করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে রাজ্যে জারি লকডাউন। বন্ধ হয়েছে রাজ্যের সমস্ত মিষ্টির দোকানও। এহেন পরিস্থিতিতে মাথায় হাত দুগ্ধ ব্যবসায়ীদের। প্রতিদিন গড়ে যেখানে তিন লক্ষ লিটার দুধ যেত মিষ্টির দোকানগুলিতে, তা সম্পূর্ণ বন্ধ হয়েছে। নেই কোনও ক্রেতাও। এমনকী উদ্বৃত্ত দুধ সংরক্ষণের কোনও ব্যবস্থা নেই ব্যবসায়ীদের কাছে। লকডাউনে তাই কার্যত অসহায় রাজ্যের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এই ব্যবসা।
যে সঙ্কট তৈরি হয়েছে তা থেকে উদ্ধারের আশায় ২৫ মার্চ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হস্তক্ষেপের আর্জি জানিয়ে একটি চিঠিও লেখে জোড়াসাঁকো দুগ্ধ ব্যবসায়ীদের সমিতি। চিঠিতে তাঁরা লেখেন, "আমরা খুবই উপকৃত হব যদি পশ্চিমবঙ্গ সরকার তার মাদার ডেয়ারির জন্য নির্দিষ্ট দামে ক্রয় করে। একমাত্র মাদার ডেয়ারির কাছেই রয়েছে দুগ্ধ সংরক্ষণের বিপুল পরিমাণ ব্যবস্থা। আপনি যদি সেই দিকটি বিবেচনা করে দেখেন তাহলে আমরা বড়ই উপকৃত হব।"
আরও পড়ুন: বেসরকারি সংস্থারা মাইনে কাটবেন না, আর্জি মমতার
যদিও এখনও রাজ্য সরকার এই বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্তে উপনীত হতে পারেনি। বাংলার জোড়াসাঁকোতে যে দুগ্ধ ও দুগ্ধজাত পণ্যের বাজার রয়েছে তা রাজ্যের বৃহত্তম। এখান থেকে রাজ্যের সব মিষ্টির দোকানে দুধ সরবরাহ করা হয়। লকডাউনে সব মিষ্টির দোকান বন্ধ হয়ে যাওয়াতে দেখা দিয়েছে এই সমস্যা।
জোড়াসাঁকো দুগ্ধ ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি রাজেশ সিনহা বলেন, "প্রায় ৬০ শতাংশ দুধ বিক্রি হত মিষ্টির দোকানগুলিতে। এখন সেই ক্রেতারাও নেই। এখন আমরা তো আর গরুর দুধ উৎপাদনকে বন্ধ করতে পারি না।" দীর্ঘনি:শ্বাস ছেড়ে রাজেশ সিনহা বলেন, "আমাদের উৎপাদন বাবদ ব্যয় হয় প্রতি লিটার ৫৫ টাকা। যেখানে আমরা ৫৮ থেকে ৬০ টাকা প্রতি লিটার দুধ বিক্রি করতাম। এখন এই পরিস্থিতিতে অনেকে ২২ থেকে ২৫ টাকা প্রতি লিটারে দুধ বিক্রি করছেন। এমনকি গরুর জাবর আসত পাঞ্জাব, হরিয়ানা এবং বিহার থেকে। লকডাউনে তাও আসা বন্ধ হয়েছে। এখন এমন অবস্থা অনেকেই তাঁদের গরুগুলিকে কসাইখানায় ২৫ হাজার টাকার বিনিময়ে বিক্রি করে দিতে বাধ্য হচ্ছেন।"
Read the full story in English