কলকাতা ট্র্যাফিক পুলিশের প্রকল্প 'সেফ ড্রাইভ, সেভ লাইফ'-এর ভাবনা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মস্তিষ্কপ্রসূত। ২০১৬ সালে এই প্রকল্পটির সুচনা করেন মুখ্যমন্ত্রী। সোমবার সেই সেফ ড্রাইভ, সেভ লাইফের তৃতীয় বর্ষপূর্তি অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, "রাজ্যে এবং কলকাতায় গত দু'বছরে দুর্ঘটনার সংখ্যা কমেছে প্রায় ৩৫ শতাংশ।" তিনি আরও বলেন, "আমাদের 'সেফ ড্রাইভ সেভ লাইফ' প্রচারাভিযান বাংলায় সড়ক দুর্ঘটনার সংখ্যা হ্রাসে কার্যকরী এবং সফল ভূমিকা পালন করেছে। কলকাতার দুর্ঘটনার সংখ্যা প্রায় ৩৫ শতাংশ এবং দুর্ঘটনায় মৃত্যুর সংখ্যাও কমেছে ২৭ শতাংশ। ২০১৬-তে পথ দুর্ঘটনায় মৃতের সংখ্যা ছিল ৪০৭, ২০১৮ সালে সেই সংখ্যা কমে হয়েছে ২৯৪। এমনকি দুর্ঘটনায় আহতের সংখ্যাও কমেছে ৩২ শতাংশ। আর আমরা যদি পুরো পশ্চিমবঙ্গের সংখ্যা বিচার করি, সেক্ষেত্রে দুর্ঘটনার সংখ্যা হ্রাস পেয়েছে ২৮.১ শতাংশ।
আরও পড়ুন, কাটমানি নিয়ে তৃণমূল-বিজেপি সংঘর্ষে রণক্ষেত্র পটাশপুর
সোমবার হরিশ মুখার্জী রোডে সেফ ড্রাইভ সেভ লাইফ অনুষ্ঠানে কলকাতা ট্রাফিক পুলিশের বাইক র্যালি অনুষ্ঠান উদ্বোধন করে মুখ্যমন্ত্রী জনগণের উদ্দেশ্যেও ট্রাফিক আইন মেনে চলার পরামর্শ দেন এবং রাতে শহরের বিভিন্ন জায়গায় পুলিশের নাকা চেকিংয়ের প্রশংসাও করেন। কয়েকদিন আগে নাকা চেকিংয়ের সময় তপন ওঁরাও নামের এক কনস্টেবলকে ধাক্কা মারেন এক বাইক আরোহী। সোমবার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সেই কনস্টেবলকেও দেখতে যান মুখ্যমন্ত্রী এবং কাজের প্রতি একনিষ্ঠতা ও সাহসীকতা প্রদর্শনের জন্য পুরস্কারস্বরূপ তাঁর হাতে ৫০ হাজার টাকা তুলে দেন।
দুর্ঘটনা রুখতে পুলিশের এই পদক্ষেপ প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, "হেলমেট না পরে বাইক কিংবা স্কুটার চালাচ্ছে কি না সেদিকে পুলিশের কড়া নজরদারী আছে। এমনকি দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থাও করছেন তাঁরা। আমরা চাই না কেউ আহত হোন। হেলমেট পরলে তা নিজেদের নিরাপত্তার জন্যই অপরিহার্য। সবাইকে ট্রাফিক নিয়ম অনুসরণ করে চলার অনুরোধ জানাচ্ছি। দয়া করে অবৈধভাবে নিয়ম বহির্ভূত কিছু করবেন না।" 'সেফ ড্রাইভ, সেভ লাইফ' প্রচারটিকে জনসাধারণের কাছে পৌঁছে দিতে পুলিশ সোশ্যাল মিডিয়াকেই বেছে নিয়েছে। সোমবার মুখ্যমন্ত্রী এও ঘোষণা করেন যে কলকাতা পুলিশের যে হাসপাতাল, সেখানে সাধারণ মানুষও চিকিৎসা করতে পারবেন। যদিও ৫০ শতাংশ বেড সংরক্ষিত থাকবে পুলিশের জন্য।
আরও পড়ুন, সাম্প্রদায়িকতা ইস্যুতে পৃথক প্রস্তাব আনছে তৃণমূল-সিপিএম-কংগ্রেস
সোমবার অনুষ্ঠানটিতে মুখ্যমন্ত্রী যমুনা এক্সপ্রেসওয়ের বাস দুর্ঘটনা নিয়েও দুঃখপ্রকাশ করেন। উল্লেখ্য, যমুনা এক্সপ্রেসওয়েতে ১৫ ফুট গভীর ক্যানালে বাস উল্টে কমপক্ষে ২৯ জনের মৃত্যু হয়। ১৮ জনেরও বেশি আহত যাত্রীদের স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। দুর্ঘটনায় শোকপ্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একটি টুইট করে তিনি বলেন, "আগ্রার কাছে বাস দুর্ঘটনার কারণে মৃত্যুর খবর খুবই বেদনাদায়ক। মৃতদের পরিবারকে জানাই সমবেদনা। আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করি। আসুন সকলে #সেফড্রাইভসেভলাইফ অনুসরণ করি"।
Read the full story in English