খাস কলকাতার বুকে নৃশংস হত্যাকাণ্ড। বাবাকে জ্যান্ত পুড়িয়ে মারল মেয়ে। শিউরে ওঠার মতো ঘটনা ঘটেছে গত শনিবার। কলকাতার উত্তর বন্দর থানা সংলগ্ন এলাকার চাঁদপাল ঘাটের কাছে ওই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের কথা পুলিশি জেরায় স্বীকার করেছে ধৃত পিয়ালি আঢ্য। মৃতের ভাইয়ের অভিযোগের ভিত্তিতে রবিবার তাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের নাম বিশ্বনাথ আঢ্য (৫৬)। বাড়ি এন্টালির ক্রিস্টোফার রোডে। ধৃত পিয়ালিকে সোমবার ব্যাঙ্কশাল আদালতে তোলা হলে বিচারক তাকে ২৯ মার্চ পর্যন্ত পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। পুলিশ জানিয়েছে, রবিবার ভোরে চাঁদপাল ঘাটের জেটির কাছে একটি পার্কের মধ্যে অগ্নিদগ্ধ দেহ উদ্ধার হয়। দেহটি এমন ভাবে পুড়ে গিয়েছিল যে শনাক্ত করা যাচ্ছিল না।
পুলিশের এক তদন্তকারী অফিসার জানান, এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখলে সেখানে গায়ে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার ছবি পাওয়া যায়। কিন্তু পরিষ্কার করে বোঝা যাচ্ছিল না যে, কে আগুন লাগিয়ে দিচ্ছে। এরপরেই পোড়া দেহ তল্লাশি করে একটি ব্যাগ উদ্ধার হয়। তাতে একটি চিরকূট থেকে মৃতের ঠিকানা পাওয়া যায়। সেই ঠিকানায় যোগাযোগ করলে মৃতের পরিচয় জানা যায়। এরপর মৃতের ভাই ও মেয়েকে থানায় এনে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ।
টানা পুলিশি জেরায় জেরায় ভেঙে পড়ে পিয়ালি দাবি করে, বাবাকে খুন করেছে সে নিজেই। পুলিশের অনুমান, পরিকল্পনা করে ওই খুন করা হয়েছে। ধৃত জানিয়েছে, শনিবার বিকেলে বাবাকে ঘুরিয়ে আনার নাম করে গঙ্গার ঘাটে নিয়ে যায় সে। সেখানেই রাতের খাবার খাওয়ার কথা ছিল দু’জনের। ওই রাতে বিশ্বনাথবাবু মদ্যপ অবস্থায় ছিলেন। সেই সুযোগে পার্কের মধ্যে বাবার শরীরে কেরোসিন ছিটিয়ে দেয় পিয়ালি। তারপর নিজের ওড়নায় আগুন লাগিয়ে বাবার গায়ে ছুঁড়ে দেয়।
জেরায় পুলিশকে পিয়ালি জানিয়ছে, তার উপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতেন বাবা। মারধরও করতেন। তবে পিয়ালির কথা আদৌ সত্যি কি না তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। বিয়ের একবছর পর বাপের বাড়িতে চলে আসে পিয়ালি। আত্মীয়স্বজনদের সঙ্গে খুব একটা সম্পর্ক ভাল ছিল না পিয়ালিদের। তাই বাবার খুনের ঘটনা চেপে গিয়েছিল সে।