গড়ফা থানায় পুলিশকর্মীদের ভাংচুর, ফের অভ্যন্তরীণ বিদ্রোহের ইঙ্গিত

আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু রোডের পুলিশ ট্রেনিং স্কুল (পিটিএস) চত্বরের পর এবার দক্ষিণ কলকাতার গড়ফা থানা। এবারের বিক্ষোভের কেন্দ্রে ৪৬ বছর বয়সী এক পুলিশ কনস্টেবলের সম্ভাব্য করোনা সংক্রমণ ও মৃত্যু

আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু রোডের পুলিশ ট্রেনিং স্কুল (পিটিএস) চত্বরের পর এবার দক্ষিণ কলকাতার গড়ফা থানা। এবারের বিক্ষোভের কেন্দ্রে ৪৬ বছর বয়সী এক পুলিশ কনস্টেবলের সম্ভাব্য করোনা সংক্রমণ ও মৃত্যু

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
garfa police station agitation

গড়ফা থানা, ফাইল ছবি

সাতদিনের মধ্যে নজিরবিহীন ভাবে দ্বিতীয়বার অভ্যন্তরীণ বিদ্রোহের আগুন জ্বলে উঠল কলকাতা পুলিশের অন্দরমহলে। আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু রোডের পুলিশ ট্রেনিং স্কুল (পিটিএস) চত্বরের পর এবার দক্ষিণ কলকাতার গড়ফা থানা। এবারের বিক্ষোভের কেন্দ্রে ৪৬ বছর বয়সী এক পুলিশ কনস্টেবলের সম্ভাব্য করোনা সংক্রমণ ও মৃত্যু ঘিরে আতঙ্ক, এবং তা থেকে উৎপন্ন অভিযোগ। ওই কনস্টেবল থানার ব্যারাকেই থাকতেন বলে জানা গিয়েছে।

Advertisment

পুলিশ সূত্রের খবর, গড়ফা থানায় কর্মরত এক আধিকারিক এর আগে করোনায় আক্রান্ত হন। ফলত তাঁর সংস্পর্শে আসা আরও চারজন কর্মীকে হাওড়ার ডুমুরজলা স্টেডিয়ামের কোয়ারান্টিন কেন্দ্রে রাখা হয়। সেখানে তাঁদের সকলের করোনা পরীক্ষাও করানো হয়, এবং সকলেরই ফলাফল নেগেটিভ হয়। তবে রবিবার ওই কনস্টেবলের তীব্র শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়, যার পর তাঁকে যথাসম্ভব দ্রুত স্থানান্তরিত করা হয় এমআর বাঙ্গুর হাসপাতালে। সেখানেই সোমবার সকালে তাঁর মৃত্যু হয় বলে খবর।

আরও পড়ুন: কলকাতা পুলিশের কমব্যাট বাহিনীতে বিক্ষোভের জের, পরিদর্শনে মমতা

মৃত্যুর খবর ছড়াতেই গড়ফা থানার কর্মীরা ক্ষোভে ফেটে পড়েন। তাঁদের রোষের মুখে পড়েন থানার ওসি সত্যপ্রকাশ উপাধ্যায় এবং অতিরিক্ত ওসি তপন নাথ। বিক্ষোভের জেরে কর্মীদের একাংশ থানায় ভাংচুর চালান বলেও খবর। কর্মীদের মূল অভিযোগ, মৃত কনস্টেবলের চিকিৎসায় গাফিলতি ছিল, এবং তাঁকে আরও আগেই হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা উচিত ছিল। পাশাপাশি এই অভিযোগও উঠেছে যে, পুলিশের উচ্চপদস্থ কর্তাদের বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসার ব্যবস্থা থাকলেও অধস্তন কর্মীদের ক্ষেত্রে সেরকম কোনও বন্দোবস্ত নেই।

Advertisment

গত ১৯ মে গভীর রাতে পুলিশ ট্রেনিং স্কুল চত্বরেও ঊর্ধ্বতন আধিকারিকদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে সোচ্চার হন কলকাতা পুলিশের কমব্যাট বাহিনীর জওয়ানরা। গড়ফা থানার কর্মীদের মতোই ওই জওয়ানরা অভিযোগ করেন, করোনা পরিস্থিতির মোকাবিলায় অতিরিক্ত সময় ধরে ডিউটি করছেন তাঁরা, তাঁদের ছুটিও বাতিল করা হয়েছে, অথচ তাঁদের সুরক্ষা বা চিকিৎসার কোনোরকম গ্যারান্টি দিচ্ছেন না ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ। বিক্ষোভের জেরে সামান্য আঘাত পান ডিসি (কমব্যাট) নভেন্দর সিং পল এবং তাঁর দেহরক্ষী। পরিস্থিতি এমন জায়গায় পৌঁছয় যে ২০ মে সকালে তড়িঘড়ি পুলিশ ট্রেনিং স্কুলে ছুটে যান মুখ্যমন্ত্রী তথা পুলিশ মন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্বয়ং, সঙ্গে নগরপাল অনুজ শর্মা।

উল্লেখ্য, করোনাই শুধু নয়, বুধবারের বিধ্বংসী আমফান ঘূর্ণিঝড়ের পর থেকেও ক্রমাগত শহরকে ছন্দে ফেরানোর কাজে অংশগ্রহণ করেছেন কলকাতা পুলিশের কর্মীরা।

পিটিএস-এর মতোই গড়ফা থানাতেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ঘটনাস্থলে পৌঁছন ঊর্ধ্বতন পুলিশ আধিকারিকরা। পৌঁছে যান সংশ্লিষ্ট ডিসি প্রদীপকুমার যাদবও। সূত্রের খবর, তিনি সমস্ত অভিযোগ শীর্ষ কর্তাদের জানানোর প্রতিশ্রুতি দিলে কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসে পরিস্থিতি। এদিনের বিক্ষোভ প্রসঙ্গে কলকাতা পুলিশের এক শীর্ষ কর্তা বলেন, ওই কনস্টেবলের ডেথ সার্টিফিকেট হাতে না এলে মৃত্যুর কারণ স্পষ্ট করে বলা যাচ্ছে না।

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন