করোনার জেরে বন্ধ হলো কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের মেডিসিন ওয়ার্ড

করোনা সন্দেহে হাসপাতালে ভর্তি ৬২ বছরের এক প্রৌঢ়ার মৃত্যু হয় সোমবার রাতে। তিনি বরানগরের বাসিন্দা। মেডিক্যাল কলেজের সুপার স্পেশালিটি বিল্ডিংয়ের আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়েছিল তাঁকে।

করোনা সন্দেহে হাসপাতালে ভর্তি ৬২ বছরের এক প্রৌঢ়ার মৃত্যু হয় সোমবার রাতে। তিনি বরানগরের বাসিন্দা। মেডিক্যাল কলেজের সুপার স্পেশালিটি বিল্ডিংয়ের আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়েছিল তাঁকে।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
calcutta medical college coronavirus

কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের ডাক্তার নার্স স্বাস্থ্য কর্মী সহ ১৩ জনকে পাঠানো হলো কোয়ারান্টিনে। করোনা আক্রমণের জেরে রোগীর সংক্রমনের ভয়ে ভর্তি বন্ধ করা হয়েছে হাসপাতালের পুরুষ এবং মহিলাদের মেডিসিন ওয়ার্ড। এই ঘটনায় মঙ্গলবার জুনিয়র চিকিৎসকদের একাংশের মধ্যে ক্ষোভ দেখা যায়। তাঁদের দাবি, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আগাম কোনো সর্তকতা অবলম্বন না করায় এমনটা ঘটেছে। উল্লেখ্য, করোনার জেরে এর আগেই বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল মেডিক্যাল কলেজের ইডেন হাসপাতাল বিভাগ।

Advertisment

ঠিক কী ঘটেছে?

করোনা সন্দেহে হাসপাতালে ভর্তি ৬২ বছরের এক প্রৌঢ়ার মৃত্যু হয় সোমবার রাতে। তিনি বরানগরের বাসিন্দা। মেডিক্যাল কলেজের সুপার স্পেশালিটি বিল্ডিংয়ের আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়েছিল তাঁকে। ওই মহিলার কিডনির সমস্যা ছিল। মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি হওয়ার আগে কিডনির সমস্যা নিয়ে চিনার পার্কের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন ওই বৃদ্ধা।

Advertisment

এরপর করোনা সন্দেহে রবিবার মেডিকেল কলেজের জরুরি বিভাগে ভর্তি করা হয় তাঁকে। মেডিক্যাল কলেজের সুপার স্পেশালিটি বিল্ডিংয়ের আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি করার আগে রবিবার ওই রোগীকে মেডিসিন ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও কেন এমনটা করা হলো, তাই নিয়েই ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন জুনিয়র ডাক্তাররা।

কিছুদিন আগে হাওড়া জেলা হাসপাতালে সালকিয়ার বাসিন্দা এক মহিলা করোনা উপসর্গ নিয়ে ভর্তি হয়েছিলেন। তাঁর মৃত্যুর পর জানা যায় যে তিনি করোনা আক্রান্ত ছিলেন। প্রথমে মহিলাদের সাধারণ ওয়ার্ডের বেডে রেখেই চিকিৎসা করা হয়েছিল। পরে তাঁকে সিসিইউ-তে স্থানান্তরিত করা হয়েছিল। ফলে হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মীর একাংশের মধ্যে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা তৈরি হয় এবং প্রায় ৩০ জনকে ডুমুরজলায় কোয়ারেন্টাইনে পাঠাতে হয়। যে ওয়ার্ডে ওই রোগী ছিলেন সেখানে ও তার সঙ্গে সিসিইউ এবং লাগোয়া এলাকায় পরে ভালোভাবে জীবাণুমুক্ত করা হয়।

তার পরই করোনা আক্রান্ত হন খোদ জেলা হাসপাতালের সুপার ডাঃ নারায়ণ চট্টোপাধ্যায়। সর্দি, কাশি, জ্বর ইত্যাদি করোনা সংক্রমণের যাবতীয় উপসর্গ নিয়ে তিনি ভর্তি রয়েছেন কলকাতার এম আর বাঙুর হাসপাতালে। এই ঘটনায় রীতিমত আশঙ্কিত জেলা প্রশাসন এবং স্বাস্থ্য মহল।

করোনা আক্রান্ত অন্যান্য হাসপাতালও

এছাড়াও করোনা সংক্রমণের খবর এসেছে পার্ক সার্কাসের এসএস চ্যাটার্জি হার্ট ক্লিনিক থেকে, যেখানে একজন রোগীর দেহে করোনার জীবাণু পাওয়ার পর সোমবার বন্ধ করে দেওয়া হয় এই বেসরকারি নার্সিং হোম। রবিবার বন্ধ করে দেওয়া হয় বেসরকারি চার্নক হাসপাতালও, যেখানে পাঁচজন ডায়ালিসিসের রোগীর দেহে মেলে করোনার জীবাণু।

কলকাতার নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল, আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল এবং কলকাতা মেডিক্যাল কলেজেও করোনা পজিটিভ রোগীর সন্ধান পাওয়ায় কোয়ারেন্টিনে পাঠাতে হয়েছে বড় সংখ্যক কর্মী এবং রোগীদের।

রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকরা জানাচ্ছেন, হাসপাতালগুলিকে করোনা সংক্রমণের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত সুরক্ষা দেওয়ার কথা ভাবছেন তাঁরা। এক শীর্ষ আধিকারিকের কথায়, "খুবই চিন্তার বিষয়। এমনিতেই রাজ্যে ডাক্তার-নার্সের সংখ্যা প্রয়োজনের তুলনায় কম। এই পরিস্থিতি চলতে থাকলে করোনা রোগী এবং অন্যান্য রোগীদেরও যথাযথ চিকিৎসা করা কঠিন হয়ে পড়বে।

coronavirus