কোভিডের জেরে গোটা দেশজুড়ে শিক্ষাব্যবস্থা সম্পূর্ণ বদলে গিয়েছে। ছাত্র-ছাত্রীদের পড়াশোনায় যেন এক বিশাল ফাঁকের সৃষ্টি হয়েছে। এমনকি এই সময়ে সেমেস্টার সিস্টেমের কারণেই পড়াশোনায় যেমন বদল এসেছে তেমনই ছেলেমেয়েদের পরীক্ষাতেও দেখা যাচ্ছে অনেক গাফিলতি। বাড়িতে বসে অনলাইন পরীক্ষা দেওয়ার কারণেই যত বিভ্রান্তির মধ্যে ছাত্র-ছাত্রীরা। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশ কিছু কলেজের ছাত্র-ছাত্রীরা এই নিয়েও প্রচুর সমস্যার ভুক্তভোগী। ঠিক কীরকম?
প্রথমেই যে রেজাল্ট বিভ্রাট সেটি কিন্তু নয়! সমস্যাটি বিষয় বিভ্রাট দিয়েই শুরু হয়। এমনই বঙ্গবাসী কলেজের বি.কমের ছাত্র ছাত্রীদের এই নিয়েই যথেষ্ট সমস্যা পোহাতে হচ্ছে। নিয়ম অনুযায়ী আবশ্যিক যেকোনও একটি বিষয়েই বি.কম পাঠরতদের বেছে নিতে হয় - সেটি বাংলা হোক অথবা ইংরেজি। এবং ছেলেমেয়েদের থেকে জানা গিয়েছে, পরবর্তীতে যখন অনলাইন মাধ্যমেই তাদের অ্যাডমিট কার্ড আসে যাঁরা বিষয় হিসেবে বাংলা বেছে নিয়েছিলেন, তাঁদের আসে ইংরেজি এবং যাঁরা ইংরেজি পছন্দ করেছিলেন তাঁদের আসে বাংলা। কলেজের সঙ্গে যেই মুহূর্তে ছাত্র-ছাত্রীরা যোগাযোগ করেন তখনই তাঁদের বলা হয় এতে কোনও সমস্যা নেই, যাঁর যেই বিষয় এসেছে তাঁরা সেই বিষয়েই পরীক্ষা দিতে পারেন, পরবর্তীতে তাহলে আর কোনও সমস্যা থাকবে না।
ছাত্রছাত্রীরা তাঁদের কথা মতো অনলাইনে পরীক্ষাও দিয়ে দেন। কিন্তু তাতেই ঘটে বিপত্তি! পরবর্তীতে যখনই রেজাল্ট আসে পূর্বে নির্বাচিত বিষয় অনুযায়ীই রেজাল্টে অনুপস্থিত দেখেই ভিমড়ি খান পড়ুয়ারা। তাঁদের সঙ্গে কথা বলে জানতে পারা গেছে, কলেজ কর্তৃপক্ষের কথামতোই তাঁরা নিজের অনিচ্ছা সত্বেও অন্য বিষয়ে পরীক্ষা দেন, তারপরেও এই ভয়ঙ্কর সমস্যায় পড়েছেন তাঁরা। পরবর্তীতে যখন, কলেজের সঙ্গে তাঁরা যোগাযোগ করেন তখন দায় সম্পূর্ণ এড়িয়ে যাওয়া হয়। কলেজের পড়ুয়াদের যাতে এই নিয়ে সমস্যায় পড়তে না হয়, নব অধ্যক্ষর নির্দেশ অনুযায়ী সেইসব ছাত্রছাত্রীরাই নিজেদের মার্কশিট অন্যান্য তথ্য জমা করেন ইউনিয়নের কাছে। তবে এখন সমস্যা অন্যত্র! প্রায় মাস দুয়েক পেরিয়ে গেছে, সামনের জানুয়ারিতে ওদের পরীক্ষা, এবং তারপরেও রেজাল্ট সংক্রান্ত কোনও কিছুই বোঝা সম্ভব হচ্ছে না! নিজেদের ভবিষ্যত্ নিয়ে যথেষ্ট আশঙ্কায় তারা।
কলেজের অধ্যক্ষ শ্রীমতী হিমাদ্রী ভট্টাচার্য্যের সঙ্গে কথা বলে জানতে পারা গেছে বেশ কিছু তথ্য। তিনি বলেন, এই বেশ কিছুদিনের মধ্যেই ঘটনাটি নিয়ে তিনি তৎপরতা অবলম্বন করেছেন। নিজে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের আধিকারিকদের সঙ্গে কথাও বলেছেন তিনি। বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট অর্ডার অনুযায়ী তাড়াতাড়িই বি.কমের ছাত্রদের এই সমস্যা মিটে যাবে। সঙ্গে তিনি আরও জানান, কন্ট্রোলার এবং উপাচার্যের সঙ্গেও বৈঠক করেছেন - যাতে তাড়াতাড়ি এই সমস্যা থেকে মুক্তি মেলে। তাই নিয়ম মেনে চিঠিও লিখেছেন তিনি। আশা করছেন ডিসেম্বরের মধ্যেই মিটে যাবে এই সমস্যা।
এই বিষয়ে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়, তাঁকে ফোনে পাওয়া যায়নি। তবে সূত্র অনুযায়ী, এই সমস্যা বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্গত অনেক কলেজেই শোনা গিয়েছে, তবে তারা যথাসাধ্য চেষ্টা করে সেটিকে মিটিয়ে নিয়েছেন। জড়িয়ে আছে পড়ুয়াদের ভবিষ্যৎ এবং পরবর্তী পরীক্ষার আগেই এই সমাধান চাইছেন সকলেই।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন