দুর্গাপুজোয় অঞ্জলির অনুমতি দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। তবে ঝুঁকি নিতে রাজি নয় লালবাজার। কলকাতা পুলিশের তরফে এ দিন ফেসবুক পোস্টে পরিষ্কার জানানো হয়েছে যে, অঞ্জলির ফুল বাড়ি থেকেই ভক্তদের আনতে হবে। সর্বসাধারণকে পুজো কমিটির পক্ষ এই অনুরোধ করা হবে।
কোন কোন নিয়ম মেনে এবার পুজো? ফেসবুকে কলকাতা পুলিশ জানিয়েছে…
- প্রতিটি মণ্ডপে আলাদা আলাদা প্রবেশ এবং বাহির দ্বার থাকবে।
- সর্বসাধারণকে পুজো কমিটির পক্ষ থেকে অনুরোধ করা হবে পুষ্পাঞ্জলির ফুল বাড়ি থেকেই নিয়ে আসতে, যাতে মণ্ডপে ফুলের জন্য অপেক্ষা করতে গিয়ে ভিড়ের সৃষ্টি না হয়।
- সিঁদুর খেলা, প্রসাদ বিতরণ ইত্যাদির সময় যাতে বেশি ভিড় না হয়, তার জন্য আগে থেকেই পরিকল্পনা নিতে হবে।
- মণ্ডপ উদ্বোধন, পুরস্কার বিতরণ, এবং ওই জাতীয় অন্যান্য কর্মসূচীর ক্ষেত্রে সংযমী হতে হবে।
- বিভিন্ন পুরস্কারের বিচারক মণ্ডলী যথাসম্ভব অনলাইনেই মণ্ডপ পরিদর্শন করবেন, এবং সশরীরে পরিদর্শন করলে সকাল দশটা থেকে দুপুর তিনটের মধ্যে করবেন, যখন দর্শনার্থীদের ভিড় অপেক্ষাকৃত কম থাকে।
কলকাতা হাইকোর্টের তরফে জানানো হয়েছে যে, গতবার পুজো উধযাপনের ক্ষেত্রে যেসব নিয়ম জারি ছিল এবারও তা কার্যকরী থাকবে। সংক্রমণের রেশ নিয়ন্ত্রণে হলেও এখনও পুরোপুরি কমেনি। এরমধ্যেই রয়েছে করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের ভ্রুকুটি। ফলে স্বাস্থ্যবিধি মেনেই পুজো পালন করতে হবে জানিয়েছে আদালত।
গতবার পুজোয় অঞ্জলি দেওয়া, সিঁদুর খেলার অনুমতি ছিল না। এবার অবশ্য আদালত তাতে ছাড় দিয়েছে। রাজ্য সরকারও তার নির্দেশিকায় জানিয়েছে যে, কোভিডের দু'টি ডোজ নেওয়া থাকলে ছোট ছোট গ্রুপে ভাগ হয়ে দূরত্ববিধি বজায় রেখে অঞ্জলি দেওয়া, সিঁদুর খেলা সম্ভব।
কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ, পুজো মণ্ডপে দর্শকরা প্রবেশ করতে পারবেন না। কোন কোন উদ্যোক্তারা মণ্ডপে প্রবেশ করবেন পুজো কমিটিগুলিকে আগে থেকেই সেই সব ব্যক্তির নাম প্রশাসনকে জানাতে হবে। মণ্ডপের গায়েও সেইসব নাম লিখে টাঙিয়ে দিতে হবে। ছোট ও বড় পুজোর ক্ষেত্রে এই সংখ্যাটা নির্দিষ্ট করে দিয়েছে আদালত।
পুজো নিয়ে গত মঙ্গলবার নবান্নের জারি করা নির্দেশিকা…
- চারিদিক খোলা মণ্ডপ করতে হবে। যেখানে প্রবেশ এবং বেরনোর আলাদা জায়গা থাকবে।
- শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখার জন্য মণ্ডপে পর্যাপ্ত জায়গা রাখতে হবে।
- মণ্ডপে স্যানিটাইজার এবং মাস্কের ব্যবস্থা রাখা বাধ্যতামূলক। কোনও দর্শনার্থী মাস্ক না পরে আসলে তাঁকে তা দিতে হবে পুজো কর্তৃপক্ষকে।
- মণ্ডপে থাকা স্বেচ্ছাসেবকদেরও মাস্ক পড়া বাধ্যতামূলক। তাঁদেরও মেনে চলতে হবে শারীরিক দূরত্ববিধি।
- দুর্গাপুজোর সময় সিঁদুরখেলা বা দেবীবরণের মতো রীতিতে ছাড়। তবে তা করতে হবে ছোট–ছোট গ্রুপে।
- যাতে পুণ্যার্থীরা দূর থেকে মন্ত্র শুনতে পান তাই মন্ত্রচ্চারণের সময় পুরোহিতদের মাইক্রোফোন ব্যবহার করতে হবে।
- অঞ্জলির ফুল বাড়ি থেকে আনতেই প্রাধান্য।
- পুরষ্কারের ক্ষেত্রে বিচারকরা ভিড় করে মণ্ডপে প্রবেশ করতে পারবেন না। সর্বোচ্চ দু’টি গাড়ি নিয়ে মণ্ডপে প্রবেশে ছাড়। সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৩ পর্যন্ত বিচারকরা মণ্ডপে প্রবেশ করতে পারবেন।
- পুজো উদ্বোধন কিংবা বিসর্জনে জাঁকজমক চলবে না। নির্দিষ্ট সময়েই নদী বা পুকুরে প্রতিমা বিসর্জন করতে হবে।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন