করোনা মোকাবিলায় প্রস্তুত কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ। এশিয়া মহাদেশের প্রাচীনতম মেডিক্যাল কলেজের সুপার স্পেশ্যালিটি বিল্ডিং-এ ২৪০টি 'আইসোলেশন শয্যা' তৈরি হয়ে গিয়েছে বলে খবর। জানা যাচ্ছে, এখন থেকে সর্বদা করোনা চিকিৎসার জন্য প্রস্তুত রাখা হবে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজকে। এরপর বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালের চাপ বেড়ে গেলে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করা হবে করোনা আক্রান্তদের।
করোনা ভাইরাস আক্রান্তদের চিকিৎসার হাসপাতাল হিসেবে মেডিক্যাল কলেজকে ইতিমধ্যেই চিহ্নিত করা হয়েছে। এখানে ৩০০০ শয্যা রাখার ভাবনাচিন্তাও করেছে রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর। তবে আপাতত ২৪০ টি শয্যা তৈরি হয়েছে। এরপর ধাপে ধাপে কাজ এগোবে। অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা-কে হাসপাতালের সুপার ইন্দ্রনীল বিশ্বাস বলেন, "প্রস্তুত আমরা। অনুমতি পেলেই শুরু হবে চিকিৎসা পর্ব। সমস্ত কাজটাই নির্ভর করবে সরকারের সিদ্ধান্তের উপর। আপাতত ২৪০টি বেড তৈরি করা হয়েছে। আমরা চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়ার জন্য প্রস্তুত। ভেন্টিলেটরের ব্যবস্থাও রয়েছে"।
হাসপাতাল সূত্রে খবর, রোগীদের ৫ নং গেট দিয়ে হাসপাতালে প্রবেশ করানো হবে। সেখানেই উপস্থিত থাকবেন হাসপাতালের নিরাপত্তারক্ষীরা। হাসপালের সমস্ত কর্মীদের সদাতৎপর হয়ে পিপিই (পার্সেনাল প্রোটেক্টিভ ইকিউবমেন্ট) পরে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। একতলার ফিভার ক্লিনিকে প্রথমে নজরদারিতে রাখা হবে রোগীদের। পাঁচ, ছয় ও সাত তলায় রয়েছে আইসোলেশন ওয়ার্ড। ৯ ও ১০ তলায় করোনা আক্রান্তদের রাখা হবে বলে জানা যাচ্ছে। এখানে রোজ আট ঘন্টা করে কাজ করতে হবে ডাক্তার ও স্বাস্থ্যকর্মীদের। সাতদিন টানা কাজ করার পর ১৪ দিন কোরেন্টাইনে থাকবেন তাঁরা। এই ১৪ দিনে তাঁদের শরীরে কোনো উপসর্গ না দেখা গেলে ১৪ দিন পর ৭ দিনের ছুটি পাবেন। তবে রোগীর চাপ যদি বেশি থাকে, তবে এই নিয়ম বদল হতে পারে বলেও জানিয়েছে ডাক্তারদেরই একাংশ।
এদিকে, গত সপ্তাহের শনিবার থেকে চালু হওয়ার কথা শোনা গেলেও সরকারি ভাবে এখনও কোনো সবুজ সংকেত পায়নি কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ।
সুরক্ষার জন্য প্রত্যেককেই পিপিই দেওয়া হবে। দিন দুয়েক আগে পিপিই নিয়ে অভিযোগ করেছিলেন ডাক্তারদের একাংশ। তাঁদের অভিযোগ, হ্যাজম্যাট স্যুটের বদলে রেইন কোট দেওয়া হয়েছে। এরপর হাসপাতালের সুপার ইন্দ্রনীল বিশ্বাসকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি জানান, "স্বাস্থ্য দফতরের কাছে মেডিক্যাল কলেজে দেওয়া পোশাকের কোয়ালিটি ভালো করার জন্য অনুরোধ করেছি"।
উল্লেখ্য, পাঁচ নম্বর গেটের কাছে সুপার স্পেশ্যালিটি এই বিল্ডিংয়ে আইসোলেশন ওয়ার্ড তৈরি হয়েছে। পাঁচ নম্বর গেটের বাইরে যে হোস্টেল রয়েছে সেখানেই কোরেন্টাইনের ব্যবস্থা রয়েছে।