Gariahat Double Murder: গড়িয়াহাট জোড়া হত্যায় ইতিমধ্যে ধৃত এক। জানা গিয়েছে, মিঠু হালদার নামে ওই মহিলার বড় ছেলেই এই কীর্তির নেপথ্যে। যদিও মোবাইল ফোন বন্ধ রেখে এবং ঘনঘন নাম্বার বন্ধ রেখে পলাতক মূল অভিযুক্ত ভিকি হালদার। ধৃতকে জেরা করে পুলিশ জানতে পেরেছে এই ঘটনায় ভিকিকে সঙ্গত দিয়েছে আরও কয়েকজন। বেপাত্তা তাঁরাও। এই প্রসঙ্গে এদিন পুলিশ কমিশনার সৌমেন মিত্র বলেছেন, ‘গড়িয়াহাট জোড়া হত্যাকাণ্ডের সমাধান হয়ে গিয়েছে। আমাদের গোয়েন্দা বিভাগ এবং আরও কয়েকজন অফিসার মিলে এই কাজ করেছেন। আরও কয়েকজনের গ্রেফতারি বাকি রয়েছে।‘ এদিন আলিপুর আদালতে তোলা হয় মিঠু হালদারকে। তাঁকে ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
জানা গিয়েছে, বুধবার রাতে মিঠুকে গ্রেফতারের পর তাঁকে নিয়ে বালিগঞ্জ স্টেশনে যান তদন্তকারীরা। তাঁকে দিয়ে করানো হয় ঘটনার পুনর্নির্মাণ। মিঠুকে জেরা করে পুলিশ জানতে পেরেছে ঘটনার পর বালিগঞ্জ থেকে ট্রেন ধরে ডায়মন্ড হারবারে মায়ের কাছে যান মূল অভিযুক্ত ভিকি। তাঁকে গিয়ে সব খুলে বলে। সেই ঘটনা শুনে তথ্য-প্রমাণ লোপাটের চেষ্টা করে মিঠু। ছেলের রক্তমাখা জামা ধোয়ার সময় বাড়িওয়ালার নজরে পড়ে যান মিঠু। জামায় রক্তের দাগ কেন তাঁকে জিজ্ঞাসা করলে, সে বলেছিল দশমীর রাতে ছেলের সঙ্গে কয়েকজন মারপিট হয়েছে। সেই হাতাহাতি থেকেই রক্তপাত।‘
এরপরেই বুধবার রাতের দিকে মিঠুর ডায়মন্ড হারবারের বাড়ি গিয়ে সেই জামাকাপড় উদ্ধার করেন গোয়েন্দারা। ভিকি এবং তাঁর সঙ্গীদের সেই পোশাক। এমনটাই সন্দেহ গোয়েন্দাদের। এদিকে পুলিশ জানতে পেরেছে মিঠু এবং ভিকির পূর্বতন অপরাধের রেকর্ড আছে। ২০২০ সালে স্বামী অর্থাৎ ভিকির বাবাকে খুনের চেষ্টা করেছিলেন মিঠু। সেই চেষ্টায় তাঁকে সঙ্গত দিয়েছিল দুই ছেলে।
যদিও পুলিশি জেরায় প্রথমে কিছুই বলতে চায়নি পেশায় পরিচারিকা এই মহিলা। কিন্তু কাকুলিয়া রোডের সিসিটিভি ফুটেজ এবং সেই ফুটেজে ভিকি ও তাঁর সঙ্গীদের গতিবিধি দেখেই ভেঙে পড়েন মহিলা। পুলিশকে তিনি জানান, ছ’মাস আগে কাগজে বিজ্ঞাপন দেখে কাকুলিয়া রোডের সেই বাড়ি কিনতে সুবীর চাকিকে প্রস্তাব দেন মা-ছেলে। দেড় কোটি টাকা দর হাঁকলেও সেই লেনদেন দিনের আলো দেখেনি। এরপরেই লুঠের উদ্দেশে রবিবার নাম ভাঁড়িয়ে ফের সুবীর চাকিকে কাকুলিয়া রোডের বাড়িতে ডাকে ভিকি ও তাঁর দলবল। শুধু লুঠপাট চালানো উদ্দেশ্য থাকলেও, ভিকিকে এবার চিনে ফেলেন সুবীরবাবু। সেই সুত্রেই ছুরি দিয়ে তাঁকে কুপিয়ে খুন করেন অভিযুক্তরা। তাঁর গাড়ির চালক সেই দৃশ্য দেখে ফেললে, তাঁকেও খুন করে ভিকি ও তাঁর দলবল। পুলিশকে এমনটাই জানিয়েছে এই ঘটনায় অন্যতম অভিযুক্ত মিঠু হালদার।
অপরদিকে, শ্বশুরবাড়ির সঙ্গে সম্পর্ক ভালো ছিল না মিঠুর। পুলিশকে জানিয়েছে তাঁর পরিবার। যদিও ভিকি মেট্রো রেলের ইঞ্জিনিয়ার পরিচয় দিয়ে ঘুরে বেড়াতো, এমনটাই পরিবার সূত্রে খবর। কিন্তু পরে জানা যায় ডোমের কাজ করে সে। অবশেষে গরিয়াহাটের জোড়াখুনে ভিকির নাম উঠে আশায় মোটেও তাজ্জব নয় মিঠুর শ্বশুরবাড়ি। এমনটাই পরিবার সূত্রে খবর।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন