধ্যে।
উল্লেখ্য, সোমবার, ২৩ মার্চ বিকেল পাঁচটা থেকে রাজ্যে কলকাতা সহ সমস্ত পুরসভা এলাকায় লকডাউন ঘোষণা করেছে রাজ্য সরকার। অন্যদিকে, আজ মধ্যরাত থেকে সারা দেশে আগামী ৩১ মার্চ পর্যন্ত বাতিল করে হচ্ছে সমস্ত যাত্রীবাহী ট্রেনও। এর আওতায় পড়ছে কলকাতার মেট্রো রেলও।
আরও পড়ুন: লকডাউন নাহয় হলো, কিন্তু বিকল্প কী? প্রশ্ন শহরের চিকিৎসকদের
আক্রান্ত তরুণ লন্ডন থেকে কলকাতায় ফেরেন ১৩ মার্চ, এবং গত শুক্রবার COVID-19 পজিটিভ ঘোষিত হন তিনি। দক্ষিণ কলকাতার বালিগঞ্জের এক অভিজাত আবাসনের বাসিন্দা ওই তরুণকে তাঁর শহরে ফেরার পর থেকেই গৃহবন্দি রাখা হয়েছিল বলে দাবি তাঁর পরিবারের। যদিও কোয়ারান্টাইনের নিয়ম ভাঙার অভিযোগ উঠেছে তাঁর বিরুদ্ধে। তাঁর শরীরে ভাইরাসের চিহ্ন পাওয়ায় রাজারহাটের বিশেষ আইসোলেশন ইউনিটে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁর পরিবারের বেশ কিছু সদস্য এবং ওই গৃহকর্মীকে, যেখানে ১৪ দিনের কোয়ারান্টাইনে ছিলেন তাঁরা। পরে NICED-এ পাঠানো হয় তাঁদের 'সোয়াব' স্যাম্পেল। আজ সেই স্যাম্পেল পরীক্ষার ফলাফল পাওয়া গিয়েছে।
ওই তরুণ আক্রান্ত হওয়ার পর বালিগঞ্জের আবাসনে নজরদারি চালায় রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর। সূত্রের খবর, শহরে ফেরার পর পাঁচ দিন যাবৎ যত্রতত্র ঘুরে বেরিয়েছেন ওই যুবক। কলকাতায় পৌঁছনোর আগে দিল্লিতেও ঘণ্টা দেড়েক কাটান তিনি। গত শুক্রবার গভীর রাতে জানা যায়, তাঁর রিপোর্ট পজিটিভ। এরপরই তাঁর বাবা, মা, ভাই, দাদু এবং ঠাকুমাকেও রাজারহাটে কোয়ারান্টাইনে রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
ওদিকে ২০ মার্চ নবান্ন থেকে জারি হয়েছে কড়া বার্তা – বিদেশ থেকে আগত কোনও শহরবাসী যদি স্বেচ্ছায় কোয়ারেন্টাইনে না যান, তবে তাঁকে জোর করেই গৃহবন্দী করে রাখা হবে। এই মর্মে সতর্কবার্তা নিজেদের সোশ্যাল মিডিয়া পেজে পোস্ট করে কলকাতা পুলিশও। ওই বার্তায় বলা হয়, "যিনি বা যাঁরা এই নির্দেশ অমান্য করবেন, তাঁর বা তাঁদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ করবে রাজ্য সরকার। প্রয়োজনে ‘ ওয়েস্ট বেঙ্গল এপিডেমিক ডিজিজ কোভিড১৯ রেগুলেশন ২০২০’ অনুসারে, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা ব্যক্তিদের বলপূর্বক ‘কোয়ারান্টাইন’ অর্থাৎ গৃহবন্দি থাকতেও বাধ্য করা হবে।”