/indian-express-bangla/media/post_attachments/wp-content/uploads/2019/07/chinmoy-759.jpg)
চিন্ময় ঘোষ।
কয়েকদিনের ব্যবধানে ফের অঙ্গদানের নজির কলকাতায়। এবার মেমারির যুবক চিন্ময় ঘোষের ৫ অঙ্গ পাচ্ছেন অন্যরা। সোমবার দুপুরে কলকাতার এক বেসরকারি হাসপাতালে ব্রেন ডেথ হয় চিন্ময়ের। ব্রেন ডেথের পরই চিন্ময়ের অঙ্গদানের সিদ্ধান্ত নেয় পরিবার। জানা যাচ্ছে, চিন্ময়ের হৃদযন্ত্র পাচ্ছেন ডানকুনির সুরজিৎ পাত্র। কলকাতা মেডিক্যালে চিকিৎসাধীন সুরজিৎ। অন্যদিকে, চিন্ময়ের লিভার ও একটি কিডনি নিয়ে যাওয়া হচ্ছে এসএসকেএমে। অ্যাপোলেতে নিয়ে যাওয়া হবে আরেকটি কিডনি। এখনও গ্রহীতার নাম জানা যায়নি। চিন্ময়ের কর্নিয়া পাচ্ছে দিশা আই হাসপাতাল। মেমারির যুবকের ত্বক এসএসকেএমের স্কিন ব্যাঙ্কে রাখা থাকবে।
কী হয়েছিল চিন্ময়ের?
সূত্র মারফৎ জানা গিয়েছে, গত সপ্তাহে বুধবার বাড়ি ফেরার পথে চিন্ময়ের স্কুটিতে ধাক্কা মারে লরি। এরপর আশঙ্কাজনক অবস্থায় চিন্ময়কে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করা হয়। অবস্থান অবনতি হওয়ায় তাঁকে পরে কলকাতায় আনা হয়। গতকাল দুপুরে চিন্ময়ের ব্রেন ডেথ হয়েছে বলে জানান চিকিৎসকরা।
আরও পড়ুন: কলকাতায় ফের অঙ্গ প্রতিস্থাপন, জোকার মহিলার ৫ অঙ্গদান
অঙ্গদানের সিদ্ধান্ত প্রসঙ্গে চিন্ময়ের দাদা বলেন, ‘‘প্রচুর আনন্দ হচ্ছে, যে ওর অঙ্গদান করতে পারছি। আমি চাইব যে সমাজে আরও এর প্রসার ঘটুক’’। অন্যদিকে, সুরজিৎ পাত্রের পরিবারের সদস্য বলরাম বাঘ ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলাকে বলেন, ‘‘যিনি হৃদযন্ত্র দিয়েছেন তাঁকে কীভাবে কৃতজ্ঞতা জানাব তাতে আমার কোনও ভাষা নেই। সুরজিৎ অনেকদিন ধরেই হার্টের অসুখে ভুগছিল। প্রথমে আমরা পিজিতে নিয়ে যাই। সেখানে সামান্য কিছু ওষুধ দিয়ে ওকে ছেড়ে দেওয়া হয়। কিন্তু তারপরও ওর সমস্যা দূর হচ্ছিল না। তখন আমরা মেডিকেল কলেজে দেখাই। সেখানে জানানো হয়, হার্টের অবস্থা ভাল নয়। হৃদযন্ত্র বদল করতে হবে। অনেকদিন ধরেই খোঁজ চলছিল। অবশেষে আজকে এসএসকেএম হাসপাতাল থেকেই হৃদযন্ত্রের সন্ধান পাই’’।
আরও পড়ুন: এ বছরে শহরে প্রথম অঙ্গদান, শিক্ষিকার কিডনি-লিভারে বাঁচবে আরও জীবন
উল্লেখ্য, চলতি মাসের শুরুতে জোকার মহিলা অঞ্জনা ভৌমিকের হাত ধরে অঙ্গপ্রতিস্থাপন হয় কলকাতায়। আন্দুলের হাসপাতালে ব্রেন ডেথ হয় অঞ্জনা ভৌমিকের। তারপরই অঞ্জনার পরিবারের তরফে অঙ্গদানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। অঞ্জনার হৃদযন্ত্র, ত্বক, কিডনি, লিভার দান করা হয়।
অঞ্জনা ভৌমিকের হৃদযন্ত্র পান নদিয়ার তেহট্টের বাসিন্দা মৃন্ময় দাস। সেদিন সকালে মাত্র ১২ মিনিটে আন্দুল থেকে এসএসকেএমে গ্রিন করিডর করে অঙ্গ আনা হয় এসএসকেএমে। অফিস টাইমে ব্যস্ত সময়েও কামাল করে গ্রিন করিডর। অন্যদিকে, অঞ্জনা ভৌমিকের চক্ষুদান করা হয় শঙ্কর নেত্রালয়ে। কিডনি পান হাওড়া সাঁকরাইলের বছর ষাটের হারুন রসিদ খান। লিভার পান ৫৩ বছরের রীনা শি। এর আগে, গত জানুয়ারিতে নয়াবাদের বাসিন্দা সুমিতা বসুর হাত ধরে শহরে এ বছরে প্রথম অঙ্গ প্রতিস্থাপন করা হয়। পেশায় শিক্ষিকা সুমিতা বসুর(৫৪) কিডনি ও লিভার পেয়ে নতুন জীবন পান অন্যরা। সুমিতাদেবীর ২টি কিডনি ও লিভার দান করা হয় বলে পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে।