হাতে হয়তো আর মাত্র কয়েকটা দিন, তারপরই আছড়ে পড়তে পারে তৃতীয় ঢেউ। বাংলায় প্রতিদিন ৩০ থেকে ৩৫ হাজার মানুষ ডেল্টা-ওমিক্রনে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভবনার কথা শুনিয়েছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। এর মধ্যেই কলকাতার সংক্রমন ছাড়াল প্রায় ১০ গুনের বেশি। যা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে স্বাস্থ্য দফতর।
শুক্রবার শুধু কলকাতাতেই করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ১,৯৫৪ জন। শনিবার এই সংখ্যাটা লাফিয়ে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২,৩৯৮ জন। শুক্রবারের তুলনায়, শনিবার মাত্র একদিনে সংক্রমন বেড়েছে ১২০০ জন। আর এই সংখ্যাতেই বাড়ছে দুশ্চিন্তা। গত সোমবার কলকাতায় নতুন করে করোনা আক্রান্ত হয়েছিলেন ২০৪ জন। মাত্র ৬ দিনের ব্যবধানে সংখ্যাটা পৌঁছেছে ২,৩৯৮ তে। যা প্রায় ১০ গুনেরও বেশি। আর এই সংখ্যাতেই বাড়ছে দুশ্চিন্তা। মাত্র সাত দিনে কলকাতা শহরে কোভিড সংক্রমণের হার প্রায় ২৪ শতাংশে (২৩.৪২) পৌঁছে গিয়েছে।
শনিবার কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই রোগীদের মধ্যে ১০ শতাংশের র্যাপিড অ্যান্টিজেন পরীক্ষা হয়েছে। বাকি ৯০ শতাংশের আরটিপিসিআর পরীক্ষা করানো হয়েছে। কলকাতার লাগোয়া হাওড়া শহরে সংক্রমণের হার প্রায় ১১ শতাংশ। এর মধ্যে ৩৮ শতাংশের র্যাপিড অ্যান্টিজেন পরীক্ষা হয়েছে। বাকি ৬২ শতাংশের কোভিড ধরা পড়েছে আরটিপিসিআর পরীক্ষায়। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে আরও বেশি পরীক্ষা করা হলে দেশের মধ্যে সংক্রমণের নিরিখে শীর্ষে থাকবে তিলোত্তমা।
উৎসবের আনন্দ চেটেপুটে উপভোগ করার পরিণাম যে কত ভয়াবহ তা এখন মানুষ হাতে হারে বুঝতে পারছেন মত চিকিৎসক মহলের। উপসর্গ না থাকায় বহু মানুষ কোভিড পরীক্ষাই করাচ্ছেন না। আর তাতেই নতুন করে প্রতিদিন বাড়ছে সংখ্যাটা। এসবের মাঝেও বছরের প্রথম দিনে খাস কলকাতায় যে চিত্র ধরা পড়েছে তা যথেষ্ট উদ্বেগের।
সকাল থেকেই চিড়িয়াখানা, ইকোপার্ক, ভিক্টোরিয়ার সামনে ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতই। মাস্কহীন মানুষের সংখ্যাটাও ছিল চোখে পড়ের মত। চিকিৎসকরা বলছেন, এখনই সাবধান না হলে বাংলায় সংক্রমণ রোজ দ্বিগুণ বা তারও বেশি বাড়তে পারে।
হাসপাতালে শয্যা ক্রমেই অমিল হয়ে যাবে। গভীর হচ্ছে করোনার নয়া ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রনের থাবাও। ও রাজ্যে ওমিক্রনে সংক্রমিতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১৫। গত ২৪ ঘণ্টায় এই শহরে কোভিড পজিটিভের সংখ্যা ২ হাজার ৩৯৮। মৃত্যু হয়েছে ২ জনের। এরপরই রয়েছে, উত্তর ২৪ পরগনা (আক্রান্ত ৬৮৮ জন, মৃত ২ জন), হাওড়া (আক্রান্ত ৩৪৪ জন, মৃত ২ জন), পশ্চিম বর্ধমান (আক্রান্ত ২৪১ জন, মৃত ২ জন), দক্ষিণ ২৪ পরগনা (আক্রান্ত ১৯৮ জন, মৃত ১ জন), হুগলি (আক্রান্ত ১৬৫ জন)। দক্ষিণের তুলনায় রাজ্যের উত্তরের জেলাগুলিতে আক্রান্তের হার অপেক্ষাকৃত কম।