যে শহরের প্রাণ দুর্গাপুজো, এবার সেই পুজোর আড়ম্বর, জৌলুসে ভাটা পড়তে চলেছে। নেপথ্যের কারণ আগে ছিল করোনা-লকডাউন, এবার সেই তালিকায় যুক্ত হল ঘূর্ণিঝড় আমফানের নাম। এই দুই জোড়া সঙ্কটের ধাক্কায় উৎসবের রঙ হয়েছে ফিকে। এ বছর ২২ অক্টোবর থেকে ২৬ অক্টোবর পর্যন্ত দুর্গাপুজোর চার দিন ধার্য ছিল পঞ্জিকা মতে। কিন্তু অর্থনৈতিক-মানসিক ধাক্কায় ম্রিয়মাণ পুজোর উদ্যোক্তারাও।
এ শহরের থিমভিত্তিক বড় পুজোদের বাজেট থাকে কম করে ৪০ থেকে ৬০ লক্ষ টাকা। কিন্তু সেই বিপুল বাজেটে এবার আগেভাগেই কাটছাঁট করেছে পুজোগুলি। রাজ্যের পঞ্চায়েত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের পুজো একডালিয়া এভারগ্রিন, শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের পুজো নাকতলা উদয়ন সংঘ কিংবা অরূপ বিশ্বাসের সুরুচি সংঘ স্পনসরের অভাবে ইতিমধ্যেই পুজোর বাজেট অর্ধেক করেছেন তাঁরা।
সুরুচি সংঘের সাধারণ সম্পাদক স্বরূপ বিশ্বাস বলেন, "গত ২০ বছর ধরে যেভাবে দুর্গাপুজো করে আসছি এবারে সেভাবে পারব কি না জানি না। লকডাউনের ফলে এখনও পর্যন্ত কোনও স্পনসর পাইনি। পে কাট হয়েছে, চাকরিও খোয়া গিয়েছে এই বাজারে। মানুষ চরম দুশিন্তায় রয়েছে। এই অবস্থায় আমাদের ক্লাবের তরফে অনেককে ত্রাণ সহায়তা করেছি। মুখ্যমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে ২ লক্ষ টাকাও দিয়েছি। এখন মানুষই আমাদের কাছে আগে। পুজো উৎসব পরে।"
অন্যদিকে অক্টোবরে পুজো হলে এই সময় থেকেই তোড়জোড় শুরু হয়ে যায় শহরের সব ক্লাবগুলোতে। কিন্তু এবারের চিত্র অনেকটাই ভিন্ন। পুরপ্রশাসক নফিরহাদ হাকিমের পুজোর অভিনব থিমের টানে চেতলা অগ্রণীতে প্রতিবছর প্রায় ৩০ লক্ষ মানুষ আসেন পুজোয়। কিন্তু সেই উৎসাহে এবার নিজেরাই বাঁধ দিতে চাইছেন পুজোর কর্মকর্তারা। ক্লাব কমিটির এক্সিকিউটিভ সদস্য সন্দীপ মুখোপাধ্যায় বলেন, "লকডাউনের জন্য আমাদের ক্লাব বন্ধ। এ বছরের পুজোর জন্য একটি মিটিং তো দূর, কোনও কাজই শুরু হয়নি। আমরা এবছর আর থিম করব না। বাজেটও অর্ধেক করে দিয়েছি। আমরা চাইনা প্রচুর মানুষ ভিড় করে এই পুজো দেখতে আসুন। এখনও করোনাভাইরাস কমার কোনও লক্ষণ নেই। আর এই মুহুর্তে আমাদের সব সদস্যরাই আমফান বিধ্বস্ত মানুষদের ত্রান বিলি করতে ব্যস্ত রয়েছেন।"
Read the full story in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন