সবে মাত্র শেষ হয়েছে রেড রোডে প্রজাতন্ত্র দিবসের অনুষ্ঠান। হঠাৎই নজর কাড়ল এক দুর্লভ দৃশ্য। মুখ্যমন্ত্রীকে দেখে তাঁর দিকে এগিয়ে এলেন রাজ্যপাল ধনকড়। শুভেচ্ছা জানালেন মুখ্যমন্ত্রীও। এরপর, সংঘাতের আবহ উড়িয়ে হাসিমুখে কথায় মাতলেন ধনকড় ও মমতা। এক পেরিয়ে দুই, দুই পেরিয়ে তিন- তখনও কথা বলে চলেছেন তাঁরা। তাদের কাছে দাঁড়িয়ে স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখে তখন স্মিত হাসি। এরই ফাঁকে রাজ্যপাল জায়া সুদেশ ধনকড়ের সঙ্গেও হাত মিলিয়ে শুভেচ্ছা বিনিময় করতে দেখা যায় মুখ্যমন্ত্রীকে।
কী উঠে এল মমতা-ধনকড় আলোচনায়? তা অবশ্য জানা যায়নি।
রাজ্যপালের ডাকে শিলিগুড়ির প্রশাসনিক বৈঠক হাজির হননি আমলারা। সেই থেকেই নবান্নের সঙ্গে সংঘাতের সূত্রপাত জগদীপ ধনকড়ের। এরপর সময় যত এগিয়েছে, পুজোর কার্নিভাল থেকে সংবিধান দিবসের অনুষ্ঠান সহ নানা ইস্যুতে সেই সংঘাত আরও গভীর হয়েছে। সম্প্রতি বিধানসভায় পাস হওয়া বিলে রাজ্যপাল সাক্ষর করছেন না বলে তোপ দাগে শাসক শিবির। সেই বিলে পদ্ধতিগত ত্রুটির অভিযোগ করেন রাজভবনের বড়কর্তা। শিক্ষাক্ষেত্রে রাজ্যপাল অনধিকার চর্চা করছেন বলে তোপ দাগে নবান্ন। পাল্টা, শিক্ষাঙ্গনে ‘নৈরাজ্যের পরিবেশের’ অভিযোগ করেন ধনকড়। সম্প্রতি রাজ্যপালের ডাকা সর্বদল বৈঠকেও যাননি মমতা। এমনকী বিভিন্ন অনুষ্ঠানে রাজ্যপালের স্ত্রীর উপস্থিতি ঘিরেও প্রশ্ন তোলেন রাজ্যের দুই মন্ত্রী। কড়া জবাব দেন ধনকড়।
এই আবহে রাজ্যের সাংবিধানির প্রধানের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর হাসি মুখে কথা বেশ গুরুত্ববাহী বলেই মনে করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: ‘সহযোগিতা করুন, উস্কানি দেবেন না’, চিঠিতে মমতার বার্তা ধনকড়কে
দেশের বিভিন্ন প্রান্তের মত বাংলাতেও এই দিন সাড়ম্বরে পালিত হল ৭১তম প্রজাতন্ত্র দিবস। মূল অনুষ্ঠানটি হয় রেড রোডে। কিছুটা দূরে কনভয় থামিয়ে হাঁটেই অনুষ্ঠানস্থলে পৌঁছান মমতা। সামান্য কয়েক মিনিটের ব্যবধানে আসেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। সঙ্গে ছিলেন তাঁর স্ত্রী সুদেশ ধনকড়েও। জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন রাজ্যপাল। কুচকাওয়াজের মাধ্যমে অভিবাদন গ্রহণ করেন ধনকড়। পাশের মঞ্চে বসে কুচকাওয়াজ দেখেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর পাশেই ছিলেন স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়, মন্ত্রিসভার সদস্য ইন্দ্রনীল সেন, নির্মল মাজি।
মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে হুড খোলা গাড়িতে চড়ে রাজভবনের দিকে রওনা দেন রাজ্যপাল। তখনও মমতার পাশে দাঁড়িয়ে ধনকড় জায়া। কথা বলতে দেখা গেল দু’জনকে।