ফোনে মাত্র একটা এসএমএস। তাতে লেখা “আপনার বিদ্যুৎ বিল বকেয়া, অবিলম্বে পরিশোধ না করলে আজ রাত ১২ টার মধ্যে আপনার বাড়ির ইলেকট্রিক কানেকশন কেটে দেওয়া হবে”। এই এসএমএস দেখেই চমকে উঠেছিলেন শ্রদ্ধানন্দ পার্কের বাসিন্দা এক মহিলা। কী করবেন ভেবে পাননি। যোগাযোগ করেন প্রতিবেশী দিলীপ কুমার দাসের সঙ্গে। গোটা ঘটনার কথা তিনি জানান দিলীপবাবুকে। সব শুনে দিলীপবাবু প্রতিবেশী ও মহিলাকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন। তিনিই মহিলার ফোন থেকে এসএমএসে উল্লিখিত নম্বরে যোগাযোগ করেন। ফোনের ওপ্রান্ত অচেনা এক কণ্ঠস্বর থেকে ১০ টাকা পাঠানোর কথা বলা হয়।
ভুয়ো কাস্টমার কেয়ার নম্বর থেকে তাঁর ফোনে একটি মনিটরিং অ্যাপ বসানোর নির্দেশ পান দিলীপবাবু, যার পর তাঁকে দশ টাকার একটি পেমেন্ট করতে বলা হয়। অ্যাপের সাহায্যে তাঁর ফোনের স্ক্রিনে যা যা ঘটছে, তা দেখতে পায় প্রতারকরা। ফলে তিনি ফোনে ইউপিআই-এর এমপিন নম্বর টাইপ করতেই সেটি চলে যায় জালিয়াতদের কাছে, এবং মুহূর্তেই তাঁর অ্যাকাউন্ট থেকে উধাও হয়ে যায় ৯৯ হাজার টাকা। দিলীপ বাবুর তখন বুঝতে বাকী থাকেন না তিনি প্রতারককে খপ্পরে পড়েছেন।
আরও পড়ুন: < হাজার দিনেরও বেশি জেলমুক্ত ছিলেন বিলকিসের ধর্ষকরা! চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ্যে আসতেই শোরগোল >
দেরি না করেই তিনি তৎক্ষণাৎ কলকাতা পুলিশের সাইবার ক্রাইম বিভাগে একটি অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগ পেয়েই আসরে নামে কলকাতা পুলিশের সাইবার ক্রাইম শাখা। ক্রেডিট কার্ড কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে সাইবার শাখা জানতে পারে, জয়পুরের কোনও এক বাসিন্দার ক্রেডিট কার্ড বিল মেটানো হয় সেই টাকায়।
সেই ব্যক্তির সঙ্গে যোগাযোগ করে দিলীপবাবুর টাকা ফেরত পাওয়া নিশ্চিত করেন সাউথ-ওয়েস্ট ডিভিশন সাইবার শাখার তদন্তকারী অফিসার সার্জেন্ট মহম্মদ জাফর ইকবাল। কলকাতা পুলিশের তরফে এত দ্রুত সহায়তা পেয়ে অভিভূত দিলীপ বাবু। তিনি কলকাতা পুলিশকে ধন্যবাদ জানিয়ে একটি ই-মেলও করেন তাতে গোটা ঘটনায় কলকাতা সাইবার সেলের যে সকল কর্মী ও আধিকারিক এই জালিয়াতির তদন্তে যুক্ত ছিলেন সকলকে ধন্যবাদ জানান তিনি। কলকাতা পুলিশের তরফে এই ঘটনার প্রসঙ্গ টেনে সকলকেই এই ধরণের প্রতারণা থেকে সাবধান করা হয়েছে।