নেতাজি সুভাষচন্দ্র বোসের অন্তর্ধান নিয়ে বিতর্ক আজও থামেনি। কিন্তু আন্তর্জাতিক কলকাতা বইমেলা সেই রহস্য উদঘাটন করে ফেলল। আর তার জেরেই শুরু হয়েছে নতুন বিতর্ক। দীর্ঘ কয়েক দশক কেটে যাওয়ার পরও নেতাজির মৃত্যুদিন নিয়ে একটা প্রশ্নচিহ্ন আজও রয়ে গিয়েছে। আর সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে খাস কলকাতা আন্তর্জাতিক বইমেলায় খুব সহজেই অন্তর্ধান রহস্যের সমাধান হয়ে গেল। শুনে অবিশ্বাস্য মনে হলেও, এটাই কিন্তু ঘোর বাস্তব। প্রসঙ্গত, আন্তর্জাতিক কলকাতা বইমেলার ১ নম্বর স্টলটি নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বোস এর নামাঙ্কিত করা হয়েছে। আর সেই স্টলের চারপাশে যে হোডিং গুলো লাগানো হয়েছে সেখানেই নেতাজীর জন্ম দিনের পাশাপাশি মৃত্যু সাল লেখা রয়েছে । আন্তর্জাতিক কলকাতা বইমেলার এই ঘটনা হতাশ করেছে বই প্রেমী মানুষ থেকে বইমেলায় ঘুরতে যাওয়া সাধারণ মানুষদের। নেতাজি নিয়ে বাঙালির ভাবাবেগে আঘাতের অভিযোগও উঠেছে এই ব্যানার ঘিরে।
কলকাতা বইমেলার মত ঐতিহ্যবাহী একটি জায়গায় এহেন ভুলকে মেনে নিতে পারেন নি তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। টুইটারে তিনি এবিষয়ে তাঁর ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন। ২৮ ফেব্রুয়ারি কলকাতায় শুরু হয়েছে আন্তর্জাতিক কলকাতা বইমেলা। গত বছর অতিমারি করোনার কারনে বইমেলা বন্ধ ছিল। তবে চলতি বছরে পরিস্থিতি কিছুটা স্থিতিশীল হওয়ায় বইপ্রেমী মানুষেদের জন্য শুরু হয়ে গিয়েছে আন্তর্জাতিক কলকাতা বইমেলা। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের হাত ধরে শুভ উদ্বোধন করা হয় ৪৫ তম আন্তর্জাতিক কলকাতা বইমেলার। কিন্তু মেলা শুরুর দ্বিতীয় দিনেই বিতর্কের কেন্দ্র বিন্দুতে চলে এল কলকাতা বইমেলা। নেতাজির নামে নামকরণ করা স্টলে লেখা রয়েছে মৃত্যু ১৮ আগস্ট ১৯৪৫। মৃত্যু সাল লেখার জন্যই দানা বেঁধেছে বিতর্ক। তবে এবিষয়ে গিল্ডের তরফে জানানো হয়েছে এজেন্সি দিয়ে এগুলো করানো হয় তারাই ভুল করেছে। তবে এত বড় ভুল কেন চোখে পড়ল না সেই প্রশ্ন তুলেছেন বইপ্রেমী সাধারণ মানুষ।
করোনা সংক্রমনের কারণে প্রায় দু বছর অপেক্ষার পর আবার শুরু হল বইমেলা। বইমেলার অর্থ হল মিলন মেলা। লেখক-পাঠক-প্রকাশক সকলকে নিয়ে এই মহা মিলন। এবছর বইমেলার উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। উৎসবের মেজাজ বইমেলা প্রাঙ্গণে। বইমেলা চলবে আগামী ১৩ ই মার্চ পর্যন্ত। বেলা ১২ টা থেকে রাত ৮ টা পর্যন্ত খোলা থাকবে মেলা প্রাঙ্গণ। সমস্ত রকম স্বাস্থ্যবিধি মেনে বইমেলা চলবে। এবারের বইমেলার থিম কান্ট্রি বাংলাদেশ।
এ বছর বইমেলায় ৬০০ টিরও বেশি স্টল থাকছে। তা ছাড়াও রয়েছে ২২০টি লিটল ম্যাগাজিনের স্টলও বলে মেলা কমিটি সূত্রে জানা যায়। এ বছরই প্রথম লাইভ ওয়েবসাইট চালু হচ্ছে বইমেলার। এই ওয়েবসাইটে সরাসরি বইমেলার স্টল, প্রোগ্রাম ও সেমিনার অনলাইনের মাধ্যমে দেখা যাবে। এমনকী ই-পাসেরও ব্যবস্থা থাকছে। প্রায় দু'বছর পর হচ্ছে বইমেলা । তাই, এ বছর বইমেলাকে ঘিরে মানুষের উৎসাহ উদ্দীপনাও অনেক বেশি থাকবে বলে মনে করছেন গিল্ড কর্তৃপক্ষ। সেই সঙ্গে সমস্ত রকম কোভিড বিধি মেনে আয়োজন করা হয়েছে বইমেলার। বইমেলায় বেশ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে প্যাভিলিয়ন । লতা মঙ্গেশকর কিংবা শঙ্খ ঘোষের মতো মহান শিল্পীদের স্মরণে প্যাভিলিয়ন যেমন থাকছে পাশাপাশি বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণকে কেন্দ্র করে নির্মাণ করা হয়েছে বাংলাদেশ প্যাভিলিয়ন।