ব্ল্যাকমেল করে এক মহিলার কাছ থেকে ১০ লক্ষ টাকা চাওয়ার অভিযোগের ভিত্তিতে আদিত্য আগরওয়াল ও অনীশ লোহরুকা নামের শহরের দুই নামী ব্যবসায়ী পরিবারের সদস্য সহ আরও একজনকে গ্রেফতার করেছে কলকাতা পুলিশ। তৃতীয় ব্যক্তির নাম কৈলাশ যাদব, সে লোহারুকার মালিকানাধীন এক হোটেলে রাঁধুনি। ধৃতদের আগামী ৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতে রাখা হবে।
পুলিশ জানিয়েছে, আগরওয়াল এবং লোহারুকা মহিলাদের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তুলত, এবং তাদের সঙ্গে বিচ্ছেদের আগে অন্তরঙ্গ মুহুর্তের ছবি এবং ভিডিও তুলে রাখত। দুই ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ১৮২ টি আপত্তিজনক ভিডিও ক্লিপ এবং ছবি পাওয়া গিয়েছে, যেগুলি জনসমক্ষে প্রচার করার হুমকি দিয়ে মহিলাদের কাছে থেকে মোটা অঙ্কের টাকা আদায় করত তারা।
পুলিশ জানিয়েছে, প্রথমে নিছক মজা করার জন্য ছবি এবং ভিডিও তুলত এই দুজন। তবে পরে তারা বুঝতে পারে যে এই পদ্ধতিতে মহিলাদের থেকে টাকা আদায় করা যায়। এরপর তারা যাদবকে দিয়ে ফোন করানো এবং টাকা সংগ্রহের কাজ করাত। তদন্তকারীরা জিজ্ঞাসাবাদ চালাচ্ছেন। ঠিক কতজন মহিলাকে ভয় দেখিয়ে টাকা আদায় করেছে অভিযুক্তরা, সে বিষয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে।
আগরওয়াল পরিবারের দেশব্যাপী পোশাকের ব্যবসা রয়েছে। অন্যদিকে রয়েছে শহর জুড়ে লোহারুকা পরিবারের হোটেল ব্যবসা।
কলকাতা পুলিশের এক কর্মকর্তা বলেন, “দু'জনই মহিলাদের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করে এবং তাঁদের সঙ্গে অন্তরঙ্গ যৌন মুহুর্ত রেকর্ড করে। মূলত ১৮ থেকে ৩০ বছর বয়সী মহিলাদের সঙ্গেই সম্পর্ক গড়ত তারা। ব্ল্যাকমেলের টাকা হিসেবে ২ থেকে ১০ লক্ষ পর্যন্ত দাবি করত তারা।"
তিনি আরও জানান, "দুই প্রধান অভিযুক্তকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা গেছে যে তারা বিভিন্ন মহিলার সঙ্গে বন্ধুত্ব করে তাঁদের বিভিন্ন জায়গায় ডাকত, যেখানে আগে থেকেই বসানো থাকত অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ভিডিও তোলার জন্য লুকোনো ক্যামেরা। এইসব ভিডিওর ডেটা ব্যাঙ্ক তৈরি করে বছরখানেক আগে ব্ল্যাকমেলের ব্যবসা শুরু করে তারা।"
পুলিশ জানিয়েছে যে লোহারুকার ল্যাপটপের একটি ফাইল ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে, যেটিতে ২০১৩ সাল থেকে শুরু করে বর্তমান সময় পর্যন্ত ভিডিও ক্লিপিংয়ের ফোল্ডার রয়েছে। যে মহিলা অবশেষে পুলিশের কাছে অভিযোগ করেন, তাঁর কাছে প্রথমে পাঁচ লক্ষ টাকা চায় কৈলাশ যাদব। তিনি সে টাকা দিয়েও দেন, কিন্তু এরপর তাঁর কাছ থেকে ১০ লক্ষ টাকা আদায় করার জন্য চাপ দেয় অভিযুক্তরা। এর ফলে পুলিশের সাইবার অপরাধ বিভাগে অভিযোগ জানান ওই মহিলা।