কেন সরছে মহম্মদ আলি পার্কের দুর্গাপুজো?

এক বছরের জন্য কিছুটা হলেও জায়গা বদল করবে কলকাতার অতি জনপ্রিয় মহম্মদ আলি পার্কের দুর্গাপুজো। কিন্তু কেন এই সাময়িক স্থানান্তর?

এক বছরের জন্য কিছুটা হলেও জায়গা বদল করবে কলকাতার অতি জনপ্রিয় মহম্মদ আলি পার্কের দুর্গাপুজো। কিন্তু কেন এই সাময়িক স্থানান্তর?

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
durga puja 2019

মহম্মদ আলি পার্কের প্রবেশদ্বার। ছবি: অরুণিমা কর্মকার

পঞ্চাশ বছরের পুরনো আস্তানায় ফিরে যাওয়া। যেমন তেমন কারোর ফিরে যাওয়া নয়, শহরের অন্যতম জনপ্রিয় দুর্গাপুজোর সাময়িক স্থানান্তর।

Advertisment

মহম্মদ আলি পার্কের পুজো এ বছর ফিরে যাচ্ছে পঞ্চাশ বছর আগের জায়গায়। পার্কের পার্শ্ববর্তী দমকল বিভাগের অধীনস্থ জমিতে তৈরি হবে পুজোর মণ্ডপ। যার ফলে এবছর কিছুটা হলেও দাপট কমবে উত্তর কলকাতার এই পুজোর। কিন্তু কেন এই স্থানান্তর?

মহম্মদ আলি পার্কের পুজো নিয়ে বছরের শুরু থেকেই তৈরি হয়েছিল দোটানা। যে জায়গায় এতদিন ধরে পুজো হয়ে আসছে, সেটির নিচে রয়েছে শতাধিক বছরের পুরোনো জলাধার বা রিজার্ভার (reservoir)। রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে বেহাল হয়েছে এই জলাধারের পরিকাঠামো। ব্রিটিশ আমলে ইটের তৈরি রিজার্ভারের দেওয়াল এবং ছাদে দেখা দিয়েছে ফাটল। অবস্থা এমনই, যে পুজো মন্ডপের ভার ও লোকের ভিড়ে তা ভেঙে পড়ার আশঙ্কা করেছে কলকাতা পুরসভা।

Advertisment

আরও পড়ুন: দুর্গাপুজোর উদ্বোধনে মমতা না অমিত শাহ? ঐতিহ্য ঘিরে দড়ি টানাটানি

publive-image মহম্মদ আলি পার্ক পুজোর স্থান বদলের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন যাঁরা। 

সপ্তাহ তিনেক আগে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইঞ্জিনিয়ারদের একটি দল এসে ঘটনাস্থল পর্যবেক্ষণ করে। তারপর মঙ্গলবার যে রিপোর্ট এসে পৌঁছয় ক্লাব কর্তাদের হাতে, তাতে বলা হয়েছে, জলাধারের মেরামত না করলে পার্কে দুর্গাপুজো করার অনুমতি দেওয়া বিপজ্জনক হতে পারে। এদিন বিধায়ক তাপস রায়, স্মিতা বক্সী, দমকল ও জরুরি সেবা মন্ত্রী সুজিত বোস, দমকলের একাধিক কর্মকর্তা, ডিসি সেন্ট্রাল সুধীর কুমার, জোড়াবাগান থানার ওসি সহ ক্লাব কর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, মহম্মদ আলি পার্কের পাশে দমকলের জমিতে হবে এবারের দুর্গাপুজো।

'আবার পুজো ফায়ার স্টেশনে', এটাই হবে ২০১৯-এর মহম্মদ আলি পার্ক পুজোর থিম। প্রসঙ্গত, সাবেকী ঐতিহ্য মেনেই প্রতিবছর করা হয় মহম্মদ আলি পার্কের দুর্গাপুজো। ১৯৬৭ সালে শেষবারের মতো পুজো হয়েছিল দমকলের ওই জমিতে। সেসময়ের সরকার মূলত ভিড়ের জন্যই সেই পুজো স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত নেয়। এবার ফের সেই জায়গাতেই পুজো ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিল বর্তমান সরকার।

publive-image এই জায়গার ভিতরেই হবে পুজো। ছবি: অরুণিমা কর্মকার

ক্লাবের যুগ্ম সম্পাদক অশোক ওঝা বলেন, "মেয়র ফিরহাদ হাকিম আমাদের প্রথমে বলেছিলেন পার্কের মধ্যে ছোট করে পুজো করুন। কিন্তু পরবর্তীকালে ভিড়ের কথা চিন্তা করে জায়গা বদল করার কথা বলেন।" এক্সিকিউটিভ কমিটির সদস্য সঞ্জীব শর্মা বলেন, "দূর থেকেও মহম্মদ আলি পার্কের পুজোমন্ডপ দেখা যেত। এবছর সেটা হবে না। তবে জায়গা কম নয়। প্রায় এক একর জায়গায় ৪০-৪৫ ফুট উঁচু মণ্ডপ বানানো যাবে।"

অশোকবাবু আরও জানিয়েছেন, "দমকল বিভাগ থেকে আমাদের মেইন রাস্তার দিকে তিনটে গেট দেওয়া হবে। সেখান দিয়ে দর্শনার্থীদের ভিতরে প্রবেশ করানো হবে। মণ্ডপ থেকে বেরোনোর জন্য ওই জায়গার পিছনের দিকে একটি পাঁচিল ভেঙে নতুন গেট করা হবে। প্রত্যেকবারের মতো এবারেও ভিআইপিদের জন্য সম্পূর্ণ আলাদা একটি লাইনের ব্যবস্থা করা হবে।" তিনি আরও বলেন, "এই জায়গায় পুজো শুধুমাত্র এক বছরের জন্য। ফিরহাদ হাকিম আমাদের আশ্বাস দিয়েছেন, এবছরের মধ্যেই সারিয়ে দেওয়া হবে জলের রিজার্ভার।"

kolkata news kolkata