'ভদ্র সমাজকে' সচেতনতার পাঠ দিচ্ছে কলকাতার এই বস্তি

সচেতনতায় পথ দেখাচ্ছে মহানগরেরই নিম্ন আয়ের এক বসতি অঞ্চল। কলকাতা পুরসভার ৯৭ ওয়ার্ডের ঋষিপাড়া বস্তি।

সচেতনতায় পথ দেখাচ্ছে মহানগরেরই নিম্ন আয়ের এক বসতি অঞ্চল। কলকাতা পুরসভার ৯৭ ওয়ার্ডের ঋষিপাড়া বস্তি।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

প্রবেশ পথে সোজাসাপটা এই ঢঙে পোস্টার সাঁটিয়ে দিয়েছেন বস্তির বাসিন্দারা।

"বাইরের লোক পাড়ায় ঢোকা নিষিদ্ধ"। বস্তির প্রবেশ পথে সোজাসাপটা এই ঢঙে পোস্টার সাঁটিয়ে দিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। উদ্দেশ্য করোনা ভাইরাস প্রতিরোধ।

Advertisment

ইতিমধ্যে সমাজের তথাকথিত শিক্ষিত এগিয়ে থাকাদের করোনা সচেতনতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। নানা বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। সেই প্রেক্ষাপটে করোনা সচেতনতায় পথ দেখাচ্ছে মহানগরেরই নিম্ন আয়ের এক বসতি অঞ্চল। কলকাতা পুরসভার ৯৭ ওয়ার্ডের ঋষিপাড়া বস্তি। ওয়াকিবহাল মহল মনে করছে, করোনা প্রতিরোধে এই এলাকার বাসিন্দাদের উদ্যোগ থেকে শিক্ষা নিতে হবে সমাজের অন্যদের।

Advertisment

দেশ তথা রাজ্যব্যাপী চলছে লকডাউন। এই লকডাউন এড়াতে এক পক্ষ যেন পুলিশের সঙ্গে চোর-পুলিশ খেলছে। সরকারি আইনকে তোয়াক্কা না করাই যেন দস্তুর। তাছাড়া এরাজ্য়ে প্রথম পর্যায়ে যাঁরা করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন বিদেশ থেকে আসা সেই সব শিক্ষিতদের কার্যকলাপ নিয়ে সমালোচনার ঝড় বয়ে গিয়েছে। কিন্তু এখানেই এগিয়ে গিয়েছে গরিব, অশিক্ষিত তকমাপ্রাপ্ত এই বস্তির বাসিন্দারা। একদিকে লকডাউনের মান্য়তা, অন্যদিকে করোনা আটকাতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ঋষিপাড়া বস্তির বাসিন্দারা। স্থানীয় যুবক সনাতনের কথায়, "পাড়ায় যাতে করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব না হয় তার জন্য়ই বিশেষ এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।"

এই বস্তিতে অপরিচিত বহিরাগতদের প্রবেশ একেবারেই নিষিদ্ধ। টালিগঞ্জের ঋষিপাড়া বস্তি কার্যত আশপাশের থেকে নিজেদের বিচ্ছিন্ন করে রেখেছে। প্রকৃতই লকডাউন মেনে চলেছেন বস্তির বাসিন্দারা। না, শুধু এই উদ্যোগেই তাঁরা থেমে থাকেনি। পাড়ার মুখে নানা সতর্কতা মূলক পোস্টার সাঁটিয়েছেন। এলাকার যুবকরা বস্তির প্রবেশের পথে রীতিমত পালা করে পাহারা দিচ্ছেন। এখানকার বাসিন্দারা খুব জরুরি প্রয়োজনে বাইরে যেতে পারছেন, তবে বস্তিতে ঢোকার মুখে সাবান জলে হাত ধুয়ে তবেই মিলছে প্রবেশের ছাড়পত্র। তার জন্য বসানো হয়েছে জলের ড্রাম। রাখা হয়েছে সাবান। কেউ সাবান জলে হাত ধুচ্ছে কিনা তার জন্য়ও রয়েছে কড়া নজরদারি। ঋষিপাড়ার বাসিন্দা দিলীপ হাজরা বলেন "আমরা করোনা ভাইরাস আটকাতে চেষ্টা করছি। এখন বাইরের লোকেদের পাড়ায় ঢোকা যাবে না। পাড়ায় ঢোকার মুখে জলের ড্রাম ও সাবান রাখা আছে। যাতে পাড়ার লোক বাজার বা কোথাও গেলে হাত ধুয়ে পাড়ায় ঢোকে।"

আরও পড়ুন- কলকাতার নিউমার্কেটে অভিনব করোনা রোধক দরজা বসাল পুরসভা

করোনা আবহে নানা তর্ক-বিতর্ক, জ্ঞানদান নিয়ে সোশাল মিডিয়ায় রীতিমত ঝড় চলছে। মহানগরের বড় বড় কমপ্লেক্সের বাসিন্দারাও আতঙ্কিত। অবশ্য় বড় আবাসনগুলিতেই রাজ্য় প্রথম করোনা রোগী ধরা পড়েছিল। টালগঞ্জের ঋষিপাড়া করোনা লড়াইয়ে নতুন করে দিশা দেখাচ্ছে।

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন

kolkata coronavirus corona