শারীরিক অসুস্থতা নিয়ে সরকারি হাসপাতালে গেলেও করোনা পরীক্ষা করা হল না মানবী বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Manobi Bandyopadhay)। 'অপরাধ'? মানবী রূপান্তরকাম। তাই তাঁর কোভিড পরীক্ষা করা হল না। উল্টে অস্পৃশ্য ব্যবহার করা হল তাঁর সঙ্গে। সরকারি হাসপাতালের বিরুদ্ধে এমন বিস্ফোরক অভিযোগ তুলেই রাজ্য নারী, শিশু ও সমাজকল্যাণ দপ্তরে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন রাজ্য ‘ট্রান্সজেন্ডার ট্রান্সপার্সন বোর্ড’-এর সহ-অধ্যক্ষ তথা ঢোলা মহাবিদ্যালয়ের অধ্যাপিকা মানবী বন্দ্যোপাধ্যায়।
মানবী জানিয়েছেন, বেশ কিছুদিন ধরেই তাঁর স্বামী জ্বরে আক্রান্ত। তাই সরকারি হাসপাতাল এম আর বাঙ্গুরে RT-PCR টেস্ট করাতে গিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু সেখানে যেতেই হয়রানির শিকার হতে তাঁকে। স্বামীর কোভিড পরীক্ষা করানো হলেও মানবীর সঙ্গে অভব্য আচরণ করা হয়, বলে জানিয়েছেন তিনি। মানবী বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, তাঁকে মেন্টাল বলেও কটুক্তি করে তাড়িয়ে দেওয়া হয়। তাঁর আক্ষেপ, "এহেন ব্যবহার কুকুর-বেড়ালদের সঙ্গেও কেউ করে না।" বরং, তিনি যে ট্রান্সজেন্ডার বোর্ডের ভাইস প্রেসিডেন্ট, সেই কার্ড দেখালেও কোনও লাভ হয়নি। সুপারের সঙ্গে দেখা করতে চাইলে তাঁকে বলা হয়, সুপার আসেননি। যদিও সেই নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে। কারণ নিরাপত্তরক্ষীর কাছ থেকে তিনি জানতে পেরেছেন যে, সুপার হাসপাতালে এসেছেন এবং দশ তলা রাউন্ডে গিয়েছেন। ঘটনার জেরে তিনি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন বলে জানিয়েছেন। তাঁর প্রশ্ন, "ট্রান্স নারী বলেই কি এমন অশালীন আচরণ করা হল তাঁর সঙ্গে?"
গোটা ঘটনা মেইল মারফৎ শশী পাঁজা এবং ফিরহাদ হাকিমকে জানিয়েছেন মানবী মুখোপাধ্যায়। এম আর বাঙুরের সুপার অবশ্য জানিয়েছেন, ঘটনাটি শোনার পরই সহকারী সুপার তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করে কোভিড টেস্ট করিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেন। কিন্তু ততক্ষণে মানবী সেখান থেকে বেরিয়ে গিয়েছিলেন। হাসপাতালে রূপান্তরকামীদের জন্য আলাদা কোভিড ওয়ার্ড রয়েছে বলেও তিনি জানান। এদিকে মানবীর প্রতিক্রিয়া, ওই অপমানের পরই তিনি এখানে আর কোভিড পরীক্ষা করাননি। তাঁর প্রশ্ন, সরকারি হাসপাতালের কর্মীদেরও এমন মানসিকতা, সাধারণ মানুষ যাবে কোথায়? সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই রাজ্যের নারী, শিশু ও সমাজকল্যাণ দপ্তরের তরফে মানবী বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন