কর্মব্যস্ত দিনের আলসে মোড়া দুপুর। সৌজন্যে রাজ্যব্যাপী লাগু করোনাবিধি। কিন্তু বুধবারের দুপুরে হাড়হিম করা অভিজ্ঞতার সাক্ষী থাকল অভিজাত সাপুরজি আবাসনের আবাসিকরা। এদিন ভাত ঘুম চোখে তাঁরা ঘুণাক্ষরেও টের পায়নি কী হতে চলেছে আবাসনে। এতদিন শ্যুটআউট অ্যাট লোখাণ্ডওয়ালা বা শ্যুটআউট অ্যাট ওয়াডালা টিভির পর্দায় দেখেছেন এই আবাসনের বাসিন্দারা। কিন্তু বাস্তবে সেই দৃশ্য নিজেদের শান্ত আবাসনেও ফুটে উঠবে বোঝেনি কেউ। এদিন দুপুর সাড়ে ৩টে নাগাদ বাসিন্দাদের ঘুম ভাঙে গুলির শব্দে। তাও তাঁরা বুঝে উঠতে পারেনি কেন গুলির শব্দ?
ব্যালকনি দিয়ে নীচে চোখ ফেলতেই পুলিশের আনাগোনা আরও উদ্বেগ বাড়ায়। আরে এ যেন সিনেমার দৃশ্য! সেই উদ্বেগ ক্রমশ আতঙ্কের চেহারা নেয় যখন মুহুর্মুহু গুলির শব্দে কেঁপে ওঠে গোটা এলাকা। তখনই আড় ভেঙে কী হয়েছে দেখতে হুরমুড়িয়ে পড়েন আবাসিকরা।
সেই আবাসনের এক বাসিন্দা ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলেছেন, ‘যে দুই জনের ছবি সংবাদ মাধ্যমে ঘুরছে, তাঁদের একজনের সঙ্গে দিন কয়েক আগে সামনের কনফেকশনারি দোকানে দেখা হয়েছিল। প্রথমে গুলির শব্দ পেলেও বোঝা যায়নি কী ব্যাপার। পরে আসতে আসতে বিষয়টি পরিষ্কার হয়।‘ অত্যন্ত শান্ত ও নিরিবিলি এই আবাসনে এমন ঘটনায় স্পষ্টতই হতচকিত সৌরভ। এমনটাই তিনি জানান ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে।
আরও এক আবাসিক সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ‘আমার বাড়ি ব্যারাকপুরে। সেখানেই যাব বলে প্রস্তুতি নিচ্ছি, হঠাৎ গাড়ির ড্রাইভার বলেন, ভেতরে ঢুকতে পারছি না। বি ব্লকের সামনে গুলি চলছে। সঙ্গে সঙ্গে নীচে নেমে আসি।‘ আরও এক প্রত্যক্ষদর্শী দাবি করেন, অন্তত ৩-৪ রাউন্ড গুলি চলেছে। দেখতে পাই বিল্ডিংয়ের ঢোকার মুখেই গুলি চালানো হচ্ছে। এক পুলিশকর্মীর হাতে লেগেছে এবং রক্ত ঝরছে।‘
এদিকে, দিনেদুপুরে নিউ টাউনে পুলিশের এনকাউন্টারে নিহত দুই দুষ্কৃতী। জানা গিয়েছে, সাপুরজি আবাসনে পাঞ্জাবের দুই গ্যাংস্টার লুকিয়ে ছিল। পুলিশের সঙ্গেই আবাসনের নীচে এই দুষ্কৃতীদের গুলির লড়াই চলেছে। এসটিএফের সঙ্গে হওয়া এই গুলির লড়াই নিহত ওই ২ দুষ্কৃতী। আবাসনে পুলিশি উপস্থিতির খবর পেয়েই নাইন এমএম বন্দুক থেকে প্রথমে গুলি চালায় অভিযুক্তরা।
এই ঘটনায় আহত হয়েছেন এক পুলিশকর্মী। তাঁর নাম কার্ত্তিক ঘোষ। প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, এই আবাসনের বি ব্লকের পাঁচ তলায় লুকিয়ে ছিলেন গ্যাংস্টার যশপ্রীত পারমার এবং জয়পাল ভুল্লর। ঘটনাস্থলে বিধাননগর কমিশনারেটের সিপি সুপ্রতিম সরকার এবং এসটিএফ প্রধান বিনীত গোয়েল।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন