কয়লা পাচার-কাণ্ডে ফের তদন্তকারীদের র্যাডারে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্ত্রী। এই মামলায় অন্যতম তদন্তকারী সংস্থা ইডি আদালতে এদিন অভিষেকের স্ত্রী এবং শ্যালিকার প্রসঙ্গ উল্লেখ করেছে। তাদের দাবি, ‘অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্ত্রী ও শ্যালিকার অ্যাকাউন্টে বিপুল পরিমাণ অর্থের লেনদেন হয়েছে।‘
ব্রিটেন ও তাইল্যান্ডের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ওই বড় অঙ্কের টাকা পৌঁছে দেওয়া হয়েছিল বলে ইডি আদালতে দাবি করেছে। বিশেষ আদালতের কাছে অনুপ মাঝি ওরফে লালার সঙ্গী অশোক মিশ্রকে ১১ দিনের জন্য নিজেদের হেফাজতে নেওয়ারও আবেদন করেছে ইডি। তদন্তকারী সংস্থার আরও দাবি, ‘জিজ্ঞাসাবাদের সময় অশোক জানিয়েছেন, বিনয়ের নির্দেশে অনুপের থেকে পাওয়া টাকাই অ্যাকাউন্টে পাঠানো হয়েছিল।‘
আদালতে জমা-দেওয়া ইডি-র চিঠিতে লেখা হয়েছে, ‘বিনয়ের কথা মতো এক থেকে দেড় কোটি টাকা দিল্লিতে পাঠিয়েছিলেন অশোক। অনুপের হিসাবরক্ষক নীরজ সিংহের কাছ থেকে ওই টাকা জোগাড় করা হয়েছিল’।
চিঠিতে দাবি করা হয়েছে, ‘অশোক জানিয়েছেন, তৃণমূল নেতা বিনয় অভিষেকের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ। সেই কারণে তাঁর কথা শুনতে বাধ্য হয়েছিলেন তিনি। না হলে তাঁর পেশাগত জীবন ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারত। অভিষেকের এক কাছের আত্মীয়ের জন্য সেই কারণেই হাওয়ালার মাধ্যমে লন্ডনে টাকা পাঠিয়েছিলেন। টাকা গিয়েছিল তাইল্যান্ডেও’।
ইডি-র চিঠিতে আরও দাবি করা হয়েছে, ‘টাকা পাঠানোর বিষয়ে সাহায্য করেছিলেন নীরজ’। লেনদেনের একাধিক নথি তাদের হাতে আছে। নীরজের থেকে পাওয়া নথি ঘেঁটে দেখা গিয়েছে, কয়লা পাচার কাণ্ডে ২০২০ সালে ১০৯ দিনের মধ্যে অশোক ১৬৮ কোটি টাকা পেয়েছিলেন। বেআইনি কয়লার ব্যবসায় শেষ দু’বছরে অনুপ (লালা) ১,৩৫২ কোটি টাকার সম্পত্তির মালিক হয়েছিলেন।‘ ইডি-র অভিযোগ, ‘অনুপের এক কাছের মানুষ জানিয়েছেন, অশোকের সাহায্যে অনুপ রাজ্যের বিভিন্ন রাজনৈতিক মাথাকে তুষ্ট রেখে বেআইনি ব্যবসা চালাতেন। ওই নেতাদের হাতে রাখতে বিপুল পরিমাণ অর্থ খরচ করতে হত।‘
যদিও ইডির ওই দাবি নিয়ে প্রশ্ন করা হলে বৃহস্পতিবার একাধিক আইনজীবী জানিয়েছেন, ওই অভিযোগ আদালত গ্রহণ করবে, এমনও নয়। অশোক যা জানিয়েছেন বলে ইডি দাবি করেছে, যতক্ষণ না সেই কথার ভিত্তিতে কোনও কিছু উদ্ধার হচ্ছে, তত ক্ষণ কিছু প্রমাণ হয় না। যে হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাটের কথা ‘প্রমাণ’ হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছে, সেটি আদালতে গ্রহণযোগ্য নয়। তাই অ্যাকাউন্টে টাকা গিয়েছে, এই কথা বললেই অভিযোগ প্রমাণ হয়ে যায় না। যদি টাকা উদ্ধার হয়, তখনই সেটি আইনি গ্রহণযোগ্যতা পাবে।