নিরাপত্তার ঘেরাটোপে সরকারি হাসপাতাল চত্বর মুড়ে ফেললেও আটকানো গেল না ডাক্তার নিগ্রহ। সোমবার ভোরে এসএসকেএম হাসপাতালে ডাক্তারকে চড় মারার অভিযোগ উঠেছে রোগীর পরিবারের দুই সদস্যের বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় ভবানীপুর থানার পুলিশ দুই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে।
হাসপাতাল সূত্রে খবর, খিদিরপুরের বাসিন্দা মহম্মদ আকবর দিন চারেক আগে কিডনির সমস্যা নিয়ে ভর্তি হয়েছিলেন। সোমবার ভোর সাড়ে পাঁচটা নাগাদ তাঁর মৃত্যু হয়। কিন্তু, পরিবারের তরফে চিকিৎসক না থাকার অভিযোগ করা হয়েছে। অভিযোগ, মহম্মদ আকবরের মৃত্যুর পরই ওয়ার্ডে হাজির এক চিকিৎসককে চড়-থাপ্পড় মারে পরিবারের সদস্যরা। এরপরই শুরু হয় ধাক্কাধাক্কি। তবে এই ঘটনার অল্প সময়ের মধ্যেই পুলিশ স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে তৎক্ষনাৎ ঘটনাস্থলে পৌঁছে যায় এবং গ্রেফতার হয় দুই অভিযুক্ত। তবে রোগীর পরিবার জানিয়েছে, চিকিৎসায় গাফিলতি ছিল। তাই মৃত্যু হয়েছে মহম্মদ আকবরের।
আরও পড়ুন: বঁটির কোপে গলা কাটা শিশুর জটিল অস্ত্রোপচারে সফল এসএসকেএম
এসএসকেএম-এর সুপার ডঃ রঘুনাথ মিশ্র ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা-কে বলেন, "আমরা রোগীর সঙ্গে একজন করে পরিবারের সদস্য রেখে থাকি। যে নিরাপত্তা ব্যবস্থা বাইরে রয়েছে, তা ভিতরে নেই। আভিযুক্ত ওই ব্যক্তি রোগীর সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে ছিলেন হাসপাতালের ওয়ার্ডেই। ঘটনাটি হঠাৎ করেই ঘটে। যখন এই ঘটনা ঘটে তখন কর্মরত স্টাফের সংখ্যাও কম ছিল। ভোর সাড়ে পাঁচটা নাগাদ হার্টঅ্যাটাক হয় রোগীর। তারপরই পরিবারের ওই সদস্য চিকিৎসকদের সঙ্গে বাজে ব্যবহার করা শুরু করেন। ডাক্তারকে চড়ও মারেন বলে অভিযোগ।
আরও পড়ুন: ‘ভ্যানিস’ ফোর্থ স্টেজের ক্যান্সার, নজির গড়ল কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ
ডাঃ মিশ্র আরও বলেন, "এই ধরনের ঘটনা একেবারেই অপ্রত্যাশিতভাবে ঘটেছে। নিকট আত্মীয়ের মৃত্যুতে আবেগে মানুষ এই ধরণের ঘটনা ঘটিয়ে থাকেন। পূর্ব পরিকল্পিত কি না তা এখনই বলা মুশকিল। আমরা যারা চিকিৎসা করি তাদের প্রতি মূহুর্তেই এ রকম ঘটনার মধ্যে দিয়ে যেতে হয়"।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, জুলাই মাসের ১৫ তারিখ রোগী ভর্তি হয়। রোগীর অবস্থা খুবই খারাপ ছিল। ড্রাগ রিয়েকশন থেকে কিডনির সমস্যা শুরু হয়। পাশাপাশি, শরীরের সমস্ত কার্যকলাপ ব্যহত হয়ে গিয়েছিল মহম্মদ আকবরের। কোনওভাবেই তাঁর শারীরিক অবস্থার উন্নতি ঘটানো যায়নি। রোগীর এই অবস্থার কথা পরিবারের সদস্যরা জানতেন বলেই খবর।