বাংলায় নির্বাচনের মুখে নেতাজি আবেগ মিলিয়ে দিল মোদী-মমতাকে। নেতাজির ১২৫তম জন্মবার্ষিকীতে ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালে আয়োজিত বিশেষ অনুষ্ঠানে একমঞ্চে প্রধানমন্ত্রী ও মুখ্যমন্ত্রী। সেইসঙ্গে দেখা গেল রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়কেও। নেতাজির জন্মদিনেই পরাক্রম দিবস না দেশনায়ক দিবস হিসাবে স্মরণীয় হয়ে থাকবে তাই নিয়ে তরজা হয়। তবে বিকেলে ভিক্টোরিয়ায় দুই যুযুধান পক্ষকে মিলিয়ে দিলেন কিন্তু নেতাজিই। এদিন ভিক্টোরিয়াতে আসার পর মোদীকে উত্তরীয় পরিয়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এরপর প্রধানমন্ত্রী-মুখ্যমন্ত্রী এবং রাজ্যপাল ঘুরে দেখেন নেতাজির উদ্দেশে তৈরি গ্যালারি। কিন্তু তাল কাটল মঞ্চে উঠে। যেখানে মুখ্যমন্ত্রী বক্তব্য রাখার সময় দর্শকাসন থেকে জয় শ্রী রাম ধ্বনি ওঠে। মুখ্যমন্ত্রী অত্যন্ত বিরক্ত হন এই ঘটনায়। তিনি বলেন,
"এইভাবে সরকারি অনুষ্ঠানে ডেকে অপমান করার কোনও মানে হয় না।" তিনি কোনও বক্তব্য রাখতে অস্বীকার করেন।
#WATCH | I think Govt's program should have dignity. This is not a political program....It doesn't suit you to insult someone after inviting them. As a protest, I won't speak anything: WB CM Mamata Banerjee after 'Jai Shree Ram' slogans were raised when she was invited to speak pic.twitter.com/pBvVrlrrbb
— ANI (@ANI) January 23, 2021
এরপর মঞ্চে বক্তব্য রাখতে ওঠেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, "নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু আজও পরাক্রম এবং প্রেরণার প্রতীক। তাই তাঁর জন্মদিনকে কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে পরাক্রম দিবস হিসেবে পালন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আমরা ছোটবেলা থেকে তাঁর নাম শুনে বড় হয়েছি। আর আজ তাঁর দূরদর্শিতা দেখে অবাক হয়ে যাই। এত দূরদৃষ্টি সম্পন্ন মানুষ হতে গেলে অনেক জন্ম নিতে হয়। বুঝতে গেলেও অনেক সময় লাগে। তাই আজকের দিনটা ভারতের জন্য আত্মগৌরবের দিন। এখন নেতাজির দেখানো পথেই গড়ে উঠছে নতুন ভারত। তাঁর আদর্শকে মাথায় রেখেই এগিয়ে চলেছে দেশ।" প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, "আত্মনির্ভর ভারত ও সোনার বাংলার স্বপ্ন দেখতেন নেতাজি। একসময়ে তিনি যে স্বপ্ন দেখেছিলেন, আজ LAC থেকে LOC পর্যন্ত ভারতীয় সেনার পরাক্রম দেখে তা সত্যি হয়েছে বলে স্বীকার করছে গোটা বিশ্ব। কোনও দেশ ভারতের সার্বভৌমত্বের উপর আঘাত হানার চেষ্টা হলে তার যোগ্য জবাব দেওয়া হচ্ছে।"
নেতাজির ১২৫তম জন্মবার্ষিকী উদযাপনে শনিবার কলকাতায় আসেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। দমদম বিমানবন্দরে নেমেই সেখান থেকে বায়ুসেনার চপারে রেসকোর্সের উদ্দেশে উড়ে যান মোদী। সেখানে নেমে সোজা চলে আসেন দক্ষিণ কলকাতায় নেতাজি ভবনে। সেখানে তাঁকে অভ্যর্থনা জানান নেতাজির বংশধর তথা প্রাক্তন তৃণমূল সাংসদ অধ্যাপক সুগত বসু। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড় এবং নেতাজির পরিবারের সদস্য চন্দ্র বসু। কিন্তু নেতাজি ভবনে ঢোকেননি বিজেপি নেতা চন্দ্র বসু। সেখানে ১৫ মিনিট ছিলেন মোদী।
নেতাজির জন্মদিনেও রাজনীতি! নেতাজি ভবনে ঢুকতে দেওয়া হল না বিজেপির কেন্দ্রীয় সম্পাদক তথা বাংলার পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয়, স্বপন দাশগুপ্তদের। নেতাজির পরিবার চায় না কোনও রাজনৈতিক নেতা সেখানে প্রবেশ করুন। তাই বাড়ির বাইরেই অপেক্ষা করলেন বিজেপি নেতারা। পরে এ বিষয়ে সংবাদমাধ্যমকে সুগত বসু বলেন, "সাধারণত নেতাজির জন্মদিনে দেশের প্রধানমন্ত্রী আসেন নেতাজি ভবনে। কিন্তু কোনওদিন রাজনৈতিক নেতা-নেত্রীরা আসেন না। আমরা চাই না নেতাজির জন্মদিনে কোনও রাজনীতি হোক।"