দিন বদলেছে। সময় এগিয়েছে, আজকাল অনেকেই আছেন ভবিষ্যৎ এবং গ্রহ-নক্ষত্র বিশ্বাস করেন আবার অনেকেই আছে বিশ্বাস করেন না। বেশিরভাগ মানুষ, নিজেদের মঙ্গল কামনায় ছুটে যান বড় বড় জ্যোতিষীদের কাছে। তবে বহু পুরনো সময় থেকেই রাস্তার ধারে বসে, নিজেদের জীবিকা নির্বাহ করেন অনেকেই। মানুষের হাত দেখেন, তাদের ভবিষ্যৎ সম্পর্কে নিশ্চিত ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করেন।
বর্তমানে টিয়াপাখি জ্যোতিষীদের সংখ্যা অনেকটা কমেছে। আগে শহরের অলিতে-গলিতে নানান পর্যটনের স্থানে এঁদের দেখা গেলেও এখন সেই সংখ্যা নামমাত্র। ময়দান মেট্রো স্টেশনে নেমেই দেখা পাওয়া গেল পাণ্ডেজির। সঙ্গে হাতেগোনা কয়েকটা সামগ্রী, আর শিব-পার্বতীর একটি ছবি। এই পেশার সঙ্গে যুক্ত কম করে ১২ বছর। বললেন, “পুজোর মাধ্যমেই বলুন কিংবা ভগবানের আরাধনা তাতেই কিন্তু মোক্ষলাভ সম্ভব। ভগবানের উপরে আর কিছুই নেই। আর তার থেকেও বড় বিষয় হল মানুষের বিশ্বাসই বড় কথা। যাঁরা আমাকে বিশ্বাস করেন তাঁরা এখানে আসেন। তাঁদেরকেও আমি ঈশ্বরের আরাধনা করতে বলি।”

কোন ভগবানের উপর সবথেকে আস্থা রয়েছে আপনার? বললেন, “শিবের উপাসনা করতে বলি, হনুমানজির পুজো করতে বলি। শক্তির আরাধনা, সংকটকে দূরে রাখতে হবে।” রাস্তার ধারে ছোট একটি আসন পেতেই দিন যায় তাঁর। দোকানের নাম, ‘চমৎকার কা নমস্কার- শিব ভোলে জ্যোতিষ কার্যালয়’। নিজেই অন্যের মঙ্গল কামনায় পুজো করেন? জ্যোতিষী বলেন, “আমি নিজেও করি তবে ওঁদেরও করতে বলি – যে এই কাজ করলে ভাল হবে।” হাত দেখে বিচার করেন? “ওই আর কি! হাতের রেখা দেখে তো বোঝা যায়। অনেকের দোষ থাকে, ফাড়া থাকে সেটি বদলানোর চেষ্টা করি। তার উপায় বলে দিই।”
আরও পড়ুন ধুলো ঝাড়লেই সোনা মেলে, বউবাজারে আজও সোনা কুড়িয়েই পেট চালান বহু মানুষ

এত বড়বড় জ্যোতিষদের মধ্যে, আপনার কীভাবে চলে? উত্তরে বলেন, “দেখুন প্রত্যেকের উপরেই বিশ্বাস কাজ করে। এই এলাকার ধারেকাছে অনেকেই আছেন যাঁরা পথচলতি মানুষ, তাঁরা আসেন। কোনও কোনও ছেলেমেয়েরা আবার মজা করতেও আসে। কেউ কেউ এসে তামার লোহার আংটি, পাথরের আংটি নিয়ে যায়। বিশ্বাস ছাড়া তো কিছুই চলে না। আজ এতবছর এই কাজ করছি- আমি একটাই কথা বলি, নিজের ছন্দে জীবনকে চলতে দাও আর ভগবানের স্মরণ করুন তাহলেই হবে।”