/indian-express-bangla/media/post_attachments/wp-content/uploads/2019/08/road_safety1.jpg)
পথ নিরাপত্তার বার্তাবাহী বিশেষ ট্যাবলো
চলতি মাসেই রাতের কলকাতায় ঘটে গিয়েছে ভয়াবহ পথ দুর্ঘটনা। স্পিড লিমিটের চেয়ে অনেক বেশি গতিতে চালানো একটি জাগুয়ার গাড়ি কেড়ে নিয়েছে দুটি প্রাণ। গাড়ির স্টিয়ারিং ছিল বিখ্যাত রেস্তরাঁ গোষ্ঠী আরসালানের মালিকের বড় ছেলে রাঘিব পারভেজের হাতে। এখনও কাটে নি সেই ঘটনার রেশ। এই প্রেক্ষিতেই আজ, সোমবার থেকে শুরু হলো 'সেফ ড্রাইভ সেভ লাইফ' কর্মসূচির অঙ্গ হিসেবে কলকাতা ট্র্যাফিক পুলিশ আয়োজিত 'পথ নিরাপত্তা সপ্তাহ'। পুলিশ ট্রেনিং স্কুলে কর্মসূচির উদ্বোধন করলেন কলকাতার নগরপাল অনুজ শর্মা।
অন্যান্য বারের মতোই এবারও পথ নিরাপত্তা সম্পর্কে সচেতনতা বাড়ানোই এই অভিযানের মূল উদ্দেশ্য বলে ধরে নেওয়া যায়। যদিও সারা বছর ধরেই শহরের বিভিন্ন ট্র্যাফিক গার্ডের অধীনে চলতে থাকে পথ-সচেতনতা সংক্রান্ত নানা ধরনের পরিকল্পনা। এবারের 'পথ নিরাপত্তা সপ্তাহের' কেন্দ্রে রয়েছে দুটি পথ-সচেতনতার বার্তাবাহী ট্যাবলো, যা আগামী এক সপ্তাহ ধরে শহর পরিক্রমা করবে।
/indian-express-bangla/media/post_attachments/wp-content/uploads/2019/08/road_safety2.jpg)
আরও পড়ুন: হর্ন বাজিয়ে ফাইন দিলেন ৩০০০ জনেরও বেশি
সাম্প্রতিক কালে কলকাতা ট্র্যাফিক পুলিশ শহরে পথ নিরাপত্তা বাড়ানোর বেশ কিছু উদ্যোগ নিয়েছে। এগুলির মধ্যে প্রধান হলো অতিরিক্ত এবং অকারন হর্ন দেওয়ার প্রবণতা রুখতে জরিমানার ব্যবস্থা। গত ২১ অগাস্ট 'নো হঙ্কিং' অভিযানের সূচনা হয়। এই অভিযানের আওতায় কোনও গাড়ির চালক অতিরিক্ত হর্ন বাজালে তাঁর ১০০ টাকা জরিমানা হবে। মূলত শহরের শব্দ দূষণ রোধ করতেই এই প্রয়াস, যার জেরে প্রকল্পটি চালু হওয়ার প্রথম চারদিনেই জরিমানা ভরতে হয় ৩,১৫০ জন গাড়ি চালককে।
কলকাতা ট্র্যাফিক পুলিশের ডেপুটি কমিশনার সন্তোষ পাণ্ডে জানিয়েছিলেন, "২১ অগাস্ট অকারণে হর্ন বাজানোর জন্য প্রচারের প্রথম দিনেই ৯৫৫ জন চালককে জরিমানা করা হয়েছে।" শহরের প্রায় ৭০০ টি নির্দিষ্ট স্থানে হর্ন বাজানোর বিরুদ্ধে ফ্লেক্স বসানো হয়েছে। যেসব গাড়ির চালক অতিরিক্ত হর্ন দিচ্ছেন, সেই গাড়িগুলিকে চিহ্নিত করে রাখার জন্য স্টিকারও সেঁটে দেওয়া হচ্ছে।
এছাড়াও রাতের কলকাতায় আজ বেশ কিছুদিন যাবত চলছে 'নাকা চেকিং', যার মাধ্যমে স্পিড লিমিটের ওপর গাড়ি চালানো, বিনা হেলমেটে বাইক চালানো, নেশাগ্রস্ত অবস্থায় বেপরোয়া গাড়ি চালানো ইত্যাদি রোধ করতে উদ্যোগী হয়েছে কলকাতা ট্র্যাফিক পুলিশ। জাগুয়ার কাণ্ডের পর এই কর্মসূচি আরও জোরদার হয়ে উঠেছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর।
আরও পড়ুন: নগরপালের নয়া ভাবনায় নাগরিক-মনোরঞ্জনে এবার কলকাতা পুলিশ ব্যান্ড
গত মাসে ‘সেফ ড্রাইভ, সেভ লাইফ’ প্রকল্পের তৃতীয় বর্ষপূর্তি অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করেন, “আমাদের ‘সেফ ড্রাইভ সেভ লাইফ’ প্রচারাভিযান বাংলায় সড়ক দুর্ঘটনার সংখ্যা হ্রাসে কার্যকরী এবং সফল ভূমিকা পালন করেছে। কলকাতার দুর্ঘটনার সংখ্যা কমেছে প্রায় ৩৫ শতাংশ, এবং দুর্ঘটনায় মৃত্যুর সংখ্যাও কমেছে ২৭ শতাংশ। ২০১৬-তে পথ দুর্ঘটনায় মৃতের সংখ্যা ছিল ৪০৭, ২০১৮ সালে সেই সংখ্যা কমে হয়েছে ২৯৪। এমনকি আহতের সংখ্যাও কমেছে ৩২ শতাংশ।"
এবারের 'পথ নিরাপত্তা সপ্তাহ' অনুষ্ঠানের সূচনায় আরও একটি উল্লেখযোগ্য সংযোজন, ২৫ জন বাইক আরোহীর অংশগ্রহণ, যাঁদের বিরুদ্ধে সাম্প্রতিক অতীতে মামলা রুজু হয়েছে পথের নিয়ম ভাঙার দায়ে, এবং যাঁরা ফের কখনও নিয়ম না ভাঙার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। এর আগে জুলাই মাসে আদালতের এক অভিনব নির্দেশে ট্র্যাফিকের দায়িত্ব সামলানোর ভারও তুলে দেওয়া হয়েছিল এমন কিছু নাগরিকের হাতে, যাঁরা মদ্যপ অবস্থায় বেপরোয়াভাবে গাড়ি চালানো, হেলমেটবিহীন বাইক চালানো এবং অন্যান্য ট্র্যাফিক বিধি ভঙ্গের অভিযোগে অভিযুক্ত। এই ট্র্যাফিক নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি ছিল তাঁদের কাউন্সেলিং-এর অঙ্গ।