সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন এবং নাগরিকপঞ্জির প্রতিবাদে ১৯ ডিসেম্বর শহরের রাজপথে মিছিলের ডাক দিল কলকাতার বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ পড়ুয়ারা। জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের প্রতি সংহতি জানিয়ে এবার কলকাতায় প্রতিবাদে শামিল হচ্ছে একের পর এক ক্যাম্পাস। ১৯ তারিখ এই দুই ইস্যুর বিরোধিতায় কলকাতায় পথে নামার ডাক উঠেছিল প্রথম সোশাল মিডিয়ায়। এরপর সিপিএম-সহ একাধিক বামপন্থী দলও ওই দিনই সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন এবং নাগরিকপঞ্জির প্রতিবাদে পথে নামবে বলে মনস্থ করে। শহরের বিভিন্ন বিশ্বিদ্যালয়ের ছাত্ররাও পৃথক মিছিল করে পরে মূল মিছিলের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের এসএফআই সমর্থক দেবনীল পাল ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা-কে জানিয়েছেন, 'আমরা পড়ুয়াদের নিয়ে বড় আন্দোলনের ডাক দিতে চলেছি। যেখানে শহরের সমস্ত পড়ুয়া শিক্ষক, কর্মচারী, বুদ্ধিজীবিদের, অংশগ্রহণের জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে। ১৯ ডিসেম্বর সারা রাজ্যে গণ কনভেনশনের ডাক দিয়েছে বামফ্রণ্ট, শিক্ষা জগতের সমস্ত অংশকে এদিন শামিল হওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। শিক্ষকরা পাশে থাকলে লক্ষ্যে পৌঁছানো সম্ভব হয়। কোনো রকম বিভেদ রাখতে চাই না এই আন্দোলনে। তাই ১৯ ডিসেম্বর প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সমস্ত স্তরের মানুষকে নিয়ে মিছিল করে দুপুর দুটো নাগাদ মৌলালি রামলীলা ময়দানে আমরা যোগ দিতে যাচ্ছি"।
সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে রাস্তায় নামছে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারাও। বিশ্ববিদ্যালয়ের এসএফআই ছাত্র সংগঠনের সদস্য দেবরাজ দেবনাথ বলেন, "ভারতের ছাত্র ফেডারেশনের ডাকে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীরা ১৯ ডিসেম্বর শামিল হবে মৌলালির রামলীলা ময়দানে"। অন্যদিকে, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা ২০ ডিসেম্বর কলেজস্ট্রিট থেকে ধর্মতলা পর্যন্ত মিছিল করবে। সেখানেও অংশগ্রহণ করবে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা।
জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের সমর্থনে দাঁড়াচ্ছে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের পড়ুয়ারাও। রবিবার রাতে উপাচার্যের অনুমতি ছাড়া জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে কী করে স্রেফ গায়ের জোরে বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকে পড়ল পুলিশ? এটা নিয়ে তদন্ত হতেই হবে বলে দাবি জানিয়েছেন মেডিক্যাল কলেজের পড়ুয়ারা। ইতিমধ্যে সোমবার থেকে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের ক্যাম্পাসে পোস্টারিং ও দেওয়াল লিখন শুরু হয়েছে। আগামী ১৯ ডিসেম্বর এনআরসি-র প্রতিবাদ মিছিলে যোগদান করবে জুনিয়র ডাক্তাদের একাংশ। অন্যদিকে কল্যানী মেডিক্যাল কলেজের পড়ুয়ারাও ২০ ডিসেম্বর কল্যানী শহরে প্রতিবাদ জানাবে।
উল্লেখ্য, বিবৃতি জারি করে বামেরা জানিয়েছে, ভারত ধর্মনিরপেক্ষ, সেই অবস্থানকেই শেষ করে দিচ্ছে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল। ধর্মীয় বিভেদ তৈরি করতেই আনা হয়েছে বিলটি। জাতীয় নাগরিক পঞ্জি এবং সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন-এর মাধ্যমে ধর্মনিরপেক্ষ ভারতকে হিন্দু রাষ্ট্রে পরিণত করার চেষ্টা করছে বিজেপি সরকার।