আড়াই বছর পর কুহেলী চক্রবর্তীর মৃত্যুতে অভিযুক্ত চিকিৎসকদের শাস্তির বিধান দিল ওয়েস্ট বেঙ্গল মেডিক্যাল কাউন্সিল। ডা.সুভাষচন্দ্র তেওয়ারি, ডা. সঞ্জয় মহওয়ার, ডা. বৈশালী শ্রীবাস্তবের তিন মাসের জন্য ডাক্তারির লাইসেন্স বাতিল করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে অভিযুক্ত চিকিৎসকদের শুধু তিন মাসের জন্য লাইসেন্স বাতিল করায় অত্যন্ত ক্ষুব্ধ ও অসন্তুষ্ট কুহেলীর বাবা-মা। তাঁরা এই রায়ের বিরুদ্ধে পুনরায় তদন্ত করার আবেদন জানাবেন। এ ব্যাপারে তাঁরা মুখ্যমন্ত্রীর দ্বারস্থ হবেন বলে জানিয়েছেন।
২০১৭ সালের ১৯ এপ্রিল। জোকার নবপল্লির ছোট্ট কুহেলী চক্রবর্তীর অ্যাপোলো হাসপাতালে মৃত্যু হয়। চিকিৎসায় গাফিলতিতে মেয়ের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তার বাবা-মা। এই শিশু মৃত্যুর ঘটনায় তোলপাড় হয়েছিল রাজ্যের স্বাস্থ্য মহল। চার চিকিৎসকের বিরুদ্ধে মেডিক্যাল কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়ায় অভিযোগ করেছিল মৃতের পরিবার। সেই ঘটনার তদন্ত করে ওয়েস্ট বেঙ্গল মেডিক্যাল কাউন্সিল। এক চিকিৎসক ছাড় পেয়ে যান। এদিন বাকি তিন জনের শাস্তি ঘোষণ করা হয়।
এদিন কুহেলীর বাবা অভিজিৎ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘এই রায়ে আমরা ভীষণভাবে ক্ষুব্ধ ও অসন্তুষ্ট। আমারা আড়াই বছর ধরে মেডিক্যাল কাউন্সিলের কাছে সাক্ষী দিতে গিয়েছি। সেখানে অভিযুক্ত চিকিৎসকরা নিজেদের আত্মপক্ষ সমর্থনে কোনও যুক্তি দিতে পারেননি। তাঁরা একটা কথাও বলতে পারেননি। ডাক্তার নিজে বলছেন ইঞ্জেকশনের প্রতিক্রিয়া তিনি জানতেন না। কনসাল্টেন্ট গ্যাস্ট্রোএন্ট্রোলজিষ্ট হিসেবে যিনি দেখেছেন তিনি পরে জানালেন তিনি শুধুই এমবিবিএস। এনাসথেসিয়া ডাক্তার মাত্র ৫ মিনিট দেখেছেন। সে সময়ের মধ্যে তিনি কী চিকিৎসা করেছেন? এতকিছুর পর এই রায় মানতে পারছি না’’।
সর্বোচ্চ শাস্তি দেওয়া হবে বলে আশ্বস্ত করেছিলেন ডা. নির্মল মাজি, এমনই দাবি করেছেন অভিজিৎ বাবু। রায় বেরনোর পর তিনি যোগাযোগ করেছেন এমসিআইয়ের রেজিষ্ট্রার ও নির্মল মাজি সঙ্গে। অভিজিৎবাবুর বক্তব্য, ‘‘এটা যথেষ্ট সন্দেহজনক। তিন বছরের শাস্তিকে তিন মাসের শাস্তি করে দিলেন। ইতিমধ্যে দিদিকে বলো-তে তিনি জানিয়েছেন। তিনি জানিয়ে দিলেন, শনিবার নবান্নে সাড়ে ১১টায় সিএমও-তে অ্যাপোয়েন্টমেন্ট নিয়েছি। ফোন করতে পারি, বা যেতেও পারি। দেখা না হলে, মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে যাব। পুনরায় তদন্তের দাবি জানাব’’।
ইন্ডিয়ান মেডিক্য়াল অ্য়াসোসিয়েশনের সর্বভারতীয় সভাপতি ডা. শান্তনু সেন বলেন, ‘‘কাউন্সিল মনে করেছে তাঁদের শাস্তি দেওয়া দরকার। শাস্তি দিয়েছে। কাউন্সিল মনে করেছে তিন মাসের শাস্তি দেওয়া দরকার। এবার কারও মনে হতে পারে শাস্তিটা বেশি বা শাস্তিটা কম। এরপর আইনের পথে যেতে পারে সেটা তাঁদের বিষয়’’।