ছানি কাটতে গিয়ে চোখ উপড়ে ফেলা হল কলকাতায়!

সংক্রমণের জন্য কোনো ডাক্তার দায়ী থাকেন না। তবু অস্ত্রোপচারে ত্রুটি না থাকা সত্ত্বেও আমরা রোগীর সমস্ত রকম খরচের ভার নিয়েছি, দাবি হাসপাতালের।

সংক্রমণের জন্য কোনো ডাক্তার দায়ী থাকেন না। তবু অস্ত্রোপচারে ত্রুটি না থাকা সত্ত্বেও আমরা রোগীর সমস্ত রকম খরচের ভার নিয়েছি, দাবি হাসপাতালের।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

সামান্য ছানি অপারেশন করতে গিয়ে ভয়ঙ্কর কাণ্ড ঘটল কলকাতায়। ৬৫ বছরের বৃদ্ধা রোগীর চোখটাই উপড়ে ফেলতে হল! জানা যাচ্ছে, অস্ত্রোপচারের পর সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ে চোখে। কিন্তু সামান্য ছানি অপারেশনের পর কী ভাবে এমনটা ঘটতে পারে? রোগী ঝুনু দত্তের পরিবারের অভিযোগ, ডাক্তারদের গাফিলতিতেই এমনটা ঘটেছে। কিন্ত কেপিসির অধ্যক্ষ ডাঃ অশোক ভদ্র এই অভিযোগ মানতে নারাজ।

Advertisment

ঝুনু দত্তের ছেলে রাজু দত্ত ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা-কে বলেন, '১১ জানুয়ারি ছানি অপারেশনের জন্য ডাঃ পার্থ প্রতিমের অধীনে কেপিসিতে ভর্তি করা হয় মাকে। সেদিনই দুপুর আড়াটে পর্যন্ত অস্ত্রোপচার চলে। এরপর পাঁচটা নাগাদ যখন মায়ের চোখের ব্যান্ডেজ খুলে দেওয়া হয়, তখন মা ভালোই দেখতে পাচ্ছিল। কিন্তু ঘণ্টা খানেক যাওয়ার পরই মায়ের চোখে ব্যাথা শুরু হয়'। তবে ডাক্তারকে অনেকবার ফোন করলেও তিনি যথা সময়ে আসেননি বলে অভিযোগ করেছেন রাজুবাবু। তিনি আরও বলেন, ডাক্তার আসার পর জানান চোখে সংক্রমণ হয়েছে এবং তা নাকি খুবই সাধারণ বিষয়। ওষুধে সেরে যাবে।

এরপর ১৪ জানুয়ারির পর বিবি আই ফাউন্ডেশনে ডাঃ রুপক রায়ের কাছে ঝুনু দত্তকে পাঠানো হয়। সেখানেই রোগীর জানতে পারে যে চোখের অবস্থা একেবারে ভাল নয়। রেটিনাতে মারাত্মক সংক্রমণ হয়ে গিয়েছে এবং তিনি দৃষ্টি হারিয়েছেন। এদিনই কেপিসিতে ফিরিয়ে নিয়ে আসা হয় রোগীকে। ভর্তিও করা হয়। যাদবপুর থানায় ডাঃ পার্থ প্রতিমের নামে এফআইআর করেন ঝুনু দত্তের পরিবারের সদস্যরা।

এরপর ১৬ তারিখ পর্যন্ত সংক্রমণ কমানোর জন্য সময় চেয়ে নেয় কেপিসি। বলা হয়, চিকিৎসার যাবতীয় খরচের ভার নেবে হাসপাতাল। তখন কেপিসিই শঙ্কর নেত্রালয়ে ডাঃ রুপক রায়ের তত্ত্বাবধানে ঝুনু দত্তকে ভর্তি করে। সেখানকার ডাক্তাররাও জানান যে ঝুনু দত্তের চোখের অবস্থা খুবই খারাপ। এরপর ডাঃ দেবী কুন্ডু অস্ত্রোপচার করেন এবং চোখ উপড়ে ফেলতে হয়।

Advertisment

অন্যদিকে কেপিসির অধ্যক্ষ ডাঃ অশোক ভদ্র ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা-কে বলেন, অস্ত্রোপচারের গাফিলতিতে রোগীর চোখ উপড়ে ফেলতে হয়েছে, এই অভিযোগ সত্য নয়। ডায়াবেটিসের রোগী ঝুনু দত্ত, তার উপর ওঁর বয়স ৬৫। সুতরাং, সংক্রমণ হওয়ার প্রবণতা বেশি থাকে। এর আগেও উনি কেপিসি-তে এসেছিলেন। কিন্তু তখন সুগার অনেক বেশি থাকার কারণে অস্ত্রোপচার করা যায়নি। ছানি কাটানো খুবই সামান্য বিষয়, এতে এরকম মারাত্মক ঘটনা হাজারে একটা হতে পারে। সংক্রমণের জন্য কোনো ডাক্তার দায়ী থাকেন না। তবু অস্ত্রোপচারে ত্রুটি না থাকা সত্ত্বেও আমরা রোগীর সমস্ত রকম খরচের ভার নিয়েছি। সংক্রমণ যাতে মস্তিষ্কে ছড়িয়ে না যায়, বা অন্য চোখটি নষ্ট না করে দেয় সেকারণেই এই সিদ্ধান্ত নিতে হয়।

ডাঃ অশোক ভদ্রের অভিযোগ, রোগীর পরিবার ডাঃ পার্থ প্রতিমের গায়ে হাত তোলেন। কিন্তু এই অভিযোগ মানতে নারাজ রোগীর পরিবার। তাঁরা জানিয়েছেন, "মায়ের চোখের যা অবস্থা হয়েছে, তাতে উঁচু স্বরে কথা বলা বা ধস্তাধস্তি হওয়াটাই স্বাভাবিক। কিন্তু ডাক্তারবাবুর গায়ে আমরা হাত তুলিনি।"