করোনা নিয়ে এমনিতেই মানুষের ভয় পিছু ছাড়ছে না। তার ওপর আবার ওমিক্রনের চিন্তা! নাজেহাল বিশ্ববাসী। ওমিক্রনের ভ্যারিয়েন্ট কেসগুলি বেশীরভাগই ইউরোপীয় দেশগুলিতে দেখা যাচ্ছে। তার সঙ্গে পাল্লা দিচ্ছে অন্যান্য দেশগুলিতেও। ভারতেও থাবা বসিয়েছে ওমিক্রন। কেন্দ্রের পাশাপাশি রাজ্যেও বাড়তি সতর্কতা থাকছে। ওমিক্রন আতঙ্কে বেশ কিছু নয়া নিয়ম চালু হয়েছে দমদম বিমানবন্দরে। এ বিষয়ে বিমানবন্দর সূত্রে পাওয়া খবর অনুসারে, ‘সরকারি নির্দেশ মেনেই জোর কদমে চলছে করোনা পরীক্ষা। বিমানবন্দর সূত্রে খবর, ইতিমধ্যেই বিদেশ ফেরত বেশ কয়েকজনের দেহে মিলেছে মারণ ভাইরাস, তাদের বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ওমিক্রন নিয়ে বিমানবন্দরে কী কী গাইডলাইন রয়েছে তা একনজরে দেখে নেওয়া যাক।
কলকাতা বিমানবন্দর সূত্রে খবর, ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলি থেকে আগত সমস্ত যাত্রীদের বিমানবন্দরেই RT-PCR পরীক্ষা করানো বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত বিমানবন্দরেই দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হবে যাত্রীদের। তাও বিমানবন্দরের সর্বত্র প্রবেশ করা যাবে না। ওই যাত্রীদের অপেক্ষার তার জন্য একটি নির্দিষ্ট স্থান তৈরি রাখা হয়েছে। রিপোর্ট নেগেটিভ হলে বিমানবন্দর থেকে ছাড় মিললেও সাতদিনের হোম কিংবা ইনস্টিটিউশনাল কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে। ৭ দিন পর ফের করোনা পরীক্ষা করা হবে। আর রিপোর্ট পজিটিভ এলে বিমানবন্দর থেকেই সরাসরি আইডি হাসপাতালের আইসোলেশন সেন্টারে বিশেষ পর্যবেক্ষণে পাঠানো হবে।
যে সমস্ত দেশে ওমিক্রনের ভ্যারিয়েন্ট রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে সেই সমস্ত দেশ থেকে আগত যাত্রীদের বিমানবন্দরে কোভিড পরীক্ষা করাতে হবে। নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, ভ্যাকসিনের ডবল ডোজ নেওয়া থাকলেও করোনা পরীক্ষা বাধ্যতামূলক। বিমান ধরার ৭২ ঘণ্টা আগে কোভিড পরীক্ষা করতে হবে।
যদি বিমান বন্দরে কোনও যাত্রীর করোনা রিপোর্ট কোভিড পজিটিভ আসে তাহলে সেই যাত্রীকে আলাদা রাখা হবে। জেনোম সিকোয়েন্সের জন্যও অন্যান্য পরীক্ষা করা হবে। যেসব যাত্রীদের রিপোর্ট নেগেটিভ হবে সেই সমস্ত যাত্রীদের বিমানবন্দরে যেতে দেওয়া হবে। তবে, তাদের ৭ দিন আইসোলেশনে রাখা হবে। ভারতে আসার পর ৮ দিনে আরও একবার কোভিড পরীক্ষা করাতে হবে'।
পাশাপাশি, নির্দেশিকায় আরও বলা হয়েছে, 'যে দেশগুলি ওমিক্রনের জন্য বেশি ঝুঁকিপূর্ণ নয়, সেই দেশগুলি থেকে যে সকল যাত্রী আসবেন, সেই সমস্ত যাত্রীদের মধ্য থেকে ৫% যাত্রীর করোনা পরীক্ষা করা হবে ৷ ইতিমধ্যেই কলকাতা বিমানবন্দর সূত্রে খবর, সকল প্রকার নিয়ম মেনে চলছে যাতায়াত, পাশাপাশি চলছে সচেতনতামূলক প্রচার। বিনা মাস্কে কোন ভাবেই কোন যাত্রীকে বিমান বন্দর চত্বরে প্রবেশে জারী করা রয়েছে নিষেধাজ্ঞা।
এবিষয়ে কলকাতা বিমানবন্দরের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, ‘পৃথিবীর নানা প্রান্তে করোনা ভাইরাসের নতুন প্রজাতির সন্ধান মিলেছে। তারই প্রেক্ষিতে ভারত সরকার একটি নতুন নির্দেশিকা জারি করেছে। আমরা এই নতুন নির্দেশিকার গুরুত্ব বুঝে কাজ করার চেষ্টা করছি। ইতিমধ্যেই আমরা প্রয়োজনীয় সমস্ত ব্যবস্থা করে ফেলেছি, যাতে নির্দেশিকা অনুযায়ী যাত্রীদের পরিষেবা দেওয়া যায়'।
তার কথায়, 'এর আগেও এমন ব্যবস্থা করা হয়েছিল বিমান বন্দরের তরফে। ফলে পূর্ব অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে এ বার কাজ আরও সহজ হবে বলেই দাবি করেছেন ওই মুখপাত্র। পাশাপাশি তিনি আশ্বস্ত করেছেন, বিমানবন্দরের ভেতরে সমস্ত যাত্রী যাতে কোভিড বিধি মেনে চলেন সে বিষয়ে তাঁরা নজরদারি চালানো হচ্ছে নিয়মিত। সেই সঙ্গে তিনি জানান, কলকাতা বিমানবন্দরে আন্তর্জাতিক যাত্রীদের কোভিড টেস্টের জন্যে কাউন্টারের সংখ্যা বাড়িয়ে ১০টি করা হয়েছে'।
এদিকে উদ্বেগ বাড়িয়ে ভারতে ওমিক্রন আক্রান্তের সংখ্যা ৮০০ ছুঁইছুঁই। সবচেয়ে বেশি রাজধানী দিল্লিতে। বুধবার কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের বুলেটিন অনুযায়ী, দেশের দৈনিক করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৯১৯৫। গতকালের থেকে প্রায় ৩ হাজার বেশি। দেশের সক্রিয় রোগীর সংখ্যা বেড়ে হল ৭৭,০০২।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন