কলকাতার ওয়াটগঞ্জ এলাকা থেকে মঙ্গলবার রাতে আধার কার্ড সংশোধনের নাম করে জাতীয় জনগণনা পঞ্জির (ন্যাশনাল পপুলেশন রেজিস্টার বা এনপিআর) ফর্ম বিতরণ করার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে দুই ব্যক্তিকে। এই ঘটনার পর থেকে শহরে আধার কার্ড সংশোধনী প্রক্রিয়া আপাতত স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কলকাতা পুরসভা।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ওয়াটগঞ্জ এলাকার বাসিন্দারা তাঁদের আধার কার্ড সংগ্রহ করতে একটি ব্যাঙ্কের বাইরে লাইন দিয়েছিলেন। তখনই কেউ কেউ অভিযোগ করেন যে প্রক্রিয়ার দায়িত্বে থাকা দুজন ব্যক্তি তাঁদের হাতে এনপিআর ফর্ম ধরিয়ে দিয়েছেন। এর ফলে শোরগোল পড়ে যায়, এবং পুলিশে খবর দেন স্থানীয়রা।
কলকাতা পুলিশের এক শীর্ষ কর্তার কথায়, "যেহেতু রাজ্য সরকার পশ্চিমবঙ্গে এনপিআর প্রক্রিয়া স্থগিত রেখেছে, ওই দুজনের কার্যকলাপ দেখে মানুষের সন্দেহ হয়। পরে আমরা স্থানীয়দের অভিযোগের ভিত্তিতে ওই দুই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করি।"
রাজ্যের নগরোন্নয়ন মন্ত্রী তথা কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম মঙ্গলবার রাতে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে উত্তেজিত জনতাকে শান্ত করেন। বুধবার সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে হাকিম জানান, ওই ফর্ম কেন বিতরণ করা হচ্ছিল, তা ব্যাঙ্কের কাছ থেকে না জানা পর্যন্ত শহরে আধার কার্ড সংশোধনের প্রক্রিয়া বন্ধ রাখবে কলকাতা পুরসভা। "গতকাল আধার কার্ড সংশোধন, এবং নতুন কার্ড জারি করার কাজ চলছিল। অনেকেই জড়ো হয়েছিলেন কার্ড সংগ্রহ করতে। আচমকাই কেউ কেউ লক্ষ্য করেন যে আধার সংশোধনী ফর্মে এনপিআর-এর উল্লেখ রয়েছে। যেখানে রাজ্য সরকার এনপিআর প্রক্রিয়া স্থগিত করেছে, এবং এই মর্মে সরকারি বিজ্ঞপ্তিও জারি করা হয়েছে, সেখানে এনপিআর ফর্ম কীভাবে বিতরণ করা হলো? এ নিয়ে অবশ্যই আমাদের মনে প্রশ্ন জেগেছে। সুতরাং আমরা সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্কের কাছ থেকে স্পষ্টভাবে কিছু না জানা পর্যন্ত সাময়িকভাবে আধার কার্ড সংশোধনী প্রক্রিয়া বন্ধ রাখছি।"
এই সিদ্ধান্তের কড়া সমালোচনা করেছে বিজেপি। দলীয় নেতা শমীক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "একটা পুরসভা মানুষের ওপর একতরফা সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দিচ্ছে। পশ্চিমবঙ্গ কোনো আলাদা দেশ নয় যে পান থেকে চুন খসলেই এই ধরনের সিদ্ধান্ত নিতে পারে। আমরা এই পদক্ষেপকে তীব্র ধিক্কার জানাই।"
Read the story in English