কলকাতায় মহার্ঘ মুরগি। ঈদ, অক্ষয় তৃতীয়া অতিক্রান্ত। তাও কমছে না ব্রয়লার মুরগির মাংসের দাম। তিলোত্তমার বিভিন্ন বাজারে কাটা প্রতি কেজি মাংসের দাম ৩০০ টাকা ছুঁইছুঁই। ছুটির দিনে মাংসের পদ রাঁধতে নাভিশ্বাস অবস্থা আম আদমির।
Advertisment
আগুন দাম। শহরে খুচরো বাজারে কাটা মুরগি কেজি প্রতি বিকোচ্ছে ২৮০ টাকা দরে। গোটা মুরগির দাম রয়েছে ২০০-২১০ টাকা টাকা কেজি। শহরতলীতে এই দাম কিছুটা কম। আগামী কয়েকদিনে ব্রয়লারের এই দাম আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা।
কেন এত দাম? খুচরো মুরগির মাংসের বিক্রেতাদের দাবি চাহিদার তুলনায় যোগান কম হওয়ার ফলেই দাম বাড়ছে। বৌবাজের মাংস বিক্রেতা আসিফের কথায়, 'গত ২০ দিন ধরেই মাংসের দাম বাড়ছে। এখন তা অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে। ডিম্যান্ডের চেয়ে সাপ্লাই কম। ফার্মগুলো মুরগি দিতে পারছে না। তাই দাম বেড়ে যাচ্ছে।' চড়চড়িয়ে দাম বাড়ায় মাংসের বাজেটে কাটছাঁট করতে হয়েছে ক্রেতাদেরও। ফলে মার খাচ্ছে বিকিকিনিও।
কী অবস্থা মাংসের পাইকারি দরের? মির্জাগালিব স্ট্রিটে প্রতি সাকেলই বসে মরগির মাংসের পাইকারি বাজার। মধ্য কলকাতার বাজারগুলির বড় চাহিদা এখান থেকেই পূরণ হয়ে থাকে। এই পাইকারি বাজারের মুরগি বিক্রেতা নওশাদ আলমের দাবি, 'খোলা বাজারে ব্রয়লারের দাম বাড়ছে। কিন্তু, পাইকারি বাজারে দামের হেরফের তেমন ঘটেনি। পাইকারি বাজারে বর্তমানে ব্রয়লারের দাম কেজি প্রতি ১৬৫-১৭০ টাকা।' পাইকারি থেকে খুচরো বাজারে পৌঁছনোর সময় মুরগির মাংসের দাম প্রায় ৩০-৪০ টাকা বেড়ে যাচ্ছে। ফলে কাটা মাংসের দাম আকাশছোঁয়া হচ্ছে।
এই দাম বৃদ্ধি প্রসঙ্গে বেঙ্গল পোলট্রি ফেডারেশনের এক্জিকিউটিভ কমিটির সদস্য মদনমোহন মাইতি বলেছেন, 'গত কয়েক মাসে মুরগির খাবারের দাম প্রায় ৭৭ শতাংশ বেড়েছে। বেড়েছে পরিবহণ খরচও। এছাড়া আনুসাঙ্গিক খরচও বেড়ে গিয়েছে। পোলট্রি থেকে পাইকারি বাজারে মুরগি যাচ্ছে ১৪৭.১৫০ টাকায়। সেটাই আবার খোলা বাজারে যাচ্ছে ১৬৫ টাকায়। গোটা মুরগি খুচরো বাজারে বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকায়। এটা ন্যায়সঙ্গত।' কিন্তু, কাটা মাংসের দাম কেন ৩০০-র কাছাকাছি? বিষয়টিতে খোলা বাজারের সরকারি নজরদারির প্রয়োজনের কথা বলেছেন মাইতিবাবু।
কবে কমবে দাম? অনেকেই বলছেন দিন ১৫ লাগবে। তবে এতে কোনও নিশ্চয়তা নেই। ফলে, দাম বৃদ্ধির কারণ যাই হোক না কেন, উৎসব, উদযাপনে বা ছুটির দিনে বাঙালির পাতে জিভে জল আনা মাংসের পদে আপাতত নাভিশ্বাস ওঠার জোগাড়।