''আমাদের চাপেই দিল্লিতে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর মূর্তি বসানো হচ্ছে'', রবিবার নেতাজির ১২৫তম জন্মজয়ন্তীর অনুষ্ঠানে এভাবেই মোদী সরকারকে বিঁধলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একইসঙ্গে প্রজাতন্ত্র দিবসের অনুষ্ঠানে দিল্লিতে বাংলার ট্যাবলোকে ছাড়পত্র না দেওয়া নিয়েও এদিন কেন্দ্রীয় সরকারের কড়া সমালোচনায় সরব হন মুখ্যমন্ত্রী।
এদিন রাজ্য সরকারের উদ্যোগে রেড রোডে নেতাজির ১২৫তম জন্মজয়ন্তী পালন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। নেতাজির মূর্তিতে মালা দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যেপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রীর পর এবার একে একে নেতাজি মূর্তিতে পুষ্পার্ঘ নিবেদন করেন নেতাজির পরিবারের সদস্যরা থেকে শুরু অন্য বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ।
সংক্ষিপ্ত কর্মসূচির পরেই এদিন বক্তৃতা করতে উঠে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ''একটা মূর্তি গড়লেই নেতাজিকে ভালোবাসা যায় না। ওয়ার মেমারিয়াল নিয়েও রাজনীতি হচ্ছে। অমর জ্যোতি নিভিয়ে মূর্তি বসালেই নেতাজিকে সম্মান জানানো যায় না। কেন এতদিন নেতাজির মূর্তি তৈরি হল না? আমাদেরই চাপেই দিল্লিতে নেতাজির মূর্তি।''
এদিন নেতাজির নামে বাংলায় আরও একটি বিশ্ববিদ্যালয় তৈরির ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ''প্ল্যানিং কমিশন নেতাজির মস্তিস্কপ্রসূত। সেই প্ল্যানিং কমিশন তুলে দেওয়া হয়েছে। প্ল্যানিং কমিশন তুলে দেওয়াটা লজ্জাজনক।'' এবার বাংলায় প্ল্যানিং কমিশন তৈরি হবে বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। বাংলায় এনসিসি-র ধাঁচে স্কুলে স্কুলে জয়হিন্দ বাহিনী গড়ে তোলারও ঘোষণা করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এরই পাশাপাশি এদিন ফের একবার প্রজাতন্ত্র দিবসে দিল্লির অনুষ্ঠানে বাংলার ট্যাবলো বাতিল প্রসঙ্গে মুখ খুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। কেন্দ্রকে হুঁশিয়ারি দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ''প্রজাতন্ত্র দিবসে একটা নেতাজির ট্যাবলো থাকলে কী অসুবিধা হতো? বাংলাকে এত অবজ্ঞা কেন? বাংলার ইতিহাস মুছে দেওয়ার ক্ষমতা কারও নেই।''
নেতাজি অন্তর্ধান রহস্য উন্মোচন না হওয়া নিয়েও এদিন কেন্দ্রীয় সরকারের সমালোচনায় সরব মুখ্যমন্ত্রী। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ''নেতাজির অন্তর্ধান রহস্যের উন্মোচন করেনি কেন্দ্র। আমরা সব কাগজ, তথ্য দিয়ে সাহায্য করেছিলাম।'' মোদী-শাহ নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রের সরকার বিভাজনের রাজনীতি করছে বলেও এদিন ফের একবার তোপ দেগেছেন মুখ্যমন্ত্রী।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন আরও বলেন, ''গান্ধীজি কাকে বেশি ভালোবাসতেন, তা নিয়ে বিতর্ক হোক। স্কুলের পাঠ্যপুস্তকে পড়ানো হোক দেশপ্রেমের ইতিহাস।'' স্বাধীনতা আন্দোলনের সমস্ত তথ্য রাজ্য সরকার ডিজিলিটাইজড করবে বলেও দিন জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।