রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় ও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সংঘাত বেড়েই চলেছে। প্রথমে রাজ্যপালের সাংবাদিক বৈঠক, বিকেলে কড়া ভাষায় জবাব মুখ্যমন্ত্রীর। এভাবেই রাজ্যে চলছে প্রশাসনিক প্রধান ও সাংবিধানিক প্রধানের বাক্য বিনিময়। "আমরা ইলেক্টেডরা চাকর-বাকর" বলেও রাজ্যপালকে কটাক্ষ করেন মমতা। তিনি বলেন, "রাজ্যপাল বিজেপি মুখপাত্রের চেয়েও ভয়ঙ্কর।"
বৃহস্পতিবার সাংবাদিক বৈঠক করে রাজ্যপাল অভিযোগ করেন মুখ্যমন্ত্রী বা রাজ্য সরকার নাকি তাঁর চিঠির উত্তর দেয় না, রাজ্যের শিক্ষাব্যবস্থা রাজনৈতিক খাঁচাবন্দি। রাজ্যপালের সঙ্গে রাজ্যের নানা বিষয় নিয়ে মতান্তর লেগেই থাকে। রাজ্যের বিরুদ্ধে তাঁর বিস্তর অভিযোগ। এরপর বিকেলে নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তথ্যপ্রমাণ হাতে নিয়ে কড়া ভাষায় জবাব দেন রাজ্যপালকে। মুখ্য়মন্ত্রী বলেন, "কেউ হিট না করলে আমি হিট করি না। মাননীয় রাজ্যপাল অনেক কিছু একতরফাভাবে বলে চলেছেন। রাজ্যপালের পদের মর্যাদা যেমন দিয়ে থাকি, তেমনই গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে নির্বাচিত সরকারের মর্যাদা তাঁর জানা প্রয়োজন। রাজ্যপালের চেয়ারের গৌরব যেমন আমরা সম্মান করি, তেমনই আমরাও ন্যূনতম সৌজন্য আশা করি। সংবিধান অনুযায়ী একজন রাজ্যপাল কোনও রাজনৈতিক দলের মতো কথা বলতে পারেন না।"
রাজ্যপালের নানা মন্তব্যে এদিন ক্ষোভপ্রকাশ করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, "আমরা নাকি চিঠির উত্তর দিই না, গতকাল চারবার ফোনে কথা বলেছি। রাজ্যপালের সঙ্গে একটা ইস্যুতে কতবার কমিউনিকেশেন করেছি। সকাল থেকে কোভিড সামলাবো না ওনার প্রত্যেকটা 'কোয়ারি' সামলাবো। যেন আমরা সবাই চাকর-বাকর। আমরা মাইনে নিয়ে কাজ করছি। সকাল থেকে রাত অবধি মনে হয় ওনাকে আমাদের প্রনাম করতে যেতে হয়। সময় পেলে সেটাও করতাম। আমরা সব চাকর-বাকর তো, ইলেক্টেড লোক। ইলেক্টেড লোকেরা চাকর-বাকর হয়ে গিয়েছে।"
রাজ্যে যে কোনও ঘটনা ঘটলেই রাজ্যপাল প্রকাশ্য টুইট করে প্রশ্ন তোলেন মমতা সরকারের কাছে। তাছাড়া চিঠিপত্র তো রয়েছেই। এদিন মমতা বলেন, "প্রতি মুহূর্তে প্রতিটা প্রশ্নের জবাব দিতে হবে। বিজেপির ওই কর্মীরা কেন মার খেল, ডেড বডিটা কোভিড না হলেও কোভিডের মত কেন পোড়ানো হয়নি। এমন নানা প্রশ্ন। পোস্টমর্টেম হওয়ার আগে পলিটিক্যাল মার্ডার কেন হল? ওদিকে করোনা নিয়ে দিল্লির মন্ত্রী, সচিবদের সঙ্গে বৈঠক, রোজ একেকরকম আইন, সরকার সামলাব নাকি খালি কৌতূহলের জবাব দেব? তবু আমি, মুখ্য সচিব, শিক্ষামন্ত্রী, শিক্ষা সচিব সকলেই তাঁকে নানা বিষয়ে জানিয়েছি।" বিজেপি মুখপাত্রের চেয়েও ভয়ঙ্কর হয়ে উঠছেন রাজ্যপাল, বলেন মমতা।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন