Advertisment

Premium: হাড়হিম লড়াইকে কুর্নিশ, বাবার স্বপ্নপূরণে প্রাণপাত কিশোরের, চোখে জল আনবে এই কাহিনী

মাত্র ৯ বছর বয়সে মা'কে হারায় সাগর। এক বছরের মাথায় দেশের বাড়িতে মৃত্যু হয় বাবারও।

author-image
Sayan Sarkar
New Update
Pice hotel kolkata, 19-year-oldrevives late father's eatery in Kolkata, roadside eatery, Kolkata, viral on Instagram, wins hearts of netizens, Bengali actor Swastika Mukherjee praises cooking skills, financial struggles, community support, compassion, togetherness, human spirit, Swastika Mukherjee, Instagram video, million likes and comments: কলকাতা পাইস হোটেল

বোনকে 'মানুষ' করতে প্রাণপাত দাদার, কলকাতার ফুটপাতে একা হাতে কঠিন লড়াই সাগরের

বড় হয়ে অনেক রেস্তোরাঁ খোলার বড়ই সাধ। ভবিষ্যতের সেই স্বপ্ন পূরণে কলকাতার ফুটপাতে একলা হাতে লড়ছে সাগর। বড় হওয়ার অদম্য জেদ প্রতিনিয়ত যেন তাকে কুঁড়ে কুঁড়ে খাচ্ছে। সকাল থেকে রাত হাড়ভাঙা পরিশ্রম করে ইতিমধ্যেই বছর উনিশের এই কিশোর সোশ্যাল মিডিয়ায় রীতিমত আলোড়ন ফেলেছে।

Advertisment

কলকাতার ফুটপাথে নিজের একটি পইস হোটেল চালাচ্ছেন সে। ইচ্ছে এই হোটেলের নাম থাকবে সবার উপরে। ছেলেটির নাম সাগর কুমার গোচ্ছি। কসবার কাছেই একটি ভাড়া বাড়িতে থাকেন। মাত্র ৯ বছর বয়সে মা'কে হারায় সাগর। এক বছরের মাথায় দেশের বাড়িতে মৃত্যু হয় বাবারও। ছোট বোনকে নিয়ে কী করবে ছোট্ট সাগর? মাথায় যেন আকাশ ভেঙে পড়ে তার। বোনকে লেখাপড়া শেখানোর পাশাপাশি মৃত বাবার ইচ্ছাপূরণে প্রাণপাত করে চলেছে সাগর। লক্ষ্য একটাই বড় যে হতেই হবে তাকে।

সোশ্যাল মিডিয়ায় সাগরের এই কর্মকাণ্ড রীতিমত ভাইরাল হয়ে গিয়েছে। প্রয়াত বাবার নামে দেশপ্রিয় পার্কের কাছেই একটি পাইস হোটেল রয়েছে সাগরের। রান্না করা, খাবার সার্ভ করা, থেকে শুরু করে বাসন মাজা সবটাই নিজের হাতে করে সাগর। তাকে ঘিরে ফুড ব্লগারদের ভিড়। কিন্তু সস্তার এই প্রচার একেবারেই নাপসন্দ সাগরের। তার সোজা কথা "কাজ করে যাও, কাজের মধ্য দিয়ে মানুষের ভালবাসা আদায় করে নাও"।

মা-বাবার মৃত্যুর পর কাকা-কাকিমা সাগর ও তার বোনের দায়িত্ব কাঁধে তুলে নেয়। রান্নার হাতেখড়ি বাবার কাছেই। পরে কাকিমার থেকেও কিছু রান্না শিখে নেয় সে। আর সেই বিদ্যাকে সম্বল করে কলকাতার রাস্তায় পাইস হোটেল চালিয়ে সকলকে চমকে দিয়েছে সাগর।

সাগরের এই অনুপ্রেরণাদায়ক গল্পটি ইতিমধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়ায় সকলের মন ছুঁয়ে গিয়েছে। দ্য ইণ্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সাগর বলেন, "মা-বাবাকে হারিয়ে মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে। কী করব, কোথায় যাব, কিছুই ভেবে পাই না। আগের ভাড়া বাড়ি থেকে আমাকে তুলে দেওয়া হয়। অবশেষে কাকা-কাকিমা আমাদের দুজনের দায়িত্ব নেন। বাবার একটি হোটেল ছিল। বাবা চাইতেন আমি ভবিষ্যতে এই হোটেলটিকে আরও বড় করি। সামান্য কিছু রান্না শিখে তাকে সম্বল করেই বেঁচে থাকার তাগিদে সেই হোটেলটি খুলি। করতে করতে সবটাই শিখে গিয়েছি। আজও হোটেলটি সকলেই সন্তোষ দার হোটেল নামেই চেনেন"।

সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল, এত মানুষের ভালবাসা পেয়ে কেমন অনুভূতি এই প্রশ্নের উত্তরে সাগর বলেন, " বোনকে মানুষ করতে হবে। ও এখন ক্লাস ৯-এ পড়ে। তাছাড়াও আমাকে ভবিষ্যতে বাবার স্বপ্ন পূরণ করতে হবে। সেই কথা মাথায় রেখেই এগিয়ে চলি। নিজের কাজটা শুধু করে যাই, বাকিটা ভগবানের উপর। তবে ফুড ভ্লগার দাদা-দিদিদের কাছ থেকে যে ভালবাসা পেয়েছি তা আমাকে আরও উৎসাহ জোগাবে আগামীর স্বপ্ন পূরণে"।

জনপ্রিয় অভিনেত্রী স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়কেও সাগরের হোটেলে এসে তার রান্না করা খাবার উপভোগ করতে দেখা গেছে। তার রান্নার দক্ষতা দেখে মুগ্ধ হন স্বস্তিকা। তার সঙ্গে ছবিও তোলেন। পাশাপাশি ছেলেটির পাশে সকলকে দাঁড়ানোর আবেদন করেন। সেই প্রসঙ্গে সাগর বলেন, এটা আমার কাছে এক অনেক বড় প্রাপ্তি। এই একটা ঘটনা আমার জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছে"।

kolkata news Bengali News
Advertisment