হাইকোর্টে আবারও ধাক্কা খেলেন বিজেপি নেতা মুকুল রায়। বড়বাজার আর্থিক দুর্নীতি মামলায় বৃহস্পতিবার মুকুল রায়ের কন্ঠস্বরের নমুনা পরীক্ষার নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। পুলিশের আবেদনের প্রেক্ষিতে এই মামলায় এর আগেই মুকুলের কন্ঠস্বরের নমুনা পরীক্ষার নির্দেশ দিয়েছিল নিম্ন আদালত। সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন একদা তৃণমূলের সেকেন্ড-ইন-কমান্ড। বৃহস্পতিবার নিম্ন আদালতের সেই নির্দেশই বহাল রাখল হাইকোর্ট। একইসঙ্গে আদালত জানিয়েছে, মুকুলের কন্ঠস্বরের নমুনা শুধুমাত্র এই মামলার ক্ষেত্রেই ব্যবহার করা যাবে। অন্য কোনও মামলায় মুকুলের এই কন্ঠস্বরের নমুনা ব্যবহার করা যাবে না, এমনটাই খবর।
আরও পড়ুন: নিজের দলের সমালোচনা করে মমতার অবস্থানকেই সমর্থন, বদলাচ্ছে পিকের রাজনৈতিক কেরিয়ার?
উল্লেখ্য, পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৮-এর ৩১ জুলাই বড়বাজার থানায় প্রতারণা ও দুর্নীতি সংক্রান্ত বিষয়ে একটা এফআইআর দায়ের হয়। এরপর একজন সরকারি কর্মীর কাছ থেকে ৯০ লক্ষ টাকা উদ্ধার করে পুলিশ। সেই মামলার তদন্তের সময়েই মুকুল রায়ের নাম উঠে আসে বলে পুলিশের দাবি। এরপর ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে ১৬০ ধারায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মুকুল রায়কে নোটিস পাঠিয়ে তলব করে কলকাতা পুলিশ। তবে মুকুল রায় এখন দিল্লির বাসিন্দা ও ভোটার। তাই দিল্লিতে এসে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তিনি সহযোগিতা করবেন বলে জানিয়ে দেন মুকুল। এদিকে, ২০১৮ সালের ওই নোটিস অনুযায়ী মুকুল রায় হাজিরা না দেওয়ায় ব্যাঙ্কশাল কোর্টে আবেদন করে কলকাতা পুলিশ। সেই আবেদনের ভিত্তিতেই মুখ্য নগরদায়রা বিচারক গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। এ মামলায় পরে মুকুলের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা খারিজ করেছিল হাইকোর্ট। এই মামলার তদন্তে মুকুল রায়কে জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল কলকাতা পুলিশ। দুর্নীতি মামলায় বিজেপি নেতার দিল্লির বাড়িতে গিয়েও জিজ্ঞাসাবাদ চালিয়েছিল কলকাতা পুলিশের একটি দল।
আরও পড়ুন: বড় বিপাকে মুকুল রায়, খুনের মামলায় আগাম জামিনের আর্জি খারিজ হাইকোর্টে
এদিকে, লাভপুর হত্যা মামলায় মঙ্গলবার মুকুল রায়ের আগাম জামিনের আবেদন খারিজ করে দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। ২০১০ সালে লাভপুরে তিন সিপিএম সমর্থক ভাইকে খুনের ঘটনায় কিছুদিন আগে অতিরিক্ত চার্জশিটে মুকুল রায়ের নাম উল্লেখ করা হয়েছিল বলে খবর। এরপরই কলকাতা হাইকোর্টে আগাম জামিনের আবেদন জানান মুকুল। কিন্তু, ‘আবেদন ত্রুটিপূর্ণ’ হওয়ায় মুকুলের আগাম জামিনের আর্জি হাইকোর্ট খারিজ করেছে বলে জানা গিয়েছে। অন্যদিকে, রেল প্রতারণার মামলাতেও নাম জড়িয়েছে মুকুল রায়ের। এই মামলায় বেহালার সরশুনা থানায় মুকুল রায়ের নামে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছিল। মুকুল ও আরও ৪ জনের নামে ওই এলাকারই এক বাসিন্দা প্রতারণার অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। রেল বোর্ডের সদস্য করার নামে লক্ষাধিক টাকার প্রতারণার অভিযোগ করেছিলেন ওই বাসিন্দা। এ বছরের গোড়াতেই অভিযোগ দায়ের করেন ওই বাসিন্দা। সেই মামলাতেও হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন মুকুল। এই সব মামলাগুলির ক্ষেত্রে প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে মুকুল রায় একাধিকবার তাঁর বিরুদ্ধে ‘রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রে’র তত্ত্ব খাড়া করেছেন।